ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

ভিসির সঙ্গে দ্বন্দ্বে পাবিপ্রবির প্রো-ভিসির পদত্যাগ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০২২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০১৯
ভিসির সঙ্গে দ্বন্দ্বে পাবিপ্রবির প্রো-ভিসির পদত্যাগ প্রফেসর ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম। ছবি-সংগৃহীত

পাবনা: পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) ভাইস চ্যান্সেলরের (ভিসি) সঙ্গে অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরে পদত্যাগ করেছেন প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রো-ভিসি) প্রফেসর ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম। 

বুধবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১২টার দিকে তিনি এ আবেদন করেন। সম্প্রতি কয়েকটি উল্লেখযোগ্য ঘটনাকে কেন্দ্র করেই তিনি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

 

পদত্যাগ চাওয়া প্রো-ভিসি ড. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ভাইস চ্যান্সেলর স্যার সকালে এক সিদ্ধান্ত নেন, বিকেলে তিনি আবার সেই সিদ্ধান্ত পাল্টে দেন। বর্তমানে পাবিপ্রবিতে কাজের উপযুক্ত পরিবেশ নেই। এ অবস্থায় আমার পক্ষে দায়িত্ব পালন করা সম্ভব নয়।

তিনি আরো উল্লেখ করেন, কয়েকদিন আগে রাতে মদ্যপ অবস্থায় এক যুবক শহরের রাধানগর মহল্লার একটি ছাত্রীনিবাসে গিয়ে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে হাত ধরে টানাটানি করেন এবং শ্লীলতাহানির চেষ্টা চালান। এ ঘটনার প্রতিবাদে পরদিন ক্যাম্পাসে বিক্ষুব্ধ সহপাঠীরা বিক্ষোভ করে সব শিক্ষার্থীর নিরাপত্তার দাবি জানান। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা পাবনা-নগরবাড়ি মহাসড়ক অবরোধ করেন এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সুষ্ঠু দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ দাবি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পদত্যাগও দাবি করেন। ভাইস চ্যান্সেলর স্যার এ বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকে গত ১০ মাসে সুষ্ঠু পরিবেশে একাধারে এক সপ্তাহও বিশ্ববিদ্যালয় চালাতে পারেননি। তার ব্যর্থতার দায়ভার আমি নেবো কেনো? প্রতিনিয়ত বিশ্ববিদ্যালয়ে একের পর এক ঝামেলা লেগেই থাকে। এর আগে জরুরি রিজেন্ট বোর্ডের সভা করে ১০ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের পর ২০ দিনের মাথায় আবারো বোর্ড সভা করে তা প্রত্যাহার করে নেন। ফলে চেইন অব কমান্ড একেবারে ভেঙ্গে পরে। ডেপুটি রেজিস্ট্রার প্রো-ভিসির আদেশ নির্দেশ অমান্য করেন, তাই আমি মনে করি, এখানে একদমই কাজের সুষ্ঠু পরিবেশ নেই।

ডেপুটি রেজিস্ট্রার বিজন কুমার ভ্রহ্ম বলেন, আমার কোনো ক্ষমতা নেই। এখানে ভাইস চ্যান্সেলর স্যার সর্বোচ্চ ক্ষমতাশালী। তিনি যে সিদ্ধান্ত নেবেন, তার বাইরে আমি যেতে পারি না।  

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি আওয়াল কবির জয় বলেন, প্রো-ভিসি স্যারের যাওয়ার জায়গা আছে বলেই তিনি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমাদের অন্য কোথাও সুযোগ থাকলে আমি নিজেও এখানে থাকতাম না। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নির্বাচন নিয়ে তিনি হস্তক্ষেপ করার কারণে নির্বাচন স্থগিত করে রেখেছেন নির্বাচন কমিশন। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থা অত্যন্ত করুণ।
 
রিজেন্ট বোর্ড সদস্য ড. আব্দুল আলীম বলেন, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে নানাবিধ অস্থিরতা বিরাজ করছে। প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর স্যারের পদত্যাগ এরই সর্বশেষ বহিঃপ্রকাশ।  

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ড. রোস্তম আলী ফরাজী বলেন, সম্প্রতি একটি বিষয় নিয়ে ডেপুটি রেজিস্ট্রার বিজন কুমার ভ্রহ্ম’র সঙ্গে একটু ঝামেলা হয়েছে, এটি বসেই সমাধান করা যেতো। এটি পদত্যাগ করার মতো কিছু নয়। আমি তাকে এমন সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে বলেছি।  
 
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল ইসলাম চার বছরের জন্য ২০১৬ সালের ১৬ অক্টোবর পাবিপ্রবিতে প্রো-ভিসি হিসেবে যোগদান করেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৯১২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৬, ২০১৯
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।