বিদ্যালয়টির শিক্ষকেরা বাংলানিউজকে জানান, কোনো শিশুকে জোর করা হয় না, যারা স্ব-ইচ্ছায় নামাজ শিখতে চায়, তাদের নিয়েই জামাতে নামাজ আদায় করা হয়। এছাড়া ক্লাসের আলোচনায় শিশুদের নৈতিক শিক্ষাও দেওয়া হয়।
শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সরেজমিনে নলভাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, বেশ কয়েকটি শিশু জামাতে দাঁড়িয়ে জোহরের নামাজ আদায় করছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহফিজুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাঠ্যসূচিতে ইসলাম শিক্ষা বিষয়টি রয়েছে, সেখানে নামাজ শিক্ষা নামে একটি অধ্যায় আছে। এই অধ্যায়টি পড়ানোর সময় মনে হয়েছিল, বাচ্চাদের পাঠদানের পাশাপাশি নামাজ কীভাবে পড়তে হয় সেটা বাস্তবে শেখাতে পারলে আরও ভালো হয়। একথা চিন্তা করে তিন বছর আগে থেকেই এভাবে শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে। শিক্ষকেরা বাচ্চাদের সঙ্গেই জোহরের নামাজ আদায় করেন। এভাবে কিছুদিন শেখানোর পর তারা বিষয়গুলো শিখে যায়। নামাজ শেখানোর এ প্রক্রিয়া বেশ কিছুদিন বন্ধ থাকার পর গত সপ্তাহ থেকে আবারও শুরু করা হয়েছে। এখন স্কুল মাঠে ত্রিপল বিছিয়ে শিশুদের নামাজ শেখানো হচ্ছে।
নামাজ আদায়কারী পঞ্চম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থী বাংলানিউজকে বলেন, স্যারেরা স্কুলে নামাজ পড়া শিখিয়ে দেন। এখন বাড়িতে গিয়ে একা একাই নামাজ পড়তে পারি।
এ বিষয়ে শুকুর আলী নামের এক অভিভাবক বাংলানিউজকে বলেন, নামাজ শেখা খুবই ভালো কাজ। আমরা অনেকেই ছোটবেলায় নামাজ শিখি না। পরে বড় হয়েও ভুল ভাবে নামাজ আদায় করি। এ জন্য শিক্ষকেরা বাচ্চাদের এখনই নামাজ শিক্ষা দিচ্ছেন, এটা অবশ্যই ভালো উদ্যোগ।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আব্দুল মোতালিব বাংলানিউজকে বলেন, শিক্ষকদের সঙ্গে বাচ্চারা নামাজ পড়ছে, এতে আমরা খুবই খুশি। মসজিদ দূরে হলেও শিক্ষকেরা বিদ্যালয়ের মাঠে বাচ্চাদের নিয়ে নামাজ আদায় করেন। এটা চমৎকার উদ্যোগ।
প্রধান শিক্ষক মাহফিজুর রহমান জানান, ১৯৪৪ সালে ৯৯ শতক জমির ওপর নলভাঙ্গা বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। পরে, ১৯৭৩ সালে সেটি সরকারি করা হয়। বিদ্যালয়ে বর্তমানে পাঁচজন শিক্ষক রয়েছেন। এর মধ্যে একজন প্রশিক্ষণে আছেন, বাকি চারজন নিয়মিত ক্লাস নিচ্ছেন। এদের মধ্যে দু’জন নারী-দু’জন পুরুষ। বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে ১৭৩ জন ছেলে-মেয়ে।
তিনি জানান, বিদ্যালয়ে কক্ষের সংখ্যা খুবই কম। মাত্র তিনটি শ্রেণীকক্ষ ও একটি ছোট অফিস-কক্ষ নিয়ে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম চলছে। নতুন ভবনের জন্য অনেকবার চেষ্টা করা হয়েছে, কিন্তু এখনো মেলেনি। প্রতিষ্ঠানটিতে নতুন ভবনের পাশাপাশি নিরাপত্তার জন্য সীমানা প্রাচীর করা প্রয়োজন বলেও জানান প্রধান শিক্ষক।
এ বিষয়ে জানার জন্য কালীগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সেলিনা আক্তার বানুর কাছে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
বাংলাদেশ সময়: ১১০৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০১৯
একে