ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি): মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের ভর্তি পরীক্ষায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান ও জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত ও শহীদদের সন্তানদের জন্য ৫ শতাংশ কোটা রাখা জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে দাবি করেছে ছাত্র অধিকার পরিষদ।
সোমবার (৩ মার্চ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মধুর ক্যান্টিনের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা এ মন্তব্য করেন।
মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান ও জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে আহত ও নিহতদের পরিবারের সন্তানদের জন্য ৫ শতাংশ কোটা নির্ধারণ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। রোববার এ সংক্রান্ত একটি অফিস আদেশে স্কুল ও কলেজ অধ্যক্ষদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে ‘কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদ, ছাত্র-নাগরিক অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসনের দাবিতে’ ছাত্র অধিকার পরিষদ সংবাদ সম্মেলনটি আয়োজন করে।
বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, ছাত্র কোটায় উপদেষ্টা নিয়োগ দিয়ে বলা হয়েছিল, উনারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি। অথচ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সব ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীদের একটি সম্মিলিত প্লাটফর্ম। পরে দেখা গেল, সেখান থেকে সকল ছাত্র সংগঠনগুলোর পদধারী নেতাকর্মীদেরকে বের করে দেওয়া হয়েছে। এরপর চালু হলো ‘সমন্বয়ক কোটা’। বিভিন্ন সংস্কার কমিশনে ছাত্র প্রতিনিধির নামে আরেকটি কোটা চালু হলো। আমরা এখন দেখছি সমন্বয়ক কোটায় কীভাবে বড় বড় জায়গায় চলে যাওয়া যায়। মোংলা কর্মচারীদের প্রধান উপদেষ্টা হওয়া যায়। চাঁদাবাজির কথাও শোনা যায়।
তিনি বলেন, এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের ব্যানারে কোনো প্রোগ্রাম-কর্মসূচি পালন করতে দেওয়া হয়নি। বলা হয়েছে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ, ছাত্র রাজনীতি করা যাবে না। যারা এই কাজগুলো করেছে, তারাই এখন নতুন ছাত্র সংগঠনের নেতা। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক ভর্তি পরীক্ষায় মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ও জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহীদদের সন্তানদের জন্য ৫ শতাংশ কোটা রাখা হয়েছে। আমাদের জুলাইয়ের যে চেতনা তার সঙ্গে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক অবস্থানে গিয়ে সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক ছানাউল্লাহ হক বলেন, কোটাকে কবর দেওয়ার মাধ্যমে এই সরকার গঠিত হয়েছে। কিন্তু তারা তাদের ব্যর্থতাকে ঢাকার জন্য আবার কোটা ব্যবস্থা ফিরিয়ে নিয়ে আসছে। কোটা নিয়ে খেলতে গিয়ে শেখ হাসিনা ব্যর্থ হয়েছে। আমরা চাই না আপনারা একই খেলা খেলতে গিয়ে ব্যর্থ হন।
ছাত্র অধিকার পরিষদের পক্ষ থেকে এ সময় ৩ দফা দাবি দেওয়া হয়। বৈষম্যমূলক কোটা অনতিবিলম্বে বাতিল; ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের সু-চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা; শহীদ পরিবারকে এক কোটি টাকা এবং আহত পরিবারকে পুনর্বাসনের জন্য ৫০ লাখ টাকা এককালীন দেওয়া।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সদস্য সচিব রাকিবুল হাসানসহ বিভিন্ন শাখার নেতারা।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৪ ঘণ্টা, মার্চ ৩, ২০২৫
এফএইচ/এমজে