ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

কুয়েট শিক্ষার্থীদের ঈদ ভাবনা

মাহবুবুর রহমান মুন্না, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২, ২০১৪
কুয়েট শিক্ষার্থীদের ঈদ ভাবনা

খুলনা: ঈদ মানেই অনাবিল আনন্দ। রোজার ঈদের পর সবাই অপেক্ষায় থাকেন কোরবানির ঈদের।

সবার মধ্যেই এ নিয়ে থাকে ভিন্নরকম উত্তেজনা। বছরে দুটি ঈদ দুই ধাঁচের হলেও উদযাপনের ধরণ কিন্তু প্রায় একই রকম। সবার সঙ্গে সাক্ষাৎ, ঘুরে বেড়ানো, খাওয়া-দাওয়া, আড্ডা, বিনোদন।

সারা বছর ক্লাস, পরীক্ষা, লাইব্রেরি আর পড়াশুনা নিয়ে ব্যস্ত থাকা শিক্ষার্থীদের ঈদ উৎসব উদযাপন একটু বিচিত্র ধরনের। ঈদের আনন্দকে আরো বাড়িয়ে নিতে তারা বিভিন্ন পরিকল্পনা করেন। ভাবনার ছকে আঁকেন আনন্দ উপভোগের নানা দিক। যেমনি আসন্ন কোরবানির ঈদকে নিয়ে বিভিন্ন চিন্তাভাবনা করেছেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) বিভিন্ন বিভাগের-০৯ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। বাংলানিউজের কাছে দেওয়া তাদের সেসব ভাবনা নিচে তুলে ধরা হলো-
কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের জাহিদুল ইসলাম জেমি বলেন, ঈদ নিয়ে আসলে এখন আর ছোটবেলার মতো অনুভূতি কাজ করে না, এখন ঈদের দিন থেকে ঈদের আগের দিনগুলোই বেশি উপভোগ করি। ঈদ নিয়ে সবার অনেক উত্তেজনা, অনেক প্রস্তুতি, এই ব্যাপারগুলা দেখতে খুব ভাল লাগে।  

তিনি বলেন, কোরবানির ঈদে সবচেয়ে ভাল লাগে গরুর হাটে যাওয়া, আর বেছে বেছে সবচেয়ে সুন্দর গরুটা কিনতে পারা। আর কেউ দাম জানতে চাইলে দিগুণ দাম বলে তাদের ভ্যাবাচেকা খাইয়ে দিতে সবচেয়ে মজা লাগে। আর খাবার দাবারের কথা নাই বলি। ঈদ মানেই তো খাওয়া দাওয়া, তাই না?

মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং (এমই) বিভাগের নাহিয়ান বলেন, প্রতিবারের মতো এবারও পরিবারের সঙ্গে ঢাকাতেই ঈদ করবো। ঈদে ঢাকার বাইরে খুব কমই যাওয়া হয়। ছোটবেলা থেকেই ঢাকায় ঈদ করি পরিবারের সঙ্গে। ঈদে সবচেয়ে মজার মুহূর্ত হলো বন্ধুদের সঙ্গে একসঙ্গে মিলে ঈদের নামাজ পড়া। এটাই আমার কাছে ঈদের সবচেয়ে বেশি আনন্দের বিষয়। আর ঘোরাঘুরি, খাওয়া দাওয়া, টিভি অনুষ্ঠান দেখাতো রয়েছেই।

একই বিভাগের তানজিম-আল-রুবাইয়াত বলেন, ঢাকা ছাড়া আমি ঈদ কল্পনাই করতে পারি না। যত ভিড় থাক যত জ্যাম থাক ঢাকা আমার কাছে জাদুর শহর।

যেহেতু ঈদ-উল-আজহা তাই সকাল সকাল নামাজ পড়েই গরু কুরবানি করব। এরপর বিকেল বেলা বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিব। এটাই হলো ঈদে আমার কাছে সবচেয়ে আনন্দের বিষয়। ঈদ মানেই পুরনো বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হওয়ার একটা উপলক্ষ। আর খাওয়া দাওয়া টিভি অনুষ্ঠান তো আছেই।

কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের আবু ইবনে বায়েজিদ (ইমন) বলেন, কুরবানির ঈদ সবসময় গ্রামে করলেও গতবছর যেতে পারিনি। তাই এবার আশা করি গ্রামের বাড়িতেই (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) ঈদ উদযাপন করব। সবদিক থেকেই এবারের ঈদটা একটু অন্যরকম। আগে ছুটি খুব কম পাওয়া যেত, এবার হাতে বেশি ছুটি। ইচ্ছামতো ঘোরাঘুরি করা যাবে।

একই বিভাগের মোঃ মোস্তফা কামাল বলেন, কোরবানির ঈদটা সবসময়ই খুব আনন্দের। ঈদ সাধারণত ঢাকাতেই করা হয়। ঈদের প্রস্তুতি শুরু হয় কয়েকদিন আগে থেকেই। আব্বুর সঙ্গে ছোট ভাইকে নিয়ে অনেক ঘোরাঘুরির পর গরু কেনা হয়। ঈদের দিন কুরবানির পর মাংস কাটতে বসে যাই। বিকেলে বন্ধুদের সঙ্গে বেইলি রোডে আড্ডা দিতে অনেক ভাল লাগে। রাতে এসে চলে আম্মুর হাতের গরম গরম গরুর মাংস সাবাড় করার প্রতিযোগিতা। তবে টিভি দেখাটাকে অনেক মিস করি।

সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং (সিই) বিভাগের মাহমুদুর রানা বলেন, ঈদ মানে খুশি। এই দিনটি সবার জন্য খুশির। কোরবানির ঈদে সবচেয়ে বড় খুশির যে জিনিসটা সেটি হলো বাবার সঙ্গে কোরবানির হাটে যাওয়া। আর ঈদের দিনের কাজ হলো সবার প্রথমে নামাজ পড়া, এরপর কোরবানি দেওয়া। আমি প্রতিবারই মাংস কাটার কাজটা খুব উপভোগ করি। আর বিকেলের দিকে আত্মীয়দের বাসায় বেড়াতে যাওয়া, কাজিনের সঙ্গে মজা করা। এগুলাই ঈদটাকে বেশী রঙ্গিন করে তোলে।

ইন্ডাষ্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট (আইইএম) বিভাগের বনি আমিন বলেন, এইবার এর ঈদটা একটু অন্যরকম আমার কাছে। প্রতিবারের মতো এবারও পরিবারের সঙ্গে ঢাকাতেই ঈদ করবো। ঈদের দিনটা পরিবারের সঙ্গেই থাকব। ঈদের দ্বিতীয় দিন থেকে হারিয়ে যাব বন্ধুদের সঙ্গে। রাতের বেলায় একটু টিভি চ্যানেলগুলোকে সময় দিতে হবে।

ইলেক্ট্রনিক্স কমিউনিকেশন এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (ইসিই) বিভাগের হুমায়রা রহমান বলেন, কোরবানির দিনে আমার আসলে তেমন কোন কাজ থাকে না। সকালে ঘুম থেকে একটু দেরি করে ওঠা হয়। ঘুম থেকে উঠেই মামার বাসায় বেড়াতে যাই। সেখানে মামাতো ভাই-বোনদের সঙ্গে চলে সারাদিন আড্ডা। আড্ডা শেষ করে বিকেলে বাসায় চলে আসি। তারপর মাঝরাত অবধি টিভি নিয়ে ডুবে থাকি। এরপর ঘুম, ঘুম আর ঘুম।

ইলেক্ট্রিক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের নাজমুল হাসান বলেন, কুরবানির ঈদ বগুড়াতে করব। আম্মু, বড় আপু, ছোট ভাইকে নিয়ে ঈদটা মহানন্দে কেটে যায়। ঈদের সকালে নামাজ পড়ে কোরবানি দেই। এরপর সাধারণত বাসায়ই থাকি। এবার ঈদে অবশ্য ছয়মাসের ছোট ভাগ্নেকে নিয়েই সারাদিন ব্যস্ত থাকব। ও থাকাতে এবারের ঈদটা আরও অনেক প্রাণবন্ত। বিকেলে বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে বের হব। রাতে সবার সঙ্গে জমিয়ে আড্ডা দেব।

কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের মো. মিজানুর রহমান বলেন, আত্মার বন্ধনের মানুষদের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগির অপর নাম ঈদ।

আপনজনদের সঙ্গে আনন্দময় মুহূর্তগুলো কখনও ভোলার নয়। কোরবানি ঈদে আনন্দের মুহূর্তগুলোর একটি- বিভিন্ন হাট ঘুরা এবং পছন্দমতো কোরবানির পশু কেনা।

আর ঈদের দিন সকালে নামাজ পড়ার পর পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুতি নেওয়া এবং সবকিছু শেষে বিকেলে আত্মীয় স্বজনদের বাসায় যাওয়া।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২, ২০১৪












বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।