ঢাকা, শনিবার, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১৭ মে ২০২৫, ১৯ জিলকদ ১৪৪৬

শিক্ষা

ঢাবি শিক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাতের চেষ্টা

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬:২৮, মে ১৬, ২০২৫
ঢাবি শিক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাতের চেষ্টা

ঢাকা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের এক ছাত্রকে ছুরিকাঘাতের চেষ্টার ঘটনা ঘটেছে।

বৃহস্পতিবার (১৫ মে) রাত দেড়টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (ঢামেক) মোড়ে চায়ের দোকানে বাগবিতণ্ডা থেকে এ ঘটনা ঘটে।

তবে সরে যাওয়ায় অল্পের জন্য বেঁচে যান এ শিক্ষার্থী। ঘটনার পর অভিযুক্ত যুবক পালিয়ে যান।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম মো. তানজীন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ এবং ফজলুল হক হলের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের আবাসিক ছাত্র।

অন্যদিকে অভিযুক্ত রুবেল মোল্লা ডিএমসি মোড়ের একটি ভ্রাম্যমাণ সাইকেল গ্যারেজে কাজ করেন।

ঘটনার বিষয়ে শুক্রবার দুপুরে তানজীন জানান, ডিএমসি মোড়ে মো. আলমের চায়ের দোকানে তিনিসহ বন্ধুরা মিলে চা খেতে যান। সেখানে রুবেল মোল্লাকে চা ভালো হয়নি বলে আলমের সঙ্গে দীর্ঘসময় ঝগড়া করতে দেখে তিনি বাধা দেন। কথার এক পর্যায়ে রুবেল তাকে বলেন, আমি খুনের আসামি। একটা খুন করে এসেছি। আরেকটা করব এবার। এ কথা বলে সে চলে যায়।

তানজীম বলেন, একটু পরে রুবেল হঠাৎ করে একটি চাকু নিয়ে এসে আমাকে ছুরি মারার চেষ্টা করে। সে আমার খুবই কাছে চলে এসেছিল। তবে অন্যদের চিৎকারের শব্দে আমি সরে যাই। এরপর সে সবাইকে ছুরি দিয়ে আঘাতের চেষ্টা করে। তার মনোভাব ছিল এমন যা কাউকে না কাউকে সে আঘাত করবেই।

পরে ডিএমসি মোড়ের নির্মাণাধীন গেটের ওপরে উঠে মসজিদের ছাদে উঠে পালিয়ে যায়। আমরা তাকে আর খুঁজে পাইনি।

এ ঘটনার পর রাস্তার পাশের ভ্রাম্যমাণ সাইকেল গ্যারেজটি শিক্ষার্থীরা ভেঙে দিয়েছেন বলে জানান তিনি।

এ ঘটনায় যে দোকানে বাগবিতণ্ডার সূত্রপাত হয়, সে চা দোকানি আলম জানান, সে চা চেয়েছিল। চা দেওয়ার পরে সে ফেলে দিয়ে বলে, আবার বানা। আবার বানিয়ে দেওয়ার পরে সে বলে, চা খাব না। চা আগের থেকেও খারাপ বানাইছস।

এরপর দুইকাপ চায়ের বিল নিয়ে কথা কাটাকাটি শুরু করে। এ সময় চায়ের কাপ ভাঙতে গেলে হলের ভাইরা তাকে বাধা দেয়। এরপরেই সে হুট করে ছুরি নিয়ে মারতে আসে।

এ ঘটনার পর শিক্ষার্থীরা প্রক্টরিয়াল টিমকে ফোন করলে তারাও আসেন। এ বিষয়ে শাহবাগ থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। তবে মামলার ঝামেলা এবং নিরাপত্তার শঙ্কায় শুক্রবার সকালে অভিযোগটি তুলে নিয়েছেন বলে জানান তানজীন।

তিনি বলেন, মামলা করলে উকিল নিয়ে আমাকে ছুটতে হবে। এর আগেও আরেকটি ঘটনায় নিজেকেই দৌড়াতে হয়েছে। আর ওই ছেলে একটা ভবঘুরে, সে মাদকাসক্ত ছিল। এখন হয়ত আমার চেহারা মনে নেই, তবে পরে আমাকে চিনলে হয়ত আবার আক্রমণ করতে পারে।

তানজীন বলেন, আমি প্রশাসনকে বলবো ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা বাড়াতে হবে। ডিএমসি মোড়ে তিন হলের ছেলেরা আড্ডা দেয়। এখানে একটা নিরাপত্তা বক্স স্থাপন করা জরুরি। পুরো ক্যাম্পাসে ভবঘুরে, মাদকাসক্তরা ঘুরে বেড়ায়। এটি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা দরকার।

জানতে চাইলে প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ বলেন, আমরা জানার পরপরই প্রক্টরিয়াল টিমকে পাঠিয়েছি। কালকে থেকেই ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা আরও বাড়ানো হবে। আমাদের শিক্ষার্থীদেরও সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানাবো সতর্ক থাকার জন্য। বিশেষত রাতে বের হওয়ার সময়।

তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের চাওয়া-পাওয়ার ভিত্তিতে নিরাপত্তার জন্য আমরা যে সিদ্ধান্ত নিচ্ছি, এতে একটি বড় সিন্ডিকেট ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আমরা ১৬০টি দোকান গুঁড়িয়ে দিয়েছি। এছাড়া ঢাকা মেডিকেল এবং অমর একুশের হলের পাশে যে দোকান আছে, এগুলোতে বড় সিন্ডিকেট আছে।

এফএইচ/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।