ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

গ্রাজ্যুয়েটদের কেরানি হওয়ার স্বপ্ন দেখলে চলবে না

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩১৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০১৯
গ্রাজ্যুয়েটদের কেরানি হওয়ার স্বপ্ন দেখলে চলবে না বক্তব্য রাখছেন ড. আতিউর রহমান

খুলনা: আমাদের গ্রাজ্যুয়েটদের শুধু একজন কেরানি হওয়ার স্বপ্ন দেখলে চলবে না, তাদের বড় স্বপ্ন দেখতে হবে। উদ্যোক্তা হতে হবে এবং নতুন নতুন উদ্ভাবন করতে হবে।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে প্রথম বর্ষে ভর্তি হওয়া নবীন শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠানে ওরিয়েন্টেশন বক্তা হিসেবে একথা বলেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান।

বৃহস্পতিবার (১৭ জানুয়ারি) দুপুরে খুবির উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামানের সভাপতিত্বে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের মুক্তমঞ্চে এ ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠিত হয়।



ড. আতিউর রহমান আরও বলেন, দেশে এখন রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও অর্থনৈতিক গতিশীলতা তৈরি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ বঙ্গবন্ধুর দেখা স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার পথেই এগিয়ে যাচ্ছে। এখন আমাদের অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতি কমছে। রিজার্ভ উল্লেখযোগ্য পর্যায়ে বেড়েছে। বেড়েছে মাথাপিছু আয়। জীবনমান বেড়েছে।

‘এখন ভোগের বৈষম্য হ্রাস করতে হবে। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার ক্রুটিগুলো সারিয়ে তুলে শিক্ষাকে প্রাণবন্ত করতে হবে। অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনে সৃষ্ট প্রবল সম্ভাবনা কাজে লাগাতে শিক্ষাক্ষেত্রে উদ্ভাবনা ও সৃজনশীলতার উপর জোর দিতে হবে। ’

এ প্রসঙ্গে তিনি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শিক্ষাভাবনাসহ বিভিন্ন উক্তি ও উদ্বৃতি বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে যে শিক্ষার সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে তা অব্যাহত থাকলে এ বিশ্ববিদ্যালয় একদিন অক্সফোর্ড ক্যামব্রিজে পরিণত হবে।  

এ লক্ষ্যে তিনি এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য সৃষ্টি করে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. প্রাণ গোপাল দত্ত।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর সাধন রঞ্জন ঘোষ, সমাজ বিজ্ঞান স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. শাহনেওয়াজ নাজিমুদ্দিন আহমেদ, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস, ছাত্রবিষয়ক পরিচালক প্রফেসর মো. শরীফ হাসান লিমন এসময় বক্তব্য রাখেন।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক চারুকলা স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. মো. মনিরুল ইসলাম। উপাচার্য প্রথাগতভাবে নবীন শিক্ষার্থীদের শপথবাক্য পাঠ করান। পরে স্কুলগুলোর ডিন ও ইনস্টিটিউটের পরিচালক নিজ নিজ স্কুল ও ইনস্টিটিউটের নবাগত শিক্ষার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেন।

বিশেষ বক্তা ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত বলেন, শিক্ষা ছাড়া জীবন অচল। জীবনের সমস্ত পরতে পরতে রয়েছে শিক্ষা। শিক্ষা নিতে গিয়ে অথবা শিক্ষা নিয়ে আমরা অনেকেই অনেক পেশায় শপথ গ্রহণ করি। কিন্তু শপথ রক্ষা করে চলে কয়জন। আসলে নৈতিকতার জায়গাটাই আসল।  

শিক্ষার্থীদের তিনি বাবা-মা ও শিক্ষকদের প্রতি আজীবন শ্রদ্ধাশীল থাকার পরামর্শ দিয়ে বলেন, তাদের কাছ থেকে যা পাওয়া যায় তা আর কোথা থেকে পাওয়া যায় না।

‘মোবাইল প্রযুক্তির অপব্যবহার, অতিব্যবহারে যুবসমাজ আসক্ত হয়ে পড়ছে। বই থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। কিন্তু বই পড়ার আনন্দ আর বই পড়ে যে শিক্ষা বা জ্ঞানের প্রসার ঘটে তা অন্য পন্থায় পাওয়া কঠিন। ’ 

তিনি আরও বলেন, একজন চিকিৎসক হিসেবে এখন দেখতে পাচ্ছি কিশোর বয়সী বা নবীন যুবক-যুবতীদেরও শ্রবণ সমস্যা বাড়ছে। এটা মোবাইলে অতিরিক্ত সময় কথা বলার কুফল। মোবাইলে একটানা কথা না বলে মাত্র বিশ সেকেন্ডে প্রয়োজনীয় কথা সারা উত্তম।  

সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান অনুষ্ঠানে যে দু’জন খ্যাতিমান ব্যক্তিত্ব তাদের জ্ঞানগর্ভ বক্তব্যে শিক্ষার্থীদের উপদেশমূলক নানা তথ্য, তত্ত্ব ও শিক্ষণীয় বিষয় তুলে ধরেছেন সেগুলো আত্মস্থ করে তাদের জীবন গঠন ও ভবিষ্যৎ লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০১৯
এমআরএম/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।