সোমবার (৯ ডিসেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ৫২তম সমাবর্তনে ২০ হাজার ৭৯৬ জন গ্র্যাজুয়েটকে স্বীকৃতি দিবেন।
সমাবর্তনের কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতী শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের ঐতিহ্যবাহী সব জায়গায় নিজেদের ফ্রেমে বন্দি করছেন।
শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) সমাবর্তন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সব গ্র্যাজুয়েটদের গাউন, ক্যাপ ও সমাবর্তন ব্যাগ দেওয়া শুরু হয়। এরপর থেকেই নিজের স্মৃতিবিজড়িত জায়গাগুলোতে ক্যাম্পাসের শেষ মুহূর্তগুলোকে ধারণ করে রাখার আয়োজন শুরু হয়।
ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ থেকে অনার্স সম্পন্ন করা আব্দুল কাদের হানিফ তার বন্ধুদের নিয়ে সকাল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলায় ছবি তুলছিলেন। পাশ থেকেই তার বন্ধু ইমাম ডেকে বলল, এবার সিনেট ভবনে যাবো। কথা শেষ না হতেই বান্ধবী মাহফুজা বলে, না না কার্জন হলে যাব। তিনজনের তিন মত আসতেই তন্নী বলে উঠলো, ক্যাম্পাসের সবখানের স্মৃতিই থাকতে হবে।
এদিকে সমাবর্তন ঘিরে ক্যাম্পাসকে সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে। ব্যানার-ফ্যাস্টুনসহ নানা সাজে সজ্জিত করা হয়েছে কেন্দ্রীয় খেলার মাঠসহ গোটা ক্যাম্পাস। সবখানেই কালো গাউন পরিহিতদের সরব পদচারণা।
সমাবর্তনের পূর্বে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক কার্জন হল, টিএসসি, রাজু ভাস্কর্য, স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বর, কলা ভবন, বটতলা, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ চত্বর, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার, সিনেট ভবনসহ বিভিন্ন স্থানে নিজেদের ফ্রেমে বন্দি করছেন। যেখানে অংশ নিয়েছেন বিভাগ ও হলের বন্ধুরাও। পাশাপাশি সমাবর্তনের ক্যাপ আকাশে ছুড়ে দিয়ে বাঁধভাঙা উল্লাসে মেতেছেন তারা।
অন্যদিকে অনেক গ্র্যাজুয়েট তাদের অভিভাবক নিয়ে নিজেদের স্মরণীয় মুহূর্ত উপভোগ করছেন। ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ছাত্রী মাহফুজা মিলি মায়ের সঙ্গে ছবি তুলে বলছেন, কনভোকেশনের এই দিনটার স্বপ্নটা ছিল আমার বাবার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ম্যানেজমেন্ট বিভাগে ভর্তি হওয়ার পর আব্বু সবসময় বলতো, আমাদের পরিবার থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম গ্রাজুয়েট হবা তুমি। কিন্তু আব্বুর মৃত্যুতে সবকিছু এলোমেলো হওয়ার উপক্রম হলেও আমরা সাহসী মা আমাদের আগলে রাখেন। গ্র্যাজুয়েশনটা আমার হলেও, প্রকৃত গ্র্যাজুয়েট আসলে আমার মা। আম্মুর হাসিমুখ দেখে স্বর্গীয় সুখ পাওয়া যায়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, সমাবর্তনকে ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। সমাবর্তন অনুষ্ঠানের সব প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। অনুষ্ঠানের সার্বিক নিরাপত্তাও নিশ্চিত করা হয়েছে। সমাবর্তনের দিন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গ্র্যাজুয়েটদের চলাচল নির্বিঘ্ন করতে বিকল্প রাস্তা ব্যবহারের জন্য তিনি সর্বসাধারণের প্রতি আহ্বান জানান।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বিশ হাজার গ্র্যাজুয়েটের পাশাপাশি ৭৯ জন কৃতী শিক্ষক, গবেষক ও শিক্ষার্থীকে ৯৮টি স্বর্ণপদক, ৫৭ জনকে পিএইচডি, ছয়জনকে ডক্টর অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (ডিবিএ) এবং ১৪ জনকে এমফিল ডিগ্রি প্রদান করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৬১৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৯, ২০১৯
এসকেবি/আরকেআর/এসএ