অজানা কবিতা, গল্প আর জ্ঞান-বিজ্ঞানে নিজেদের শাণিত করার অদম্য ইচ্ছায় উচ্ছ্বসিত হয়ে উঠল কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। হাসি-আনন্দে একাকার হয়ে বুকের সঙ্গে দুই হাত দিয়ে মায়ার বাঁধনে নতুন বইগুলো জড়িয়ে স্কুল ছাড়ে তারা।
পাঠ্যপুস্তক বিতরণ উৎসবকে ঘিরে সোমবার (০১ জানুয়ারি) সকালে রাজশাহীর অগ্রণী বিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয়ে এমন দৃশ্যই দেখা গেল। জেলা পাঠ্যপুস্তক বিতরণ উৎসব কমিটির পক্ষ থেকে এ স্কুলেই সবচেয়ে বড় আয়োজনে শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দিয়ে উৎসবের উদ্বোধন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী সদর আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা। বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, আগে দেশে এই দিনে ইংরেজি নববর্ষের উৎসব পালন করা হতো। এখন পালিত হচ্ছে বই উৎসব। এটা আরও একটি বিজয়। বাঙালি জাতিকে আলোকিত করতে সরকারের একটি বড় সাফল্য।
বাদশা আরও বলেন, বছরের প্রথম দিনেই এখন প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের সব শিক্ষার্থী বিনামূল্যে বই পাচ্ছে। এতে শিক্ষার হার বাড়ছে, মান বাড়ছে। আগামীতে সরকার পরিবর্তন হলেও যেন এই ধারা কেউ বন্ধ করতে না পারে সে জন্য আইন করা প্রয়োজন। তাহলেই দেশে শিক্ষিত মানুষের হার শতভাগ হবে।
পাঠ্যপুস্তক বিতরণ উৎসবে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার নূর-উর-রহমান। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- জেলা প্রশাসক হেলাল মাহমুদ শরীফ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নাসিমা খাতুন, রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর আবুল কালাম আজাদ, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের রাজশাহী অঞ্চলের উপ-পরিচালক ও পাঠ্যপুস্তক বিতরণ উৎসবের সভাপতি ড. শরমিন ফেরদৌস চৌধুরী। বই বিতরণ শেষে ওই স্কুলে আয়োজন করা হয় সাংষ্কৃতিক অনুষ্ঠান। নাচ-গান-গম্ভীরার মাধ্যমে উৎসবে মেতে ওঠে শিক্ষার্থীরা।
রাজশাহী জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার রফিকুল ইসলাম জানান, রাজশাহীতে মাধ্যমিক পর্যায়ে এবার ৩৪ লাখ ৪০ হাজার ৭২০টি বই বিতরণ করা হচ্ছে। দাখিল পর্যায়ে বই বিতরণ করা হচ্ছে ৬ লাখ ৪৫ হাজার ৬৬৯টি।
এছাড়া ইবতেদায়িতে ৩ লাখ ২৪ হাজার ৮৪০টি, ভোকেশনালে ১ লাখ ২৬ হাজার ৭৭৬টি, দাখিল ভোকেশনালে ৩ হাজার ৪০টি, ইংরেজি মাধ্যমে ১১ হাজার ৮৯৫টি এবং দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য ব্রেইল পদ্ধতিতে ছাপানো বই দেওয়া হচ্ছে ২৫৮টি।
রাজশাহী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নাফিসা বেগম জানান, রাজশাহীতে মোট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২ হাজার ৪৩৩টি। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৩ লাখ ১৯ হাজার ১৪৫ শিক্ষার্থীর মাঝে বিতরণ করা হচ্ছে ১৪ লাখ ৯৯ হাজার ১৬৩টি বই।
এ বছর চাহিদা অনুযায়ী শতভাগ বই স্কুলে স্কুলে পৌঁছেছে। তাই প্রথম দিনেই সবাই নতুন বই পাচ্ছে। সোমবার সকাল থেকে জেলার প্রতিটি স্কুলে স্কুলে উৎসবমুখ পরিবেশে এসব বই বিতরণ করা হচ্ছে। যারা আজ কোনো কারণে পাবেনা তারা আগামীকালও নিতে পারবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০১, ২০১৮
এসএস/এমজেএফ