ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

নারী শিক্ষায় অবদান রাখছে কুড়িগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজ

ফজলে ইলাহী স্বপন, জেলা প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০১২
নারী শিক্ষায় অবদান রাখছে কুড়িগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজ

কুড়িগ্রাম: নানা সমস্যার মাঝেও কুড়িগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজে শিক্ষার পরিবেশ অক্ষুণ্ন রয়েছে।

শিক্ষক, ক্লাসরুম, বিজ্ঞান ভবন, একাডেমিক ভবন, ছাত্রী নিবাসসহ নানা সংকট থাকা সত্ত্বেও নারী শিক্ষায় অগ্রণী ভূমিকা রাখছে কলেজটি।



কলেজ সূত্রে জানা যায়, ৪ একর ৩ শতাংশ জমির উপর ১৯৭৩ সালে কুড়িগ্রাম মহিলা কলেজটি স্থাপিত হয়। এর জাতীয়করণ হয় ১৯৮৪ সালে। কলেজটি প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখেন- বিশিষ্ট সমাজ সেবক আহাম্মদ আলী বকসী, অ্যাডভোকেট আমান উল্যাহ, প্রতিষ্ঠাকালীন অধ্যক্ষ আব্দুর রহমান প্রমুখ।
 
এই কলেজে অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক, প্রভাষকের ৪৫টি সৃষ্ট পদ থাকলেও রয়েছেন মাত্র ২৭ জন। ১৮০০ শিক্ষার্থীর মধ্যে উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে ১৪০০ এবং ডিগ্রি পর্যায়ে রয়েছেন ৪০০ জন।

এ কলেজে একটি পাঠাগার রয়েছে। এতে প্রায় ৫০০০ বই থাকলেও প্রায় সবই পুরনো সংস্করণের।

কলেজে ১০০ আসনের ৪ তলা বিশিষ্ট একটি ছাত্রী নিবাস রয়েছে। তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।
 
ফুলবাড়ী উপজেলার স্নাতক ৩য় বর্ষের মনিরা বেগম ও ভূরুঙ্গামারী উপজেলার একাদশ বিজ্ঞান বিভাগের মীম আক্তার নামে কলেজের ২ আবাসিক ছাত্রী জানান, ১০০ আসনের ছাত্রী নিবাসে ১৭০ জন পর্যন্ত থাকতে হয়। প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র সংকট প্রকট।

দূর-দূরান্তের ছাত্রীদের জন্য অন্তত ৩০০ আসনের ছাত্রী নিবাস দরকার বলে মন্তব্য করেন তারা।

দ্বাদশ বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী রোমানা আক্তার জানান, কলেজে বিনোদনের কোনো ব্যবস্থা নেই। আসবাবপত্র, বিজ্ঞান ভবন, একাডেমিক ভবন ও শ্রেণীকক্ষ প্রয়োজন।

দ্বাদশ মানবিক বিভাগের ছাত্রী আফরোজা বেগম ও দ্বাদশ বিজ্ঞান বিভাগের সপ্তমী রানী দাস জানান, ক্যাম্পাসে ক্যান্টিন নেই। খেলার মাঠ থাকলেও বর্ষা বা বৃষ্টির সময় থাকে জলাবদ্ধ। কলেজের ভেতরে চলাচলের রাস্তাগুলো পাকা করা প্রয়োজন। এছাড়া নিরাপত্তা প্রাচীর দুর্বল।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ছাত্রী জানান, ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারীরা অবসরে যাওয়ার পরও নতুন করে কোনো নিয়োগ হয়নি। ফলে খণ্ডকালীন কর্মচারীরা ঠিকমতো দায়িত্ব পালন না করায় নানা ধরনের দুর্ভোগ ও সমস্যায় পড়তে হয় কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষার্থীদের।

এদিকে, কুড়িগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজের উপাধ্যক্ষ মো. আব্দুল মান্নান বললেন ভিন্ন কথা।

তিনি বলেন, জেলার একমাত্র সরকারি মহিলা কলেজটিতে মনোরম পরিবেশে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা হচ্ছে। ২০১২ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় ৫৭ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়ে কলেজটি দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডে ১৫তম স্থান অধিকার করে। কলেজে অনার্স কোর্স চালু হলে বিপুল সংখ্যক ছাত্রী উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পাবেন।

কুড়িগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর প্রদীপ কুমার রায় জানান, এই প্রতিষ্ঠানটি কুড়িগ্রাম জেলার মেয়েদের শিক্ষা বিস্তারে অবদান রাখছে। এখানে ন্যাশনাল সার্ভিস প্রকল্পের শিক্ষকসহ প্রয়োজনীয় যোগ্যতা সম্পন্ন শিক্ষক রয়েছেন। শিক্ষার্থীদের আবাসন ব্যবস্থার জন্য ৪ তলা ও ১ তলা বিশিষ্ট ২টি ছাত্রী নিবাস রয়েছে।

তিনি আরও জানান, কুড়িগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজটিতে অবিলম্বে অনার্স কোর্স চালু করার দাবি শিক্ষার্থীসহ জেলাবাসীর। এরই মধ্যে ৪টি বিষয়ে অনার্স কোর্স প্রবর্তনের জন্য অধিভুক্তি ফি জমা দেওয়া হয়েছে। এজন্য ৩টি বিষয়ে এরই মধ্যে সহযোগী অধ্যাপকের পদ সৃষ্টি করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০১২
সম্পাদনা: শিমুল সুলতানা, নিউজরুম এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।