ঢাকা, শনিবার, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিক্ষা

সালথা-নগরকান্দায় বিকল ১৬০ স্কুলের ডিজিটাল হাজিরা যন্ত্র

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট     | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০২৩
সালথা-নগরকান্দায় বিকল ১৬০ স্কুলের ডিজিটাল হাজিরা যন্ত্র

ফরিদপুর: ফরিদপুরের সালথা ও নগরকান্দা উপজেলায় ১৬০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্থাপিত বায়োমেট্রিক ডিজিটাল হাজিরা যন্ত্রগুলো বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে। শিক্ষকদের উপস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য এসব যন্ত্রগুলো স্থাপন করা হলেও তা কোনো কাজেই আসছে না।

ফলে সঠিক সময়ে স্কুলে শিক্ষকদের উপস্থিতি নিশ্চিত করার উদ্যোগ ভেস্তে গেছে। সরকারেরও অপচয় হয়েছে ৩১ লাখ টাকা।  

শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালে সালথা ও নগরকান্দার ১৬০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিটি বিদ্যালয়ে স্লিপ প্রকল্পের ৪০-৫০ হাজার টাকা করে বরাদ্দ দেওয়া হয়। বরাদ্দের ওই টাকার ভেতর থেকে ডিজিটাল হাজিরা যন্ত্র ক্রয় করে প্রতিটি স্কুলে স্থাপন করা হয়েছে। তবে এসব হাজিরা মেশিনের কার্যক্রম চলে সর্বোচ্চ এক-দুই মাস। এরপর গত তিন-চার বছর ধরে অজ্ঞাত কারণে হাজিরা যন্ত্রের ব্যবহার বন্ধ রয়েছে। তবে শিক্ষকদের দাবি যন্ত্রগুলো নষ্ট হওয়ায় ব্যবহার বন্ধ করা হয়েছে।

এদিকে, হাজিরা যন্ত্র ক্রয়ে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। শিক্ষক সমিতি ও সংশ্লিষ্ট স্কুল শিক্ষকরা সিন্ডিকেট করে নিম্নমানের প্রতিটি হাজিরা যন্ত্র ছয়-আট হাজার টাকা করে কেনেন। অথচ সালথায় স্লিপ প্রকল্প থেকে প্রতিটি হাজিরা যন্ত্র বাবদ খরচ দেখানো হয়েছে ১৪-১৫ হাজার টাকা। আর নগরকান্দায় প্রতিটি যন্ত্র বাবদ বরাদ্দ খরচ দেখানো হয়েছে ২৫ হাজার টাকা করে।

সালথার পুটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনিরুজ্জামান বলেন, হাজিরা যন্ত্র নষ্ট হওয়ায় এর ব্যবহার করা বন্ধ রয়েছে। মাত্র এক বছর ওয়ারেন্টি ছিল যন্ত্রটির। ওই এক বছরের মধ্যে যাদের হাজিরা যন্ত্র নষ্ট হয়েছিল তারা মেরামত করার সুযোগ পেয়েছিল। তবে ওয়ারেন্টি যাদের শেষ হয়েছে তারা আর মেরামত করেনি। তাই বিকল হয়ে পড়ে আছে। তার মতো অন্যান্য বিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও একই দাবি করেন।  

সালথা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. মাইনুল ইসলাম বলেন, স্লিপের বরাদ্দ থেকে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও পরিচালনা পর্ষদ কমিটি নিজ নিজ উদ্যোগে হাজিরা মেশিন ক্রয় করে। এখানে শিক্ষক সমিতির কোনো হাত ছিল না। প্রতিটি মেশিন কেনা বাবদ খরচ হয়েছিল ১৪-১৫ হাজার টাকা। তবে যন্ত্রগুলোর ওয়ারেন্টির মেয়াদ শেষ হওয়ায় বেশিরভাগ যন্ত্রই অকেজো হয়ে পড়ে আছে।

নগরকান্দা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মানোয়ার হোসেন বলেন, নগরকান্দায় ৮৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিটি বিদ্যালয়ে ২৫ হাজার টাকা করে একেকটি হাজিরা যন্ত্র কেনা হয়েছিল। এসব যন্ত্র বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা নিজেরাই কিনেছেন। তবে যন্ত্রগুলো এখন ব্যবহার করা হচ্ছে না। সবগুলো যন্ত্রই নষ্ট হয়ে আছে।

নগরকান্দা উপজেলা শিক্ষা অফিসার রওনক আরা বেগম বলেন, হাজিরা যন্ত্র কেনার সময় আমি ছিলাম না। তবে প্রতিটি বিদ্যালয়ের হাজিরা যন্ত্র নষ্ট হয়ে আছে শুধু এটা জানি।  

সালথা উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, সবগুলো হাজিরা যন্ত্র নষ্ট হয়নি। কিছু ভালো আছে। তবে যেগুলো নষ্ট হয়েছে, সেগুলো মেরামত যোগ্য নয়। আবার মেরামতের জন্য আলাদা কোনো বরাদ্দও নেই।

সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আনিছুর রহমান বালী বলেন, বিষয়টি যেহেতু প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। তাই প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এ বিষয়ে ভালো বলতে পারবেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০২৩
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।