রোববার (২৫ মার্চ) সচিবালয়ে জাতীয় মনিটরিং এবং আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় তিনি এ কথা জানান। আসন্ন এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা সুষ্ঠু, নকলমুক্ত ও ইতিবাচক পরিবেশে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
সচিব বলেন, ‘পরীক্ষার ২৫ মিনিট আগে প্রশ্নের সেট নির্ধারিত হবে, লটারির মাধ্যমে ঢাকা বোর্ড সেট নির্ধারণ করবে। ’
তার দাবি, প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে অন্যের অপরাধের জন্য বিনা কারণে বিনা অন্যায়ে মন্ত্রণালয়কে দোষারোপ করা হয়েছে, যা দুঃখজনক, অন্য কেউ পরীক্ষা নিলেও এর চেয়ে ভালোভাবে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হবে না।
সচিব আরও দাবি করেন, সদ্যসমাপ্ত এসএসসি পরীক্ষায় যেসব প্রশ্নফাঁস হয়েছে তাতে খুব কম সংখ্যক শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
গড়ে সাড়ে ৭ শতাংশ নম্বরের প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে দাবি করে সোহরাব হোসাইন বলেন, ১৭ পরীক্ষার মধ্যে ১২টিতে প্রশ্নফাঁস হয়েছে, তবে তা এমসিকিউ (নৈর্ব্যক্তিক) অংশ। রচনামূলক ৭০ নম্বর ফাঁস হয়নি।
সভায় আসন্ন এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানে গৃহীত বিভিন্ন ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা হয়। প্রশ্নপত্র বিতরণ, সংরক্ষণ ও পরীক্ষা গ্রহণের সার্বিক প্রস্তুতি এবং প্রশ্নপত্র ফাঁসের গুজব ছড়ানো রোধ, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্ন সরবরাহকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়াসহ সার্বিক বিষয়েও কথা হয়।
পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে শিক্ষক, অভিভাবক ও গণমাধ্যমসহ সবার সহযোগিতা কামনা করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমাদের সন্তান তথা ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যেন বিপথগামী না হয়, সেজন্য সবাইকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। অভিভাবকদের আরও সচেতন হতে হবে।
নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, প্রশ্নের অনেকগুলো সেট ছাপা হবে। কতো সেট প্রশ্ন ছাপা হবে কেউ জানবে না। সব শিক্ষার্থীকে পরীক্ষা শুরুর আধঘণ্টা আগে অবশ্যই তাদের নিজ নিজ আসনে বসতে হবে। ৩০ মিনিট আগে নিজ নিজ আসনে বসা বাধ্যতামূলক। অনিবার্য কারণে কেউ দেরিতে আসলে রেজিস্টারে তার নাম-ঠিকানা, রোল নম্বর নিবন্ধন করে পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকতে হবে।
শিক্ষামন্ত্রী বিগত সময়ের প্রশ্নফাঁসকে ‘পরিকল্পিত’ অভিহিত করে বলেন, প্রশ্ন ফাঁস বা ফাঁসের গুজবের কার্যক্রম দেখে প্রতীয়মান হয়, তাদের লক্ষ্য সরকার, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বর্তমান ব্যবস্থাকে বিতর্কিত করা, এর মধ্যে পরিকল্পিত উদ্দেশ্য রয়েছে।
সভায় জানানো হয়, আগামী ২ এপ্রিল পরীক্ষা শুরু হয়ে ১৪ মে পর্যন্ত পরীক্ষা চলবে। ৩০ দিন পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে এবং এর ব্যাপ্তিকাল ৪৩ দিন। সব বোর্ডে অভিন্ন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। আটটি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, একটি কারিগরি শিক্ষা বোর্ড ও একটি মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের মাধ্যমে পরীক্ষা পরিচালিত হবে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন সভায় আরও জানান, পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
সভায় কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলমগীর, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর মাহাবুবুর রহমান, বিভিন্ন বোর্ডের চেয়ারম্যান, মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, বিটিআরসি, পুলিশ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৭ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০১৮
এসই/এইচএ/