ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১, ০৩ মে ২০২৪, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫

শিক্ষা

দাসিয়ারছড়ায় নতুন বইয়ের আনন্দ

ফজলে ইলাহী স্বপন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১, ২০১৮
দাসিয়ারছড়ায় নতুন বইয়ের আনন্দ বছরের প্রথম দিনে দাসিয়ারছড়ায় বই উৎসব

কুড়িগ্রাম: নতুন বছরের শুরুতেই নতুন বই পাওয়ার আনন্দ উৎসবে মেতে উঠেছিলো কুড়িগ্রামের বিলুপ্ত ছিটমহল দাসিয়ারছড়ার কোমলমতি শিক্ষার্থীরা।

দীর্ঘ সময় দাসিয়ারছড়ার শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার কোনো সুযোগ ছিলো না। ছিটমহল বিনিময়ের পর বিগত দুই বছর ধরে নির্বিঘ্নে এখানকার শিশুরা এখন পাচ্ছে শিক্ষার অধিকার।

এ এলাকার কোমলতি শিক্ষার্থীদের মুখে হাসি ফোটাতে বছরের প্রথম দিনেই নতুন বই তুলে দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।

সোমবার (০১ জানুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত বই উৎসবের মধ্যে দিয়ে দাসিয়ারছড়ার কালিরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেওয়া হয়।

উৎসবে শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেন প্রধান অতিথি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আশরাফুল ইসলাম। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দেবেন্দ্র নাথ উরাঁও, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা স্বপন কুমার অধিকারী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানী সরকার, সদর ইউপি চেয়ারম্যান হারুণ-অর-রশিদ, ছিটমহল আন্দোলনের সাবেক নেতা আলতাফ হোসেন, নুর আলম মাস্টার প্রমুখ।

বছরের শুরুতেই নতুন বই হাতে পেয়ে ৫ম শ্রেণির ছাত্রী জেসমিন, প্রথম শ্রেণির ছাত্রী আনিসা আলম ও প্রথম শ্রেণির ছাত্র শাওন তাদের অনুভূতি প্রকাশ করে বাংলানিউজকে বলে, বছরের প্রথম দিনেই নতুন বই লেখাপড়ার আগ্রহ বাড়িয়ে দেয়। নতুন বই-খাতা নিয়ে স্কুলে যেতে পারছি তা খুবই আনন্দের।

ছিটমহল বিনিময় আন্দোলনের সাবেক নেতা গোলাম মোস্তফা বই উৎসবের আনন্দ প্রকাশ করে বলেন, বাংলাদেশ হওয়ার আগে দাসিয়ারছড়ার মেয়েদের বয়স ১০ পেরুলেই বিয়ের পিড়িতে বসতে হতো। মাদকের নীল ছোবলে মরণ নেশায় ডুবে থাকতো কিশোর-যুবকরা। গত দুই বছর ধরে বছরের প্রথম দিনেই বই-খাতা হাতে নিয়ে আনন্দ-উচ্ছ্বাসে এখানকার ছেলে-মেয়েরা সারা দেশের মতো পড়ার সুযোগ পাচ্ছে।

ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দেবেন্দ্র নাথ উরাঁও বাংলানিউজকে বলেন, ৬৮ বছরের সুবিধা বঞ্চিত জনগোষ্ঠী যাতে সকল নাগরিক সুবিধা পায় সেই লক্ষ্যে নতুন নাগরিকদের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে সরকার। বাংলাদেশের অন্যান্য নাগরিকদের মতো বিলুপ্ত ছিটমহল দাসিয়ারছড়ার শিশুরা যাতে নির্বিঘ্নে লেখাপড়া শিখতে পারে সেজন্য বছরের শুরুতেই নতুন বই তুলে দেয়া হয়েছে।

শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, দাসিয়ারছড়ায় ১ কোটি ৫১ লাখ ২৭ হাজার ৫২৩ টাকা ব্যয়ে তিনটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছে। এই তিনটি বিদ্যালয়ে ১ম থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত মোট ১৩৬ জন ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে নতুন বই তুলে দেওয়া হয়েছে।

এছাড়াও দাসিয়ারছড়ার ৫টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বারের মতো ৬ষ্ঠ থেকে ৯ম পর্যন্ত ৬৫৫ জন, ১টি দাখিল মাদ্রাসায় ৬ষ্ঠ থেকে ৯ম শ্রেণি পর্যন্ত ১১০ জন, ইবতেদায়িতে ১ম থেকে ৫ম ১৬৫ জন শিক্ষর্থীর মাঝে নতুন বই বিতরণ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০১, ২০১৮
এফইএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।