কলেজের বিভাগীয় প্রধানরা কাজে অতিরিক্ত চাপের অজুহাত দেখিয়ে পরে রসিদ দেয়া হবে বলে জানালেও কলেজ অধ্যক্ষ এ বিষয়ে উল্টো শিক্ষার্থীদের দুষছেন।
মঙ্গলবার (৪ জুলাই) কলেজের অনার্স শেষ বর্ষের হিসাব বিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগসহ বেশ কয়েকটি বিভাগের ফরম পূরণ করা হয়।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ওই ফরম পূরণের সময় রসিদ ছাড়াই প্রকার ভেদে ৪শ’ থেকে সাড়ে ৪শ’ টাকা করে সেমিনার ফি’র নামে টাকা আদায় করা হয়। অথচ গত বছর শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায়কৃত সেমিনার ফি’র বিপরীতে রসিদ দেয়া হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষার্থীদের কয়েকজন জানান, ফরম পূরণের সময় সেমিনার ফি ছাড়াও বিভিন্ন ফি’র নামে প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে বিভাগ ভেদে নানা অংকের টাকা নেয়া হচ্ছে। এর পরিমাণ প্রায় তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা।
তারা জানান, এ ফি’র টাকা ছাড়াও টার্ম পেপার জমাদানের সময় আরও অতিরিক্ত ২শ’ টাকা জমা দিতে হয়। এসব টাকা বাধ্য হয়েই দিতে হয় বলে শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন।
হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের অনার্স শেষ বর্ষের এক শিক্ষার্থী জানান, সকালে ফরম জমা দেয়ার সময় সেমিনার ফি হিসেবে সাড়ে ৪শ’ টাকা চাওয়া হয়। তারা কোনো কথা না বলে বাধ্য হয়ে তা দিয়েছেন। কিন্তু অন্যান্যবার এ টাকার বিপরীতে একটি রসিদ দেয়া হলেও এবার দেয়া হয়নি।
অর্থনীতি বিভাগের অপর এক শিক্ষার্থী জানান, কয়েকমাস আগেও বিভাগীয় ফি বাবদ তারা ১ হাজার ৫৫০ টাকা জমা দিলেও এর বিপরীতে কোনো রসিদ পাননি।
এনএস সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক কলেজ শিক্ষার্থী শাহরিয়ার রিয়ন বলেন, ‘হরহামেশাই এ ধরনের অভিযোগ আসে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের কথাও শোনা যায়। শিক্ষকদের হাতে ইনকোর্স পরীক্ষার নম্বর থাকায় শিক্ষার্থীরা ভয়ে কোনো প্রতিবাদ করতে পারেন না’।
এদিকে, রসিদ ছাড়া টাকা আদায়ের বিষয়টি সঠিক নয় বলে দাবি করেছেন হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান আব্দুল লতিফ মিয়া।
তিনি বাংলানিউজকে জানান, সময়ের অভাবে ও জনবল সংকটের কারণে সেমিনার ফি আদায়ের সময় রশিদ দেয়া হয়নি। পরে তা শিক্ষার্থীদের দেয়া হবে। প্রতিটি শিক্ষার্থীই এ রসিদ পাবে বলে নিশ্চিত করেন তিনি। টার্ম পেপার জমাদানের বিপরীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিপত্র অনুযায়ী ১৫০ টাকা নেয়ার কথা জানান তিনি।
তবে অর্থনীতি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ফরহাদ হোসেন এ টার্ম ফি বাবদ ২শ' টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করে জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিপত্রের বাইরে অতিরিক্ত কোনো টাকা আদায় করা হয় না।
এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর সামসুজ্জামান বাংলানিউজকে জানান, ছাত্রদের বিনা রসিদে টাকা আদায়ের অভিযোগ বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।
তিনি উল্টো শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলেন, ‘তাদের কেউ কেউ কলেজের ফি জমা দেয়ার নামে বাড়ি থেকে অতিরিক্তি টাকা নিয়ে আসে এবং খরচ করে ফেলে। হিসাব দিতে না পেরে তারা কলেজের ওপর মিথ্যা অভিযোগ চাপিয়ে দেয়’।
ভর্তির সময় অনেক শিক্ষার্থী বিভাগীয় ফি, ‘সেশন চার্জসহ বিভিন্ন ফি বকেয়া রাখে। শেষ বর্ষে এসে তা একসঙ্গে জমা দেয়ার সময় টাকার অংক বেড়ে যায়। এভাবে তারা মিথ্যা অভিযোগ করে কলেজের সুনাম নষ্ট করছে’।
বাংলাদেশ সময়: ২১১১ ঘণ্টা, জুলাই ০৪, ২০১৭
আরবি/আরএ