ঢাকার সরকারি ৭টি কলেজ নিয়ে প্রস্তাবিত ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ বাতিল করে সব অংশীজনকে একটি কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছেন ঢাকা কলেজের একদল শিক্ষার্থী।
তারা বলছেন, ফ্যাকাল্টি বেসডমাল্টিক্যাম্পাস নয়, অক্সফোর্ডের আদলে স্বায়ত্তশাসিত কলেজভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপরেখা প্রদান করতে হবে।
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ঢাকা কলেজের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা এসব কথা জানান।
এ সময় তারা কয়েকটি বিষয় তুলে ধরেন। তারা বলেন, সাত কলেজকে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করার আন্দোলন একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর হাতে কুক্ষিগত হয়েছে। ফলে সেখানে কলেজগুলোর এক লাখ ৭০ হাজার শিক্ষার্থী এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডারের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থী পিয়াস আহমেদ আলিফ বলেন, শিক্ষামন্ত্রণালয় শিক্ষার্থীদের মতামত গুরুত্ব না দিয়ে অযৌক্তিক এবং অনুপযোগী একটি খসড়া প্রকাশ করেছে। ফলে বিভিন্ন ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা সংবাদ সম্মেলন করে ‘স্কুলিং হাইব্রিড পদ্ধতি’র খসড়ার বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান জানিয়েছে।
তিনি বলেন, সাত কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের শুরু থেকে আমাদের লক্ষ্য ছিল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন থেকে বের হয়ে অভিন্ন কাঠামোর অধীনে স্ব স্ব ক্যাম্পাসের স্বাতন্ত্রতা বজায় রেখে একটি বিশ্ববিদ্যালয় কাঠামোর মাধ্যমে পরিচালিত হবে। কিন্তু সদ্য প্রকাশিত খসড়ায় স্কুলিং হাইব্রিড পদ্ধতির মাধ্যমে কলেজের স্বাতন্ত্রতা বজায় থাকছে না।
এ সময় তিনি অধ্যাদেশের খসড়ার কয়েকটি ধারা সম্পর্কে প্রশ্ন তোলেন। বর্তমানে ৫টি কলেজে ইন্টারমিডিয়েট স্তর কার অধীনে পরিচালিত হবে, তা অধ্যাদেশে উল্লেখ নেই। বিশেষ করে ঢাকা কলেজের ইন্টারমিডিয়েটের গুরুত্ব ও লিগ্যাসি কীভাবে সংরক্ষিত হবে সে সম্পর্কে কোনো সুস্পষ্ট নির্দেশ নেই।
তিনি বলেন, ফ্যাকাল্টি বেসড মাল্টিক্যাম্পাস বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের কোথাও নেই। কোনোরকম অভিজ্ঞতা ছাড়া পূর্বে যেমন সাত কলেজকে ঢাবির অধিভুক্ত করে ভুল করা হয়েছে, তা আর করতে দেওয়া হবে না। আমরা আগে থেকে অক্সফোর্ড আদলে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার কথা বলেছি, যেখানে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিগ্রি প্রদান, পাঠ্যক্রম নির্ধারণ, পরীক্ষা আয়োজন এবং গবেষণার দিক নির্দেশনা ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ হয়ে থাকে। অন্যদিকে কলেজসমূহ স্বায়ত্তশাসিত হয়ে থাকে এবং তাদের নিজস্ব গভর্নিং বডি ও সম্পত্তি থাকে।
এ সময় তারা কয়েকটি দাবি তুলে ধরেন। এরমধ্যে রয়েছে, ২ থেকে ৭ কার্যদিবসের মধ্যে এ খসড়া প্রত্যাহার করে সময়োপযোগী সাস্টেনেইবল আইন প্রণোয়নের স্বার্থে প্রয়োজনীয় সাপেক্ষে কমিশন গঠন করতে হবে। আইন প্রণয়নে সাত কলেজের প্রতিটি স্টেক হোল্ডারের মতামত ও প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে। ইন্টারমিডিয়েট শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন, সব সাধারণ শিক্ষক ও এলামনাইদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। প্রহসনমূলক ইমেইল বাদ দিয়ে সরাসরি আলোচনায় বসতে হবে। অতিরিক্ত কর্মচারীদের স্বার্থ সংরক্ষণ ক্রতে হবে।
এফএইচ/জেএইচ