শহীদ মিনার অবমাননার ঘটনা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) প্রতিদিনই চোখে পড়ছে। এর কারণ হিসেবে কেউ কেউ জবি শহীদ মিনারের বিশাল আকৃতিকে দায়ী করছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, শহীদ মিনারটির মূল কাঠামোর ভেতরে একটি মোড়া সদৃশ আড়াআড়ি মঞ্চের মতো থাকায় কেউ কেউ এটাকে শহীদ মিনার নয় বরং অবসরে বসে থাকার একটি স্থাপত্য মনে করছেন। ফলে প্রায়ই তরুণ-তরুণীরা সেখানে পা তুলে খোশগল্পে মেতে উঠছেন। বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা জুতা পায়েই শহীদ মিনারে বসে আড্ডা দিচ্ছেন। শহীদ মিনারের সামনে ও পেছনে দুই দিকেই বড় বড় গাছের ছায়া একে আরও আড্ডার স্থানে পরিণত করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে জুতা পায়ে আড্ডা দেওয়ার সময় তাদের কাছে এর কারণ জানতে চাইলে তারা বলেন, আমরা জানতামই না যে এটা শহীদ মিনার। এ আকৃতির শহীদ মিনার এর আগে কোথাও দেখিনি। কোথাও এ সংক্রান্ত কোনো লেখাও পাইনি। তাছাড়া সবাইকে দেখছি জুতা পায়ে দিয়েই উঠছে। তাই আমরাও একই কাজ করেছি।
বহিরাগত এক নারীকে শহীদ মিনারের উপরে জুতা পায়ে বসে থাকার সময় তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি বুঝতে পারিনি এটা শহীদ মিনার। গাছের নিচে সুন্দরভাবে এমন স্থাপত্য যে শহীদ মিনার হতে পারে তা আমার জানা ছিল না।
গবেষকরা বলছেন, বিশ্বের কোনো ঐতিহাসিক বা স্থাপত্য নিদর্শন গাছের নিচে থাকার কথা নয়। এসব স্থাপত্য হবে খোলা আকাশের নিচে, সম্পূর্ণ ফাঁকা কোনো জায়গায়।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবি, শহীদ মিনারটির ঠিক সামনেই একটি আমগাছ এমনভাবে মাথা চারা দিয়ে উঠেছে, ক্যাম্পাসের বাইরের কেউ বুঝতেই পারে না যে এখানে শহীদ মিনার আছে। শহীদ মিনারটিকে গাছের আড়াল থেকে মুক্ত করতে প্রশাসনকে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
শহীদ মিনার নিয়ে এমন অবস্থার কথা জানতে চাইলে জবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আমি যেটা জানি, কোনো নিদর্শনের সামনে এভাবে বড় আকারের গাছ থাকতে পারে না। এগুলো সংস্কার করা প্রয়োজন।
শহীদ মিনারটি স্থানান্তর করার বিষয়ে তিনি বলেন, আপাতত এখানে কোনো শহীদ মিনার করা সম্ভব না। নতুন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার কেরানীগঞ্জের নতুন ক্যাম্পাসে হবে বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ২০০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৮
কেডি/আরআর