ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ মে ২০২৪, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫

শিক্ষা

জাবির নতুন হলে সুবিধা কোথায়?

নুর আলম হিমেল, জাবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০১৭
জাবির নতুন হলে সুবিধা কোথায়? চালু হয়নি ডাইনিং, হাইকমোডে নেই ফ্ল্যাশ-রয়েছে এমন বহু সমস্যা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়: নতুন হলে সুযোগ-সুবিধা বেশি থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। আর একটু ‘বেশি’ সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার আশায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) নবনির্মিত ‘বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর’ হলে ওঠেন প্রায় সাত শতাধিক শিক্ষার্থী। কিন্তু সুবিধা তো দূরের বিষয়, উল্টো নানামুখি সমস্যায় জর্জরিত হলের শিক্ষার্থীরা। বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অবগত হলেও হল চালুর প্রায় পাঁচ মাসেও কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।

জানা যায়, ২০১৭ সালের ১৯ আগস্ট (শনিবার) ছাত্রদের জন্য হলটি চালু করা হয়। ৫২০টি সিটের বিপরীতে ৭০০ জন ছাত্রকে বরাদ্দ দেওয়া হয়।

প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী (৪৬তম ব্যাচ), আল বিরুনি সম্প্রসারিত হলের শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন হল থেকে শিক্ষার্থী ওঠেন এই হলে।  

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বাংলানিউজকে বলেন, হলে এখন পর্যন্ত ডাইনিং চালু করা হয়নি, যার কারণে দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীদের বাইরে থেকে বেশি দামে খাদ্য খেতে হচ্ছে, যা তাদের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। হলে গ্যাসের ব্যবস্থা নেই, চেয়ারগুলো ভেঙে যাচ্ছে, রুমে ব্যবহৃত নিম্নমানের বাল্বগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, কক্ষের রং খসে পড়ছে, অন্যান্য হলে ইন্টারনেটের ব্যবস্থা থাকলেও এখানে নেই।  

শুধু তাই নয়, শোয়ার জন্য পর্যাপ্ত খাট না থাকায় মেঝেতে ঘুমাতে হচ্ছে, রিডিং রুমে হাতেগোনা কয়েকটি সংবাদপত্র রাখা হয়েছে, নেই কোনো খেলাধুলার সামগ্রী। সবচেয়ে বড় সমস্যা প্রতিটি ফ্লোরের কর্নারে চারটি করে টয়লেট রয়েছে, তার মধ্যে দু’টি টয়লেট হাইকমড সিস্টেম। কিন্তু টয়লেট ব্যবহারের জন্য হ্যান্ডফ্ল্যাশ নেই। রাখা হয়নি প্রসাব করার কোনো জায়গা। যার কারণে প্রতিদিন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে হলের শিক্ষার্থীদের।  

ক্ষোভ প্রকাশ করে ওই হলের আবাসিক শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম বলেন, একটু বাড়তি সুবিধা পাবো বলে এ হলে উঠেছিলাম। কিন্তু সুবিধার বদলে অসুবিধাই বেশি। সমস্যাগুলো হল প্রশাসনকে বার বার বলা হলেও প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না।  

এর মধ্যে গত ৩ ডিসেম্বর (রোববার) সমস্যা নিয়ে হল প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে বসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সেখানেও বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়। কিন্তু প্রায় এক মাস হতে চললেও সমস্যার সমাধান নেই।  

আরেক শিক্ষার্থী জুবায়ের কামাল বলেন, আমরা হলে প্রায় সাত শতাধিক শিক্ষার্থী অত্যন্ত দুর্বিষহ জীবন-যাপন করছি। এজন্য প্রশাসনের গাফলতিই দায়ী। আমরা দ্রুতই এর সমাধান চাই।  

সার্বিক বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক অসিত বরণ পাল বলেন, আমাদের হলে গ্যাসের ব্যবস্থা নেই তাই ডাইনিং চালু করা সম্ভব হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গ্যাসের ব্যবস্থা করার জন্য কাজ করছে। প্রশাসন থেকে নিম্নমানের চেয়ার ও বাল্ব দেওয়া হয়েছে। ৪০টি খাটও কম রয়েছে। হল তৈরির সময় টয়লেটে ফ্ল্যাশ না দিলে আমরা কি করবো। এখনতো ব্যবস্থা করা যায়, প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমাদের বাজেট কম।  

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম বলেন, হল প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে সমস্যাগুলোর তালিকা করে দ্রুত সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থা করা হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০১৭
জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।