সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদ প্রাঙ্গণে এ কর্মসূচি পালন করেন আন্দোলনকারীরা।
কর্মসূচিতে দর্শন বিভাগের অধ্যাপক আনোয়ারুল্লাহ ভূঁইয়া বলেন, ‘জাবি উপাচার্য যে অবস্থান নিয়েছেন তা তিনি সারাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘ভর্তি পরীক্ষা চলছে বলে আমরা নমনীয়ভাবে আমাদের কর্মসূচি পালন করছি। আমাদের নমনীয়তাকে দুর্বলতা ভাববেন না। আগামী ১ অক্টোবরের মধ্যে আপনি সসম্মানে পদত্যাগ না করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অচলাবস্থার দায় নিয়ে আপনি পদত্যাগে বাধ্য হবেন। ’
বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের জাবি শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক জয়নাল আবেদীন শিশির বলেন, ‘শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা আপানাকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করেছে। এই ভয়ে দিনের শেষ সময়ে লুকোচুরি করে পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শনে গেলেন। আর দুটো ছবি তুলে ঘোষণা করলেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভালোভাবে চলছে। আন্দোলনকারীরা আপনাকে সাতদিনের আল্টিমেটাম দিয়েছে। তিনদিন অতিবাহিত হওয়ার পরেও আপনার অবস্থান পরিষ্কার না করে ধৃষ্টতা প্রদর্শন করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এ ধৃষ্টতার উচিত জবাব দেবে। ’
কর্মসূচিতে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক সোহেল রানা, নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস, অধ্যাপক মির্জা তাসলিমা সুলতানা, দর্শন বিভাগের অধ্যাপক রায়হান রাইন, অধ্যাপক কামরুল আহসান, পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জামাল উদ্দিন রুনু, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক শামীমা সুলতানা, সহযোগী অধ্যাপক নাজমুল হাসান তালুকদার, অধ্যাপক তারেক রেজা প্রমুখ।
এছাড়া জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোট, ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ জাবি শাখার নেতা কর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতি ও অপরিকল্পনার অভিযোগ এনে তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। আন্দোলন চলা অবস্থায় চাপের মুখে গত ১২ সেপ্টেম্বর আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে বাধ্য হয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এসময় দু’টি দাবি মেনে নেয় প্রশাসন।
তবে দুর্নীতির বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবিটি অমীমাংসিত রেখেই শেষ হয় সেদিনের আলোচনা সভা। পরবর্তীতে ১৮ সেপ্টেম্বরে ফের আলোচনায় বসেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। কিন্তু আলোচনা সভা ফলপ্রসূ না হওয়ায় উপাচার্যকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা ও আগামী ১ অক্টোবরের মধ্যে পদত্যাগের দাবি জানান তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প থেকে ছাত্রলীগকে এক কোটি টাকা ভাগ করে দেওয়ার অভিযোগ তুলে আগামী ১ অক্টোবরের মধ্যে উপাচার্যকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগের আহ্বান জানানো হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৯
ওএইচ/