ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

জবিতে তিন গেটের দু’টিই বন্ধ, শিক্ষার্থীরা বিপাকে

মোরশেদ সরকার, জবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৯ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০১২

ঢাকা: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) প্রবেশ ও বাহিরের জন্য তিন গেটের দু’টি বর্তমানে বন্ধ আছে। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের অঘটন এড়াতেই পুরনো ঢাকার ব্যবসায়ীদের অনুরোধে এ ব্যবস্থা জবি প্রশাসনের।

তবে ব্যবসায়ীরা জবির পেছনের গেট বন্ধ রাখার অনুরোধ করলে সেটিসহ বাংলাবাজারমুখী গুরুত্বপূর্ণ গেটও বন্ধ করে দেয় জবি প্রশাসন।

আর এ ব্যবস্থাকে জবির সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলছেন, একটা চাইলে একটা ফ্রি ব্যবস্থা।

প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থী জহিরুল হক, বাবুল হোসেন, মেহেদী হাসান, আল মামুন বাংলানিউজকে জানান, তারা কেরানিগঞ্জ, জিঞ্জিরা, ইসলামপুর থেকে যাতায়াত করেন। এ এলাকার ছাত্রছাত্রীদের জন্য সুবিধাজনক দু‘টি গেট বন্ধ করে দেওয়ায় বাহাদুর শাহ পার্ক সংলগ্ন গেট দিয়ে আসা যাওয়া করতে হয়। এতে সময় বেশি লাগে।

জবিতে প্রায়ই তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। দু’টি গেট বন্ধ থাকায় ক্যাম্পাসে কোন অঘটন থেকে বাঁচতে নিরীহ ছাত্ররা ক্যাম্পাস থেকে নিরাপদে বের হয়ে যেতে চাইলে এখন আর তা সম্ভব হবে না বলে মনে করেন তারা।

শিক্ষার্থীরা জানান, ২৩ হাজার ছাত্রছাত্রীর এ বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি গেট থাকা যুক্তি সংগত নয়। তাছাড়া ব্যবসায়ীরা পেছনের গেট বন্ধ রাখার দাবি করেছিল। অথচ জবি প্রশাসন সেটিসহ বাংলাবাজারমুখী গেটটিও বন্ধ রাখছে। শিক্ষার্থীদের অসুবিধার কথা বিবেচনা না করেই জবি প্রশাসন দু’টি গেইট বন্ধ রেখেছে। এ যেন একটা চাইলে একটা ফ্রি।

অর্থনীতি বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র আফসার আলী বাংলানিউজকে বলেন, ‘পুরনো ঢাকার ব্যবসায়ীদের দাবিমতো একটি গেট বন্ধের সিদ্ধান্ত নিলে তেমন অসুবিধা হতো না। কিন্তু বাংলাবাজারমুখী গেটকে কেন্দ্র করে কোন অঘটন আজ পর্যন্ত ঘটে নি। এখন তা বন্ধ থাকায় সেখানে অবৈধভাবে লেগুনা স্টেশন বসেছে।

এক গেট বন্ধের দাবি ওঠায় দুই গেট বন্ধ রেখে জবি প্রশাসন কার সুবিধা করে দিল এমন প্রশ্ন রাখেন গণিত ১ম বর্ষের ছাত্র প্রণব কুমার। ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থে এ গেট খোলা রাখা উচিত বলে মনে করেন তিনি।

একটি গেট বন্ধের দাবির প্রেক্ষিতে দু’টি গেট বন্ধ কেন এমন প্রশ্নের উত্তরে জবি প্রক্টর অশোক কুমার সাহা বাংলানিউজকে বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ছাত্রদের বিভিন্ন অঘটনের কারণে তারা গেট বন্ধ রাখার দাবি জানিয়ে আসছিল। তাই এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তিনি দাবি করেন ব্যবসায়ীরাই দু’টি গেট বন্ধের দাবি জানিয়েছিল।

তবে বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আলমগীর শিকদার লোটন দুই গেট বন্ধের দাবি অস্বীকার করে বলেন, ‘তিনটি গেটের দুটি বন্ধ থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজার হাজার শিক্ষার্থীর মাত্র একটি গেট দিয়ে আসা যাওয়া করতে অসুবিধা হবে। আমরা পেছনের গেট বন্ধ করার দাবি করেছি। কারণ, ওই গেট দিয়ে দুষ্কৃতিকারীরা অঘটন ঘটিয়ে নিরাপদে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে।

উল্লেখ্য, গত ২১ এপ্রিল জবির পেছনের গেট সংলগ্ন এক চশমা দোকানের কর্মচারীর সঙ্গে চশমা কেনাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মীর সংঘর্ষ বাঁধে। পরে তা ব্যাপকভাবে ব্যবসায়ী ও ছাত্রলীগের মধ্যে ছড়িয়ে যায়। পরে ব্যবসায়ীরা জবি প্রশাসনের কাছে পেছনের গেট বন্ধের দাবি জানায়। সেই প্রেক্ষিতে  বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’টি গেইট বন্ধ রাখছে জবি প্রশাসন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৭ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০১২
সম্পাদনা: জাকারিয়া মন্ডল, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।