ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি-টিউশন ফি সীমাবদ্ধ রাখার আহ্বান

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০১৪
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি-টিউশন ফি সীমাবদ্ধ রাখার আহ্বান ছবি: কাশেম হারুন / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে উচ্চশিক্ষার সম্ভাবনাময় খাত উল্লেখ করে এসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী ভর্তি ও টিউশন ফি নির্ধারণে সীমাবদ্ধ রাখার আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।

রোববার (১৬ নভেম্বর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ (ইউল্যাব)-এর তৃতীয় সমাবর্তনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী।



তিনি বলেন, আমরা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অনুরোধ জানাই, তারা যেন দেশের বাস্তবতা ও জনগণের আর্থ-সামাজিক অবস্থা বিবেচনা করে ভর্তি ও টিউশন ফিসহ সব ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ রাখতে উদার হয়।

কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অনিয়ম, দুর্নীতি ও বেআইনি ক্যাম্পাস স্থাপন করে মুনাফা অর্জন করায় তাদের চাপে রেখেও সঠিক ধারায় আনা কঠিন হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এখন তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ ছাড়া কোনো পথ খোলা রাখেনি। দেশে অর্ধশতাধিক বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্ব ক্যাম্পাসে পরিচালিত হচ্ছে, বাকি কয়েকটিরও কাজ করছে। এজন্য তাদের অভিনন্দন জানাই।

নয় একর জমির ওপর ইউল্যাবের নিজস্ব ক্যাম্পাস গড়ে তোলার কাজ চলছে, এজন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে একান্ত ধন্যবাদ জানান শিক্ষামন্ত্রী।

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে দেশের বেসরকারি (প্রাইভেট) বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বেশি শিক্ষার্থী অধ্যায়ন করছে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শুধু তাই নয়; এক হাজার ৬ শ’ ৩০ জন বিদেশি শিক্ষার্থী আমাদের দেশের বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে উচ্চ শিক্ষার সম্ভাবনাময় খাত উল্লেখ করে নুরুল ইসলাম নাহিদ-এর যথাযথ গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে জ্ঞান চর্চা, গবেষণা ও নতুন জ্ঞান অনুসন্ধান করতে হবে। এজন্য পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। শিক্ষার পরিবেশ ও গুণগত মান বৃদ্ধির জন্য অব্যাহত প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। আর এজন্য বিষয় বাছাই, শিক্ষাক্রম ও শিক্ষাদানের পদ্ধতিতে উন্নত ঘটাতে হবে।

‘সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে আমরা কোনো পার্থক্য করি না’ উল্লেখ করে নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীই এ জাতির ভবিষ্যত। আমরা সবার জন্য মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে চাই।

ইউল্যাবের তৃতীয় এ সমাবর্তনে এক হাজার ৮০ জন স্নাতক অংশ নেন। অনুষ্ঠানে অংশ নেন শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও শিক্ষকবৃন্দ।

ইউল্যাবের চ্যান্সেলর রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকে সবাইকে অভিনন্দন জানিয়ে স্নাতকদের উদ্দেশে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষাজীবন শেষ করে কর্মজীবন শুরু হলো। অর্জিত শিক্ষা ও জ্ঞান বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করতে হবে। সৃজনশীল মেধা দিয়ে আরো সাফল্য আনা সম্ভব। আপনাদের যাত্রাপথ শুভ হোক, সফল হোক।

উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করা স্নাতকরা বাস্তবে যুগশ্রষ্ঠা। তারা দেশে, সমাজ ও মানবজাতির জন্য কল্যাণকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম বলেও মন্তব্য করেন শিক্ষামন্ত্রী।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় আইনের কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী আরো বলেন, যারা ব্যবসা ও প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে স্বার্থ হাসিল করতে চান তাদের জন্য আইনে শাস্তি রয়েছে। আইন সবাইকে মেনে চলতে হবে।

অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক।

স্নাতকদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ পরবর্তী আরো পাঠের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে জানিয়ে তিনি আরো বলেন, সেবা, বিনয় ও প্রশ্ন দিয়ে জীবনের পরিপূর্ণ বিকাশের জন্য স্নাতকদের নিযুক্ত থাকতে হবে।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, ইউল্যাবের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ইমরান রহমান। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্ট্রিজের ভাইস প্রেসিডেন্ট ড. কাজী আনিস।

সমাবর্তন অনুষ্ঠান শুরুর আগে স্নাতকরা শোভাযাত্রা নিয়ে সমাবর্তন মিলনায়তনে আসেন। তাদের মধ্যে ইংলিস অ্যান্ড হিউম্যানিটিজ বিভাগের সায়মা আক্তার ও আজিজুর রহমান শিক্ষামন্ত্রীর কাছে স্বর্ণপদক গ্রহণ করেন।

পরে অন্যান্য স্নাতকদের হাতে সনদ প্রদান করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।