সোমবার (৫ নভেম্বর) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রিজেন্ট বোর্ডের জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। মঙ্গলবার সকাল ১১টার মধ্যে সব ছাত্রছাত্রীকে হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ বিভাগের সহকারী পরিচালক ফারুক হোসেন চৌধুরী এসব তথ্য জানিয়েছেন।
>>>আরো পড়ুন...পাবিপ্রবিতে ভিসি অবরুদ্ধ, প্রশাসনিক ভবনে তালা
সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ ছাত্ররা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ছয় দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য আন্দোলন করে আসছেন। বার বার আশ্বাস দিলেও গত তিন/চার মাসেও কর্তৃপক্ষ দাবিগুলো মেনে নেয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের খেয়াল খুশি মতো ক্যাম্পাস পরিচালনা করছেন। ভিসি স্যার জেলহত্যা দিবসের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ দিনে রাজশাহীতে তিন/চারটি গাড়িতে কর্মকর্তা ও প্রশাসনের লোকজনকে নিয়ে দায়সারাভাবে দিবস পালন করেন। এতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা দিবসটির তাৎপর্য সম্পর্কে জানতে ব্যর্থ হলেও সেদিকে তার কোনো খেয়াল নেই। তিনি একজন অযোগ্য ভিসি, প্রশাসন চালানোর মতো দক্ষতা নেই, তাই ভিসি স্যারসহ সব প্রশাসনিক পদধারীদের পদত্যাগ দাবি করা হচ্ছে।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো- ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষসহ পরবর্তী সব ব্যাচের অর্ডিন্যান্সের আওতাভুক্ত করা, হলের ডাইনিংয়ের খাবার উন্নয়নের জন্য ভর্তুকি প্রদান, ক্লাসরুম ও চেয়ার সংকট দূর করা, পরিবহন সংকট নিরসন, ক্যাম্পাসে ওয়াইফাই চালু এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন।
এসব দাবিতে সোমবার সকাল ১১টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে ভাইস চ্যান্সেলরকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে ভিসি প্রশাসনিক ভবন থেকে বের হয়ে বাসভবনের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাকে ধাওয়া করে লাঞ্ছিত করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। পরে দৌড়ে তিনি তার বাসভবনে আশ্রয় নেন। তারা ভিসির বাসভবনও অবরুদ্ধ করে রাখেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা ভিসিকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল ও জুতা ছেড়েন বলেও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবাইদুল হক জানান, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের বিষয়টি জানানো হলে ক্যাম্পাসে পুলিশ পাঠানো হয়। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি আওয়াল কবির জয় বলেন, বিষয়টি উদ্বেগের ও অপ্রত্যাশিত। আশা করি, ভিসি স্যার দ্রুত এ অবস্থা নিরসনের উদ্যোগ নেবেন।
এদিকে, পাবিপ্রবি’র চলতি শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষ ভর্তি পরীক্ষা যথারীতি ১৬ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে এবং অফিস খোলা থাকবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
অন্যদিকে, মঙ্গলবার সকাল ৯টার মধ্যে বঙ্গবন্ধু হলের ও সকাল ১১টার মধ্যে শেখ হাসিনা হলের সব আবাসিক শিক্ষার্থীকে হল ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
পাবনা সদর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার ইবনে মিজান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ছাত্ররা তাদের দাবি নিয়ে আন্দোলন করছেন। ভিসি স্যারের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে, তিনি বৈঠকের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করবেন। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এদিকে, ছাত্র বহিষ্কারের কথা ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়ার পর শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক বন্ধ করে ভিসি ও প্রক্টরসহ সব প্রশাসনিক কর্মকর্তার অপসারণ দাবিতে বিক্ষোভ করছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৫, ২০১৮
এসআই