জানা যায়, ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে ক্রয়করা উত্তরপত্র অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। নতুন অর্থ বছরের (২০১৯-২০) তিন মাস পার হলেও টেন্ডার জটিলতায় এখনও কেনা হয়নি বিভিন্ন পরীক্ষার উত্তরপত্র।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বেশ কয়েকদিন ধরেই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দপ্তরে মিডটার্ম পরীক্ষার উত্তরপত্রের সংকট রয়েছে। বিভাগগুলোতে চাহিদা অনুযায়ী উত্তরপত্র সরবরাহ করা হয় না বলে জানান বেশ কয়েকটি বিভাগের শিক্ষক। তাদের অভিযোগ প্রায় প্রতিটি বিভাগেই ৬টি করে ব্যাচ চলছে। তাদের এক সেমিস্টারেই কমপক্ষে ৩৬০০ উত্তরপত্র দরকার শুধু মিডটার্ম পরীক্ষা নেওয়ার জন্য। কিন্তু এ উত্তরপত্র দেওয়া হয় ২০০ থেকে ৫০০ করে। যা নিয়মিত পরীক্ষা নেওয়ার ক্ষেত্রে বিঘ্ন সৃষ্টি করে। ফলে বাড়ে সেমিস্টারের সময়কাল এবং শিক্ষার্থীদের পড়তে হয় সেশনজটে।
এ দিকে গত ২৫ সেপ্টেম্বর (বুধবার) পূর্ব নির্ধারিত পরীক্ষা থাকায় মার্কেটিং বিভাগের ৮ম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা নিজেদের টাকায় দোকান থেকে খাতা কিনে পরীক্ষা দিয়েছেন। শুধু মার্কেটিং বিভাগেই নয় বেশ কয়েকটি বিভাগেই পরীক্ষার উত্তরপত্রের সংকটের কারণে নিয়মিত পরীক্ষা নিতে সমস্যায় পড়ছে বলে স্বীকার করছেন বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা। এ নিয়ে বেশ কয়েকজন শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদের বিভাগ থেকে বিভিন্ন ব্যাচের পরীক্ষার জন্য উত্তরপত্রের চাহিদা দেওয়া হলেও তারা সময়মতো তা পাচ্ছে না। পেলেও তা পর্যাপ্ত নয়। যার ফলে তাদের নিয়মিত মিডটার্ম পরীক্ষাগুলো নিতে অসুবিধা হচ্ছে। যা সেমিস্টার পরীক্ষায় প্রভাব ফেলে।
আইসিটি বিভাগের এক শিক্ষক অভিযোগ করে বলেন, আমাদের বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) একটি ব্যাচের মিডটার্ম পরীক্ষা ছিল কিন্তু উত্তরপত্রের অভাবে পরীক্ষাটি নিতে পারিনি। এমনিতেই আমাদের ক্লাসরুম সংকট তার মধ্যে আবার নিয়মিত পরীক্ষাগুলো নেওয়ায় এমন সমস্যা হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ নূরুল করিম চৌধুরী উত্তরপত্রের সংকটের কথা স্বীকার করে বলেন, নতুন অর্থবছরের জন্য বরাদ্দ উত্তরপত্র আমরা এখনও পাইনি। শুনেছি উত্তরপত্র ক্রয়ের টেন্ডার নিয়ে কোনো একটা সমস্যা হয়েছে। আমরা সাময়িক এ সমস্যা সমাধানের জন্য মিডটার্মের উত্তরপত্র মূদ্রণ করে বিভাগগুলোতে সরবরাহ করছি। তাই তাদের চাহিদা অনুযায়ী উত্তরপত্র দিতে পারছি না। তবে আমরা চেষ্টা করছি যেন কোনো পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে সমস্যা না হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. শামিমুল ইসলাম বলেন, আমি বেশ কয়েকদিন ধরে শুনছি যে বিশ্ববিদ্যালয়ে উত্তরপত্র সংকট রয়েছে। নতুন উত্তরপত্র ক্রয় প্রক্রিয়া নিয়ে একটু সমস্যা হওয়ায় সাময়িক অসুবিধা হচ্ছে। তাই বিভাগগুলো চাহিদা অনুযায়ী উত্তরপত্র পাচ্ছে না।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেন, আমাদের উত্তরপত্র সংকট রয়েছে। উত্তরপত্র ক্রয়ের টেন্ডার হয়েছিল সেখানে একটু সমস্যা হওয়ায় পুনরায় টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি আগামী ২/৩ দিনের মধ্যেই দেওয়া হবে। সাময়িক সমস্যা উত্তোরণের জন্য প্রতি সপ্তাহে ২৫ হাজার টাকার উত্তরপত্র এনে তা সরবরাহ করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ০১১৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০১৯
এসএইচ