আর কিছুক্ষণ পরই শুরু হবে বই উৎসব-উন্মুখ হয়ে তার জন্য অপেক্ষা। অবশেষে জেলা প্রশাসক মনোজ কুমার রায় আসলেন সবার হাতে দেওয়া হলো নতুন বই।
নতুন বই নিয়ে উৎসবের এমন আরও চিত্র পাওয়া যায় শহরের সেন্ট্রাল হাই স্কুল, পাইলট হাই স্কুল ও স্টার লাইন স্প্রাউট ইন্টারন্যাশন স্কুলেও।
স্কুলগুলোতে গিয়ে দেখা গেছে, সবার হাতে নতুন বই। কেউ বুকে আগলে রেখেছে, কেউ ব্যাগে সযত্নে রেখেছে। নতুন বইয়ের আনন্দ নিয়ে কথা হয় ফেনী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৩য় শ্রেণির শিক্ষার্থী আফসানার সঙ্গে। সে জানায়, নতুন বইয়ের ছবি তার কাছে ভীষণ ভালো লাগে। তাই আজ বাড়ি গিয়ে প্রথম কাজ হবে সবগুলো বইয়ের সব ছবি দেখে শেষ করা। এরপর শুরু হবে গল্পগুলো পড়া।
শহরের সেন্ট্রাল স্কুলের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, নতুন ক্লাসের প্রথমদিনই হাতে বই পাওয়ার আনন্দটা সত্যিই ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। রিপা নামের ২য় শ্রেণির এক শিক্ষার্থী জানায়, নতুন বই পেয়ে বছরের শুরু থেকেই সে পড়া শুরু করে দেবে।
সকাল ১০টায় বই উৎসবে ফেনী জেলা প্রশাসক মনোজ কুমার রায় বলেন, আমাদের সময়ে বই ফ্রিতে পাওয়া যেত না। বছরের মাস খানেক পার হলে বাবা বাজার থেকে বই আনতেন। এখনকার শিক্ষার্থীদের বইয়ের জন্য আর অপেক্ষা করতে হয় না। সরকার বছরের প্রথম দিনই বিনামূল্যে সবার হাতে বই পৌঁছে দিচ্ছে। এজন্য তাদের উচিৎ পড়াশোনা করে সুনাগরিক হয়ে সরকারকে সঠিক প্রতিদান দেওয়া।
বছরের শুরুতে নতুন বই পেয়ে শিশুদের উৎসবের ব্যাপারে জান্নাত আফরিন নামের এক অভিভাবক জানান, বছরের শুরুতে শিশুদের হাতে বই পৌঁছে দেওয়ার জন্য সরকারকে ধন্যবাদ দিতে হয়। কারণ বছরের প্রথমেই নতুন বই হাতে পেয়ে বাচ্চারা আগ্রহের সঙ্গে পড়া শুরু করে। শিক্ষকরাও পাঠদানে উৎসাহী হোন। বছরের প্রথমে বই পাওয়ায় বছর শেষ হওয়ার আগেই সিলেবাস শেষ করা যায়।
শিশুদের এতো উচ্ছ্বাস-আনন্দের মধ্যেও বই নিয়ে অভিভাবক-শিক্ষকদের রয়েছে কিছু অভিযোগ। এ ব্যাপারে কথা হয় ফেনী জেলা মুদ্রণ শিল্প মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও অভিভাবক আরিফুল আমিন রিজভীর সঙ্গে। তিনি জানান, কাগজ ও ছাপা বেশ নিম্নমানের। শিশুরা প্রথমে বই হাতে নিয়ে গন্ধ শুঁকে, সেই গন্ধটাও বিকট, এতে বাচ্চারা অনুৎসাহিত হচ্ছে। কাগজ নিয়েও রয়েছে আপত্তি।
চলতি বছর ফেনী জেলায় ১ হাজার ১শ’ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৩৩ লাখ ৩৭ হাজার ৫শ’ ২৩টি বই বিতরণ করছে শিক্ষা অফিস। শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার জেলায় মাধ্যমিক ও ইবতেদায়ি স্তরে মোট ২৫ লাখ ২১ হাজার ৪শ’ ২১টি বই বিতরণ করা হয়েছে।
এর মধ্যে রয়েছে মাধ্যমিক পর্যায়ে ১৬ লাখ ৪২ হাজার ৬শ’ ২২টি বই, দাখিল পর্যায়ে ৫ লাখ ২ হাজার ৫টি, ইবতেদায়ি পর্যায়ে ৩ লাখ ৫৮ হাজার ৯শ’ ৯৪টি, মাধ্যমিক (ইংরেজি ভার্সন) পর্যায়ে ৫ হাজার ৩শ’, মাধ্যমিক (ভোকেশনাল) পর্যায়ে ১২ হাজার ৫শ’ বই। এছাড়া প্রাক প্রাথমিক স্তরে জেলার ৯শ’ ৩৭টি বিদ্যালয়ে ৮ লাখ ১৬ হাজার ১শ’ ২টি বই বিতরণের জন্য সরবরাহ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০১, ২০১৮
এসএইচডি/আরআর