ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

‘নিউজ করার দরকার নাই, আমারে হল থেকে বের করে দেবে!’

ওয়ালিউল্লাহ, জাবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২০ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০১৪
‘নিউজ করার দরকার নাই, আমারে হল থেকে বের করে দেবে!’ কামাল হোসেন

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়: প্লাস্টিকের প্লেটে খাবার দেওয়ায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের ক্যান্টিন মালিক কামাল হোসেনকে বেধড়ক পিটিয়েছে আহত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফয়সাল হোসেন দিপু।

শনিবার দুপুরে কামালকে হলের বারান্দায় ডেকে স্ট্যাম্প দিয়ে পিটিয়ে দুই হাত-পা থেতলে দেন দিপু।

পরে শিক্ষার্থীরা আহত অবস্থায় কামালকে উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যান।

এই সংবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তব্যরত সাংবাদিকরা মেডিকেল সেন্টারে গেলে সেখানে বেডে কাতরাতে কাতরাতে কামাল বলেন, ‘ভাই কী সংবাদ লেখবেন? কার বিরুদ্ধে লেখবেন? কোনো কিছু লেখার দরকার নাই। ওই হলের ক্যান্টিন আমি লিজ নিছি, আমারে সেখানে থাকতে হবে। নিউজ করলে আমারে হলে থাকতে দেবে না। ’

এ সময় চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীরা কামালের দুই হাত ও পায়ের থেতলে যাওয়া স্থানগুলোতে বরফ দিচ্ছিলেন।

মেডিকেল সেন্টারে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলের ডাইনিং, ক্যান্টিন ও দোকানের কর্মচারীরা সবসময় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের ভয়ে থাকে। তারা কোনো ভুল করে থাকলে সবোচ্চ দু’একটি চর-থাপ্পড় দেওয়া যায়। কিন্তু পিটিয়ে হাত-পা থতলে দেওয়াটা অমানবিক।

কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সাজ্জাদ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, কামালে দুই হাত ও পা থেতলে গেছে। প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এক্স-রে প্রতিবেদনের পর বলা যাবে হাড়ে কোনো সমস্যা হয়েছে কিনা।

ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল হোসেন দিপু বাংলানিউজের কাছে দাবি করেন, প্লাস্টিকের প্লেটে খাবার দিতে না করার পরও সে (কামাল) আজকে (শনিবার) প্লাস্টিকের প্লেটে খাবার দিয়েছে। আমি তাকে এর আগে কয়েকবার সতর্ক করেছি। কিন্তু সে শোনেনি। তাই বাধ্য হয়ে আমি তাকে স্ট্যাম্প দিয়ে পিটিয়েছি।

শুক্রবার ছাত্রলীগকে উদ্দেশ করে যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, আর খারাপ খবরের শিরোনাম দেখতে চাই না। অনেক করেছো, এবার থামো। গুটি কয়েকজন অন্যায় করবে আর এর দায়ভার পুরো দলকে নিতে হবে সেটা হতে দেওয়া যাবে না।

এ বিষয়ে দিপু বলেন, যোগাযোগমন্ত্রী ঐ বক্তব্যের সঙ্গে এই ঘটনার কোনো সম্পর্ক নেই। এখানে কোনো চাঁদাবাজি কিংবা ফাও খাওয়ার ঘটনা ঘটেনি। কামাল কথা শুনছিল না, তাই বাধ্য হয়ে তাকে মেরেছি।

এর আগে, ১০ ফেব্রুয়ারি ফয়সাল হোসেন দিপুর বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তায় নিয়োজিত এক গার্ডের হাত-পা ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া, ২ মার্চ মীর মশাররফ হোসেন হল ও শহীদ সালাম বরকত হোসেন হলের ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় সংগঠন থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার হয়েছিলেন ফয়সাল হোসেন দিপুসহ চার নেতা। পরে ৪ এপ্রিল আবার পদ ফিরে পান দিপু।

বাংলাদেশ সময়: ২১১১ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।