ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

মা হওয়ার পরদিনই এইচএসসি পরীক্ষা দিলেন স্বর্ণা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৩
মা হওয়ার পরদিনই এইচএসসি পরীক্ষা দিলেন স্বর্ণা

শরীয়তপুর: সন্তান জন্ম দেওয়ার পরদিনই হাসপাতালে বসেই এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন শরীয়তপুর পৌরসভার কাশাভোগ এলাকার জান্নাতুন ফেরদৌস স্বর্ণা।

প্রসব ব্যথা নিয়ে মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাতে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে ভর্তি হন তিনি।

বুধবার সকাল ৭টায় সেখানে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে তিনি জন্ম দেন একটি কন্যা সন্তান। এখনও পুরোপুরি সুস্থ হননি তিনি। তারপরও মনের জোরে বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) ক্লিনিক থেকেই পরীক্ষায় দেন তিনি।  

ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ের দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা দেন তিন। জেলা প্রশাসকের সহযোগিতায় সব দুশ্চিন্তা জয় করে প্রচণ্ড আত্মবিশ্বাস নিয়ে শরীয়তপুর শহরের একটি ক্লিনিকে (নিউ মেট্রো ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড ক্লিনিক) বসে শেষ করলেন একটি পরীক্ষা।

স্বর্ণা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সরকারি কলেজ, শরীয়তপুরের শিক্ষার্থী। পরীক্ষার সিট পড়েছে সরকারি গোলাম হায়দার খান মহিলা কলেজে। সন্তান গর্ভে নিয়ে আগের পরীক্ষাগুলো হলেই দিয়েছেন। এর মধ্যে তার কোল আলো করে এসেছে সন্তান। তাই ক্লিনিকেই তার পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। তার তত্ত্বাবধানে ছিলেন একজন শিক্ষক ও একজন পুলিশ সদস্য। আর স্বর্ণার মেয়ে তখন তার নানুর কোলে।

স্বর্ণার স্বামী সাঈদ খান অনিক একজন ব্যবসায়ী।

স্বর্ণা বলেন, সন্তানের কথা ভেবেই পরীক্ষা দিলাম। পরীক্ষাটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। বাবুকে পেটে নিয়ে এতো কষ্টের পরও পড়াশোনা চালিয়ে গেছি। আমার সন্তান পৃথিবীতে এসেছে তাই জেলা প্রশাসকের সহযোগিতায় ক্লিনিকে বসে পরীক্ষা দিয়েছি। সব বাধা পেরিয়ে জীবনের লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে চাই। ক্লিনিকে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ।

স্বর্ণার স্বামী সাঈদ খান অনিক বলেন, আমার ও স্বর্ণার পরিবারের সহযোগিতায়ই পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে স্বর্ণা। আমরা চাই, লেখাপড়া চালিয়ে যাক সে।  

সরকারি গোলাম হায়দার খান মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. ওয়াজেদ কামাল বলেন, তার শিক্ষাজীবন যেন ব্যাহত না হয়, এজন্য জেলা প্রশাসকের নির্দেশে পরীক্ষা কেন্দ্রের নিয়ম মেনে ক্লিনিকেই তার পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আশা করি, সে পরীক্ষায় ভালো করবে।

শরীয়তপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র বলেন, সব বাধা পেরিয়ে স্বর্ণা জীবনের লক্ষ্যে যেন এগিয়ে যায়, সে প্রত্যাশা করি।  

বাংলাদেশ সময়: ১১৫৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৩
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।