পাকা ভবন না থাকায় অধিকাংশ বিদ্যালয়ে পাঠদান চলছে জরাজীর্ণ কাঠামোর মধ্যেই। ঝড়-বৃষ্টিতে চরম বিপাকে পড়তে হয় এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের।
শিবচর উপজেলা শিক্ষা অফিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরেই প্রধান শিক্ষকের পদে নিয়োগ বন্ধ থাকায় অধিকাংশ বিদ্যালয়ে শূন্য রয়েছে এ পদটি। ভারপ্রাপ্তদের দিয়ে চালানো হচ্ছে এ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এছাড়াও ৬৬টি পদ শূন্য রয়েছে সহকারী শিক্ষকের। ফলে মানসম্মত শিক্ষাদান থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শিবচর উপজেলার পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁ নদের চরাঞ্চলের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর অবস্থা আরো নাজুক। যোগাযোগ ব্যবস্থা দুর্গম হওয়ায় উপজেলা শহর থেকে ওই সব চরাঞ্চলে গিয়ে পাঠদানে অনীহা বেশিরভাগ শিক্ষকের। ফলে চরাঞ্চলের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকের অধিকাংশ পদ শূন্যই থাকছে সারা বছর। আর এতে মানসম্মত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে চরাঞ্চলের শিশুরা। উপজেলার চর জানাজাত, সন্যাসীরচর, কাঁঠালবাড়ী, বন্দোরখোলা এলাকার অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দেখা গেছে এ চিত্র।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলার চরজানাজাত কাঁঠালবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. শাহিন মিয়া জানান, গত সাত বছর ধরে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। আমাকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। বর্তমানে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২৪০ জন। বিদ্যালয়ে প্রধান ও সহকারী শিক্ষকসহ মোট ৫টি পদ থাকলেও মাত্র ২জন শিক্ষক দিয়ে চলছে পাঠদান।
চরজানাজাত ইউনিয়নের পূর্বখাস বন্দরখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সালমা জাহান বলেন, পদ্মা নদীর ভাঙনে দুই বছর আগে বিদ্যালয়টি ভেঙে গেছে। এর পর থেকে ১টি টিনের ঘরে পাঠদান কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। শিক্ষার্থী রয়েছে ১৫০ জন। শিক্ষকের ৫টি পদ থাকলেও রয়েছে মাত্র ৩ জন।
তিনি আরো বলেন, এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে জানিয়েও কোনো সুরাহা পাচ্ছিনা।
উপজেলার তারপাসা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মোর্সেদুজ্জামান জানান, বর্তমানে বিদ্যালয়ে তিনজন শিক্ষক রয়েছে। এর মধ্যে একজন মাতৃত্বকালীন ছুটিতে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, শিক্ষক স্বল্পতার কারণে স্কুলের দপ্তরি দিয়েও ক্লাশ নেওয়া হয়।
শিবচর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান মিয়া বলেন, শিক্ষক স্বল্পতা নিয়ে ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করেছি। কিছুদিনের মধ্যে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে। তখন এ সংকট কেটে যাবে। এছাড়া লেখাপড়ার মান বৃদ্ধিতে আমরা স্কুলগুলোকে নিয়মিত পর্যবেক্ষণে রাখি। ’
বাংলাদেশ সময়: ০৯০৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০১৮
আরএ