ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিক্ষা

এক শিক্ষক দিয়ে চলছে পূর্ব ভাওয়াল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩, ২০২৪
এক শিক্ষক দিয়ে চলছে পূর্ব ভাওয়াল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়

চাঁদপুর: চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার পাইকপাড়া ইউনিয়নের পূর্ব ভাওয়াল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চলছে একজন শিক্ষক দিয়ে। বিদ্যালয়ের চারজন শিক্ষকের মধ্যে দুজন অবসরে এবং একজন মারা যাওয়ায় তৈরি হয়েছে এমন পরিস্থিতি।

১৯৪০ সালে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১০৮ জন। দুই শিফটে ছয় শ্রেণির নিয়মিত ১০০ থেকে ১০৫ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত থাকলেও বিদ্যালয়টিতে শিক্ষক রয়েছেন মাত্র একজন। ফলে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান।

বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শিক্ষার্থীরা ছোটাছুটি করছে। প্রতিটি শ্রেণিতে শিক্ষার্থীদের সরব উপস্থিতি রয়েছে। বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে পাওয়া গেল ফাতেমা আক্তার নামের একজন সহকারী শিক্ষককে। তিনি এখন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে আছেন। কিছুক্ষণ পর দেখা হয় আব্দুর রহমান নামে আরও একজনের সঙ্গে। তাকে ওই বিদ্যালয়ে অস্থায়ীভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শিক্ষক সংকটে থাকা এ বিদ্যালয়টিতে সাতজন শিক্ষক থাকার কথা থাকলেও চারজন দিয়ে চলছিল বিদ্যালয়ের পাঠদান। প্রধান শিক্ষক শান্তি রানী ধর অবসরে গেলে তিন শিক্ষক মিলে পাঠদান চালাচ্ছিলেন। এ তিনজনের মধ্যে নুরুন্নাহার নামে একজন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি তিন মাস আগে মারা যান। এরপর দুজন সহকারী শিক্ষক বিদ্যালয়টির হাল ধরেন। কিন্তু তানিয়া আক্তার নামের এক শিক্ষিকা শারীরিক অসুস্থতার কারণে অবসরে চলে যান। ফলে বিদ্যালয়টিতে শিক্ষকের সংখ্যা দাঁড়ায় একজনে।

দায়িত্বে থাকা সহকারী শিক্ষক ফাতেমা আক্তার শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাতে গিয়ে দুর্দশায় পড়েন। তিনি জানান, এমন প্রেক্ষাপটে একজন অস্থায়ী শিক্ষককে আনা হয়েছে। শিক্ষক না থাকায় সকালে প্রাকপ্রাথমিক, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের একসঙ্গে ক্লাস নিতে হয়। পর্যায়ক্রমে অস্থায়ী শিক্ষকের সহযোগিতায় সব শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করাতে হয় তাদের। একই ভাবে দ্বিতীয় পালায়ও সব শিক্ষার্থীকে ক্লাসে বসিয়ে শ্রেণি কার্যক্রম শুরু করেন।

ফাতেমা আক্তার আরও বলেন, এক শ্রেণি থেকে অন্য শ্রেণিতে পাঠদান ও বিদ্যালয়টির দাপ্তরিক কার্যক্রম চালাতে গিয়ে আমি মানসিক ও শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছি।

স্থানীয় বাসিন্দা রিয়াদ, সোহেল ও রাশেদুল ইসলাম বলেন, অভিভাবকের সহায়তায় শিক্ষার্থীরা নিয়মিত বিদ্যালয়ে এলেও বিদ্যালয়টিতে শিক্ষক না থাকায় শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষা নিয়ে হতাশা দেখা দিয়েছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের নজর দেওয়া জরুরি।

বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে গেলে ফরিদগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আফতাবুল ইসলামকে কার্যালয়ে পাওয়া যায়নি।

উপজেলার সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাহাবুব আলম এ বিষয়ে বলেন, বিদ্যালয়টিতে মাত্র একজন শিক্ষক রয়েছেন। তবে এমন পরিস্থিতিতে একজন অস্থায়ী শিক্ষককে আনা হয়েছে। বিদ্যালয়টিতে শিক্ষক দিতে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে।

এ বিষয়ে ফরিদগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মৌলি মণ্ডল বলেন, বিদ্যালয়টির শিক্ষক সংকট আমার জানা ছিল না। আমি সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে শিক্ষক দেওয়ার ব্যবস্থা করব।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩, ২০২৪
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।