ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

মেধাবী শিক্ষার্থী সাব্বিরকে মেডিকেলে ভর্তির টাকা দিলেন ইউএনও

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২৪
মেধাবী শিক্ষার্থী সাব্বিরকে মেডিকেলে ভর্তির টাকা দিলেন ইউএনও

বরিশাল: বরিশালের উজিরপুরের রমজান খান সাব্বিরকে মেডিকেলে ভর্তির ফি দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ।

মঙ্গলবার বিকেলে ছাত্রের হাতে ভর্তির টাকা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাখাওয়াত হোসেন।

তিনি জানান, মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়ে অর্থের অভাবে দুশ্চিন্তায় থাকা সাব্বিরকে ভর্তির ফি ২১ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। ভর্তির পর যাতে তার কোনো সমস্যা না হয়, সেই জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ অধ্যক্ষকে ফোন করা হয়েছে। তিনিও সব রকম সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন।

ইউএনও আরও জানান, পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজের দুই শিক্ষক তার বন্ধু। তারাও সাব্বিরের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনিও ব্যক্তিগতভাবে সব সময় সহায়তা করবেন।

বরিশালের উজিরপুর উপজেলার শোলক ইউনিয়নের দমোদরকাঠি গ্রামের বাসিন্দা ফিরোজ খানের ছেলে সাব্বির। তার বাবা একজন কৃষি শ্রমিক। এছাড়াও ভ্রাম্যমাণভাবে গামছা বিক্রি করে চার সদস্যের সংসার চালান তিনি। তার মেধাবী ছেলে সাব্বির মেডিকেলের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়। ৬৭.৭৫ নম্বর পেয়ে মেধাক্রমে ৪৭৪১ হয়ে ভর্তির সুযোগ পায় সে।

যেখানে সংসারের খরচ মেটাতে হিমশিম খেতে হয়, সেখানে ছেলেকে ভর্তি নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে পরিবারটি।

প্রতিবেশী বয়োবৃদ্ধ আনোয়ারা বেগম বলেন, দুই ভাই-বোন সারাক্ষণ বই নিয়ে থাকে। তারা বাইরে তেমন কোনো খেলাধুলা করে না। অভাব অনটনের মধ্যে কোনো রকম খেয়ে পড়ে পড়াশুনায় ব্যস্ত থাকতো। নিজে নিজে পড়াশুনা করে ডাক্তারি পড়তে সুযোগ পেয়েছে সাব্বির।

সাব্বির বলেন, মেডিকেলে ভর্তির জন্য প্রাইভেট পড়ার মতো কোনো সুযোগ ছিল না। পরীক্ষার কোনো বইও কিনতে পারিনি।

তিনি জানান, বোনের উপহার পাওয়া ডিজিটাল শুমারির ট্যাব দিয়ে অনলাইন ও ইউটিউব থেকে দেখে পড়াশুনা করেই ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছি। পরীক্ষায় ৬৭.৭৫ নম্বর পেয়ে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছি।

ছোটবেলা থেকে মেধা ও পরিশ্রমকে সঙ্গে নিয়ে অভাবের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা সাব্বির বলেন, বাবা সব সময় বলছেন যত কষ্ট হোক স্বপ্ন পূরণে সহায়তা করবেন। বাবার এ আশ্বাসে নবম শ্রেণিতে যখন বিজ্ঞান বিভাগ নেই, তখন থেকেই লক্ষ্য ঠিক করি চিকিৎসক হব।

তিনি জানান, সেই লক্ষ্য পূরণে উজিরপুরের এইচএম ইনস্টিটিউট থেকে ২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। পরে ভর্তি হন সরকারি গৌরনদী কলেজে। সেখান থেকে এইচএসসি পরীক্ষায়ও পেয়েছেন জিপিএ ৫।

সাব্বিরের বাবা ফিরোজ খান বলেন, সাব্বির পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। কীভাবে ছেলেকে ভর্তি করব আর পড়ালেখার খরচ চালাবো এটা নিয়েও চিন্তায় ছিলাম। সাখাওয়াত হোসেন স্যার আমার ছেলের পড়ার পথ সহজ করে দিয়েছেন, ওনার প্রতি কৃতজ্ঞতা।  

বাংলাদেশ সময়: ১২২২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১,২০২৪
এমএস/এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।