ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

উপবৃত্তি থেকে শিক্ষকদের টাকা নেওয়ার অভিযোগ!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০১৪
উপবৃত্তি থেকে শিক্ষকদের টাকা নেওয়ার অভিযোগ! ছবি: ফাইল ফটো

ময়মনসিংহ: দরিদ্র শিক্ষার্থীদের পড়াশুনার খরচ চালানোর জন্য সরকারিভাবে দেয়া উপবৃত্তির টাকায় ভাগ বসাচ্ছেন শিক্ষকরা। তাদের টাকা না দিলে মেলে না উপবৃত্তির চেক।



এমন অভিযোগ উঠেছে ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার রাধাকানাই ইউনিয়নের দবরদস্তা আমিনা চৌধুরী মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ফুরকানাবাদ ময়েজ উদ্দিন দাখিল মাদ্রাসার প্রধানদের বিরুদ্ধে।  

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, এ দু’টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও দাখিল মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীদের চেকের মাধ্যমে উপবৃত্তির টাকা বিতরণ করা হয়। উপবৃত্তির এ চেকে শিক্ষকদের স্বাক্ষর প্রয়োজন হয়। অভিযোগ উঠেছে, জোর করে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ১০০-২০০ টাকা করে আদায় করে নিচ্ছেন শিক্ষকরা। নতুবা স্বাক্ষর করছেন না।

জানা যায়, উপজেলার রাধাকানাই ইউনিয়নের দবরদস্তা আমিনা চৌধুরী মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ১৪০ শিক্ষার্থী উপবৃত্তির টাকা পান।

বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র রাকিবুল ইসলামের বাবা চাঁন মিয়া অভিযোগ করে বলেন, ‘উপবৃত্তি টাকায় আমার ছেলে পড়ার খরচ চলে। কিন্তু চেক আনতে গেলে প্রধান শিক্ষক ২০০ টাকা দাবি করে। টাকা না দেওয়ায় চেক দেয়নি। পরে ধার করে টাকা জমা দিয়ে চেক এনে টাকা তুলেছেন।  
বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী ফাতেমা আক্তারের মা রওশন আরা অভিযোগ করেন, চেক দিতে টাকা নেওয়া হলেও তার বিপরীতে কোনো রশিদ না দেওয়ায় তাদের কাছ থেকে ঘুষ আদায় করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে স্থানীয় দবরদস্তা আমিনা চৌধুরী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নার্গিস সুলতানা জানান, ‘উপবৃত্তির চেক দেওয়ার আগে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বার্ষিক ফি বাবদ ২০০ টাকা রাখা হয়। তবে এর জন্য কোনো রশিদ দেওয়া হয়নি।

এদিকে, একই ইউনিয়নের ফুরকানাবাদ ময়েজ উদ্দিন দাখিল মাদ্রাসাতেও উপবৃত্তির চেক নিতে শিক্ষার্থীদের দিতে হয়েছে ১০০-১৮০ টাকা পর্যন্ত।

মাদ্রসার নবম শ্রেণির ছাত্র মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘আমি অষ্টম শ্রেণিত জিপিএ-৫ পাওয়ায় ভাতা পেয়েছি। সেই ভাতার টাকা দিয়েই সেখান থেকে ১০০ টাকা রেখে দিয়েছেন মাদ্রাসার শিক্ষকরা। একই অভিযোগ করেন ওই শ্রেণির আবদুল্লাহ।

তবে মাদ্রাসার সুপার শফিকুল ইসলাম প্রথমে টাকা আদায়ের বিষয়টি সম্পূর্ণ অস্বীকার করলেও পরে বলেন, ‘যেসব শিক্ষার্থীদের কাছে মাদ্রাসার বকেয়া ছিল তাদের কাছ থেকে টাকা রাখা হয়েছে। ’

এ ব্যাপারে ফুলবাড়ীয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাসরিন আক্তার বলেন, ‘উপবৃত্তি দিতে টাকা নেওয়ার কোনো বিধান নেই। আর টাকা বিতরণের সময় কোনো শিক্ষক টাকা নেয়নি। তবে কেউ অভিযোগ করলে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।