ছড়িয়ে পড়া শ্বেতপত্রে দেখা যায়, এর প্রচারক হিসেবে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার শাবিপ্রবির শিক্ষক-কর্মকর্তাবৃন্দ’ উল্লেখ করা হয়েছে। শ্বেতপত্রের দ্বিতীয় কিস্তি প্রক্রিয়াধীন বলেও হুমকি দেওয়া হয় শেষদিকে।
২৪ পৃষ্ঠার এ শ্বেতপত্রে উপাচার্যকে ‘দুর্নীতিবাজ’ আখ্যায়িত করে বিভিন্ন অভিযোগ আনা হয়; যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- আর্থিক অনিয়ম, স্বৈরাচারী আচরণ, হুমকি, স্বজনপ্রীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, ক্ষমতার অপব্যবহার প্রভৃতি।
শ্বেতপত্রে উল্লেখ করা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে শাবিপ্রবির অধিক যোগ্যতাসম্পন্ন প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় স্থান এবং সর্বোচ্চ সিজিপিএপ্রাপ্ত (৩.৮৪) শিক্ষার্থীকে নিয়োগ না দিয়ে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৯তম, ৫০তম, ৬৩তম, ৭১তম হওয়া শিক্ষার্থীকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ইস্যুতে ছাত্রলীগের মেধাবী শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাস থেকে নানা ইস্যুতে বহিষ্কার করারও অভিযোগ আনা হয়।
শ্বেতপত্রে উপাচার্যের বিরুদ্ধে একাডেমিক কাউন্সিল মিটিং ও সিন্ডিকেটে স্বৈরাচারী আচরণের অভিযোগও করা হয়।
এতে বলা হয়, উপাচার্য দু’বছর মেয়াদ শেষ হওয়া সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয় অবকাঠামোর দৃশ্যমান কোনো উন্নতি করতে পারেননি।
এছাড়া, নজিরবিহীনভাবে বিভিন্ন বিচারপ্রার্থীকে সংখ্যালঘু হওয়ায় বিচারের পরিবর্তে শাস্তি দেওয়া এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন, জোবাইক সেবার নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আত্মসাৎ করা, ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন অব ভাইস-চ্যান্সেলরের (আইসিভিসি) নামে অর্থ আত্মসাৎ করার অভিযোগও করা হয় শ্বেতপত্রে।
বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রারকে অপমান, প্রমোশন আপগ্রেডেশনে স্বজনপ্রীতির অভিযোগের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাক্ট ভায়োলেশন, সিটিং অ্যালাউন্স দ্বিগুণ করার মাধ্যমে তহবিল হাতিয়ে নেওয়ার অপকৌশল, পিএইচডি থিসিসের এক্সামিনার রিপোর্টের ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করার অভিযোগও দেখা যায় শ্বেতপত্রে।
অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ দ্বিতীয় মেয়াদে উপাচার্যের দায়িত্বে আসার কথাও ব্যাপকভাবে প্রচার করেন বলে উল্লেখ করা হয় শ্বেতপত্রে।
এ নিয়ে আলোচনার মধ্যে রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) সাংবাদিকদের কাছে বক্তব্য তুলে ধরেছেন উপাচার্য। তিনি বলেন, আমি মনে করি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক হাজার কোটি টাকার উন্নয়নকাজকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য মূলত এ শ্বেতপত্রটি প্রকাশ করা হয়েছে। একটি স্বার্থান্বেষী মহল আছে যারা চায় আমি যেন এ বিশ্ববিদ্যালয়ে না থাকি।
শিক্ষক নিয়োগে অভিযোগের বিষয়ে শাবিপ্রবি উপাচার্য বলেন, শিক্ষক নিয়োগে ভালো শিক্ষকের বিষয়ে আমি কোনো আপস করিনি। ছাত্রলীগের যে গ্রুপটি ধারাবাহিক বিশৃঙ্খলার জন্য দায়ী, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় নয়।
একাডেমিক কাউন্সিল মিটিং ও সিন্ডিকেটে আচরণের বিষয়ে উপাচার্য বলেন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সবার আছে। অভিযোগটি (স্বৈরাচারী আচরণ) পুরোপুরি বানোয়াট।
অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয়কে আমি হৃদয়ে লালন করি, এ বিশ্ববিদ্যালয়ে আমি থাকাকালে কোনো দুর্নীতি হতে দেবো না। এমনকি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরও কোনো স্বার্থ আমি লালন করি না। যারা এ গুজব ছড়ায় তারা হচ্ছে জ্ঞানপাপী।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০১৯
এইচএ/