শুধু টিএসসি নয়; কার্জন হল, কলা ভবন এলাকা, মল চত্বর, সিনেট ভবন, সবুজ চত্বরে এভাবে ইফতার আয়োজনের মাধ্যমে প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে গোটা ঢাবি ক্যাম্পাস।
বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো রমজানের ছুটি শুরু না হওয়ায় অধিকাংশ শিক্ষার্থী হলেই আছেন।
ফিন্যান্স বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র ইকবাল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, পরিবারের সঙ্গে ইফতার করার মতো আনন্দ আর নেই। ক্যাম্পাসে সে সুযোগ নেই। তাই বন্ধুরা মিলেই ইফতারের আয়োজন করি। পরিকল্পনা করে কাজ ভাগ করি। কেউ ছোলা মুড়ি, কেউ ফলমূল নিয়ে আসে। সবাই মিলে ক্যাম্পাস জীবনের এক অসাধারণ আয়োজনের অংশ হই।
ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন হলের পাশাপাশি টিএসসি এলাকা, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনেও বিক্রি হচ্ছে ইফতারের বিভিন্ন আইটেম। খাবারগুলো সাজিয়ে রাখা হয়েছে আকর্ষণীয়ভাবে। এসবের মধ্যে রয়েছে ছোলা, পেঁয়াজু, বেগুনি, চপ, জিলাপির মতো সুস্বাদু খাবার। শসা, পেঁয়াজ, ধনিয়া পাতা, কাঁচা মরিচ কেটে প্যাকেট করে রেখেছেন বিক্রেতারা। শিক্ষার্থীরা পছন্দমতো কিনে নিচ্ছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারদা সূর্য সেন হলের মাঠে দেখা গেল ২০১৪-১৫ সেশনের শিক্ষার্থীদের একটি দল।
দলের একজন মাজহারুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ইফতার বিভিন্ন জায়গায় করা হয়। কিন্তু হলের বন্ধুদের সঙ্গে ইফতার করার মধ্যে একটা আনন্দ আছে। কারণ, গণরুম থেকে পাঁচ বছর আমরা একসঙ্গে আছি।
তাদের আরেকজন চিশতী হোসাইন বলেন, আধুনিক সমাজে পরিবার শুধু রক্তের সম্পর্কে হয় না, বরং কাছের মানুষদের নিয়েই পরিবার। সাংসারিক পরিবার থেকে অনেক দূরে, এ হল পরিবারে একসঙ্গে ইফতার আমাদের মনে প্রশান্তি এনে দেয়।
কলা ভবনের পাশে বসে ইফতার করছিলেন মাহবুবা স্মৃতি। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমি বেশিরভাগ ইফতার হলের রুমমেটদের সঙ্গেই করি। কয়েকদিন বন্ধু আমার সংগঠনের আয়োজনেও অংশ নিয়েছি।
টিএসসিতে সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিয়ে ইফতার করছিলেন ছাত্র মুক্তিজোটের রাশেদ ইসলাম। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ইফতার আয়োজনের মধ্য দিয়ে নিজেদের বন্ধন দৃঢ় করার সুযোগ পাই। তবে ঢাবি ক্যাম্পাসে ইফতার আয়োজনে বড় যে পরিবর্তন এসেছে, তা হলো সচেতনতা।
তিনি বলেন, প্রতিবছর ইফতার আয়োজনের পর ময়লা রেখে যাওয়ায় টিএসসি আবর্জনায় ভরে যেত। সন্ধ্যার আগের সুন্দর জায়গাটা ইফতারের পর রীতিমতো ডাস্টবিনে পরিণত হতো। এসব পরিষ্কার করতে টিএসসির কর্মচারীদের অনেক কষ্ট হতো। এবার পর্যাপ্তসংখ্যক ডাস্টবিনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। টিএসসিকে পরিচ্ছন্ন রাখতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সবাইকে আহ্বান জানানো হচ্ছে। এ কারণে প্রথম ইফতারের পর টিএসসি এলাকায় ময়লা দেখা যায়নি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রোভার সুমাইয়া সিদ্দিকা বাংলানিউজকে বলেন, একটু সচেতন হলে ক্যাম্পাস নিজেরাই পরিচ্ছন্ন রাখতে পারি। অন্য বছরের তুলনায় এবার শিক্ষার্থীদের সচেতনতা বেশ প্রশংসনীয়।
বাংলাদেশ সময়: ২০০৪ ঘণ্টা, মে ০৮, ২০১৯
এসকেবি/একে