ঢাকা: শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় অবরোধ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছিল সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। তবে বর্তমানে তারা ঢাকা কলেজের ভেতরে অবস্থান করছেন।
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুর ১২টায় ঢাকা কলেজের শহীদ মিনারে নিউমার্কেট এলাকায় সংঘাত- সংঘর্ষের পরিপ্রেক্ষিতে সংবাদ সম্মেলন করেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। এরপর থেকে তারা সেখানেই অবস্থান করছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা ঢাকা কলেজের ভেতরে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন। মাঝে মধ্যে ঝটিকা মিছিল করছেন। তবে তারা সড়ক অবরোধ করেননি। ফলে রাস্তায় যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
এদিকে নীলক্ষেত ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণের মধ্যে অতিরিক্ত পুলিশ ও আর্মড পুলিশ সদস্যদের সতর্ক অবস্থানে থাকতে দেখা গেছে।
অন্যদিকে দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা নীলক্ষেত ও নিউমার্কেটে সংঘর্ষের ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি মামুন আহমেদের পদত্যাগসহ ছয় দফা দাবি জানিয়েছেন। দাবি আদায়ে চার ঘণ্টার আল্টিমেটামও দিয়েছেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে ইডেন কলেজের শিক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার শায়না বলেন, ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি ঢাবির শিক্ষার্থীরা এবং সারা দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্ররা কাঁধে-কাঁধ মিলিয়ে আন্দোলন করেছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ভূমিকার পরে সাত কলেজের সঙ্গে এমন আচরণ কামনা করে না।
তাদের দাবিগুলো হলো: ঢাকা কলেজসহ সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংঘাতের দায় নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে এবং প্রো-ভিসি মামুন আহমেদকে পদত্যাগ করতে হবে। ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থী রাকিবকে হত্যার উদ্দেশে হামলাসহ ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের ওপর নিউমার্কেট থানা পুলিশের ন্যক্কারজনক হামলার ঘটনায় এসি, ওসিসহ জড়িত পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রত্যাহার করে তদন্ত সাপেক্ষে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
ঢাবি শিক্ষার্থী কর্তৃক ইডেন কলেজ ও বদরুন্নেসা কলেজসহ সাত কলেজের নারী শিক্ষার্থীদের সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য এবং অশালীন অঙ্গভঙ্গির সঙ্গে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সাত কলেজের একাডেমিক এবং প্রশাসনিক সম্পর্কের চূড়ান্ত অবসান ঘটিয়ে ঘণ্টার মধ্যে বাতিল করে শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপরেখা প্রণয়ন করতে হবে।
উদ্ভূত পরিস্থিতি সমাধানের জন্য প্রধান উপদেষ্টা, শিক্ষা উপদেষ্টা, শিক্ষার্থী উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, ইউজিসি সদস্য এবং ঢাবি ভিসির সমন্বয়ে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি টিমের সঙ্গে তাৎক্ষণিক উচ্চ পর্যায়ের মিটিংয়ের মাধ্যমে এ ঘটনার সমাধান করতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট এরিয়ায় সিটি করপোরেশনের রাস্তা জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দিতে হবে।
এ সময় দাবি আদায়ে বিকেল ৪টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে দাবি আদায় না হলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার হুঁশিয়ারি দেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে সাত কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে গঠিত কমিটির সদস্য ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী সজিব উদ্দিন বলেন, গতকাল রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী মুহাম্মদ রাকিবসহ রোববার রাতের হামলায় ৫০ জনের বেশি আহত হয়েছে। এ ঘটনায় সাতজন গুরুতর আহত হয়েছেন। আমরা এ হামলার ঘটনায় জড়িত পুলিশ ও ঢাবি শিক্ষার্থীদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। আগামী ৪ ঘণ্টার মধ্যে আমাদের দাবি না মানা হলে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা আরও কঠোর আন্দোলনে যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০২৫
এসসি/আরআইএস