রোববার (২৩ জুন) বিকেলে ঢাবির উচ্চতর মানবিক ও সামাজিক বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রের মিলনায়তনে নিজের জন্মদিন উপলক্ষে আত্মজীবনীমূলক বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন। সমাজ-রূপান্তর অধ্যয়ন কেন্দ্র এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, আমাকে যখন ভাইস চ্যান্সেলর হওয়ার প্রস্তাব করা হয় তখন তা আমি তিন কারণে ফিরিয়ে দিয়েছি। কারণ আমি এরশাদের আমলে ভিসি হতে পারি নাই। আমার ছাত্র জিয়াউদ্দীন বাবুল তখন ঢাবির কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সেক্রেটারি ছিল, তিনি আমার জন্য সুপারিশ করার কথা বলেন। তখন আমি তাকে বলি তুমি যদি আমার ছাত্র হয়ে থাকো তাহলে এ কাজ করো না। ডিজিএফআই ও স্পেশাল ব্রাঞ্চের কর্মকর্তারা বলে আমার নাম সবার উপরে দেওয়া হয়েছে।
দ্বিতীয়ত আমি যখন ডিন ছিলাম তখন উপলব্ধি হয়েছে প্রশাসন আমার কাজ নয়। কারণ নানা ধরনের প্রমোশন, নিয়োগের সুপারিশ নিয়ে সবাই আসতো। যার কারণে আমি বাসায় থাকতাম। কিন্তু তখন বিচ্ছিন্ন মনে হতো। ভিসি হলে আমি এই বিচ্ছিন্নতা মেনে নিতে পারবো না।
তৃতীয়ত আমার ছাত্রীরা হলে গাদাগাদি করে থাকবে, ছাত্ররা গেস্টরুমে নির্যাতনের শিকার হবে আর আমি ভিসির বড় বাসায় থাকবো সেটা মেনে নিতে পারবো না। পরে আমার এক বন্ধু সামরিক বাহিনীতে চাকরি করতেন তাকে দিয়ে ভিসির দায়িত্ব না নেওয়ার প্রস্তাব জানিয়েছি।
বুদ্ধিজীবী হত্যার সময় বেঁচে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে ঢাবির ইমেরিটাস অধ্যাপক বলেন, বুদ্ধিজীবীদের তালিকায় আমারও নাম ছিল। কিন্তু ঠিকানা ছিল না থাকলে হয়তো ১৪ ডিসেম্বর আমিও মারা যেতে পারতাম।
তিনি বলেন, সারাজীবন আমাকে একটি অশুভ শক্তি তাড়া করে বেড়িয়েছে। এই অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে যে আন্দোলন তার সঙ্গে আমি সবসময় থাকতে চেয়েছি। তাই বিভিন্ন সামাজিক-রাজনৈতিক আন্দোলনে নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছি।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সামাজিক-রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে বিশিষ্ট এ শিক্ষাবিদকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৩ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০১৯
এসকেবি/এএটি