ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

দুঃখপ্রকাশ করে ক্ষমা প্রার্থনা বুয়েট ভিসির

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৫৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০১৯
দুঃখপ্রকাশ করে ক্ষমা প্রার্থনা বুয়েট ভিসির শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বুয়েট উপাচার্যের বৈঠক/ছবি: জিএম মুজিবুর

বুয়েট থেকে: বাংলাদেশের প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আনুষ্ঠানিকভাবে দুঃখপ্রকাশ করে ক্ষমাপ্রার্থনা করেছেন উপাচার্য অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম।

শুক্রবার (১১ অক্টোবর) বুয়েট অডিটোরিয়ামে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় তিনি ক্ষমা চান।  

তিনি বলেন, আবরার আমার সন্তানের মতো ছিল।

তোমাদের যেমন কষ্ট লাগছে, তার মৃত্যুতে আমারও অনেক খারাপ লেগেছে। এটি আমি মেনে নিতে পারিনি। তার মৃত্যুতে দুঃখ তোমরা পেয়েছ, আমিও পেয়েছি। আমরা সবাই মর্মাহত। আমার কিছুটা ভুল হয়েছে, আমি তোমাদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।

বক্তব্যের শুরুতে তিনি বলেন, আবরার হত্যার জন্য আমরা মর্মাহত। আবরার আমাদের প্রিয় ছাত্র। আবরার তোমাদের ভাই। আমার সন্তান। আমি তোমাদের ১০ দফা দাবি গতকাল নীতিগতভাবে মেনে নেয়েছি।

আরও পড়ুন>>>ভর্তিপরীক্ষা আমাদের ইজ্জতের ব্যাপার, সহযোগিতা চাই: ভিসি 

শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী ফাহাদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অবরারের পরিবারের ক্ষতিপূরণের ব্যাপারে নোটিশের মাধ্যমে জানিয়ে দেবো। এজন্য যেভাবে কাজ করা দরকার আমরা করবো।

বুয়েট ভিসি বলেন, আমার জানা নেই এত দ্রুত সময়ের মধ্যে কোনো মামলায় এতজন আসামি আটক করা হয়েছে কিনা। আমি ওই ভোররাত থেকে কাজ করেছি। আমি আবরার হত্যার ব্যাপারে ডিআইজির সঙ্গে কথা বলেছি। এ হত্যায় আমি উদ্বিগ্ন ও মর্মাহত।

‘হত্যাকাণ্ডের পর পুলিশ আলামত নিয়ে গেছে। হত্যার আলামত নিয়ে যাওয়ার পর আমি তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তারা আমাদের আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করেছেন। আবরার তোমাদের ভাই আমার সন্তান। আমি দেরি করে তোমাদের সামনে এসেছি, আমি দুঃখপ্রকাশ করছি এবং ক্ষমা চাচ্ছি।

৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলে ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মীর হাতে নির্দয় পিটুনির শিকার হয়ে মারা যান তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের (১৭ ব্যাচ) ছাত্র আবরার ফাহাদ। এ ঘটনায় নিহতের বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে ১৯ জনকে আসামি করে চকবাজার থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটির তদন্ত করতে ডিবিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ঘটনার পরদিন থেকে ১০ দফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলছে।
 
এ মামলায় দু’দিনে গ্রেফতার ১৮ আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এরমধ্যে ১৩ জনকে ৫ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।  

আটকরা হলেন- বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান রাসেল, সহ-সভাপতি মুহতামিম ফুয়াদ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার, উপ-সমাজকল্যাণ সম্পাদক ইফতি মোশারফ সকাল, ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিওন, গ্রন্থনা ও গবেষণা সম্পাদক ইশতিয়াক মুন্না, মুনতাসির আল জেমি, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভীর, মুজাহিদুর রহমান ও মেহেদী হাসান রবিন, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র শামসুল আরেফিন রাফাত (২১), ওয়াটার রিসোর্সেস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র মো. মনিরুজ্জামান মনির (২১) ও একই ব্যাচের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র মো. আকাশ হোসেন (২১)।
 
তবে এ ঘটনায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান রাসেল, যুগ্ম-সম্পাদক মুহতাসিম ফুয়াদ, সাংগাঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার, ক্রীড়া সম্পাদক সেফায়েতুল ইসলাম জিওন, সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির, উপ-সমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল, উপদফতর সম্পাদক মুজতবা রাফিদ, ছাত্রলীগ সদস্য মুনতাসির আল জেমি, মুজাহিদুর রহমান ও এহতেমামুল রহমান রাব্বিকে বহিষ্কার করেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫২ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০১৯
এসকেবি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।