আর গ্রামে কম পাসের হার সার্বিক ফলাফলে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে বলে মনে করেন আন্তঃশিক্ষাবোর্ড সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মু. জিয়াউল হক। তাদের পাসের হার বাড়ানোই লক্ষ্য বলে মনে করেন তিনি।
জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষায় এবছর পাসের হার বেড়ে হয়েছে ৮৭.৯০ শতাংশ, গত বছর ছিল ৮৫.৮৩ শতাংশ। পাসের হার বেড়েছে ২.০৭ শতাংশ।
মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে ৭৮ হাজার ৪২৯ জন, গতবছর ছিল ৬৮ হাজার ৯৫ জন। গত বছরের চেয়ে এবার জিপিএ-৫ বেড়েছে ১০ হাজার ৩৩৪ জন।
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত ফল প্রকাশ করেন। এরআগে সকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে সমাপনী পরীক্ষার ফলাফল হস্তান্তর করা হয়।
জেএসসি-জেডিসিতে মোট অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ২৬ লাখ দুই হাজার ৫৩ জন, গতবছর ছিল ২৫ লাখ ৯৯ হাজার ১৬৯ জন। পাস করেছে ২২ লাখ ৮৭ হাজার ২৭১ জন, গত বছর ছিল ২২ লাখ ৩০ হাজার ৮২৯ জন। শতভাগ পাস করা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৩৩টি, যা গত বছর ছিল ৪৩টি। এবছর ২৯ হাজার ২৭৫টি প্রতিষ্ঠান থেকে পরীক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে, গতবছর ছিল ২৯ হাজার ৭৮টি। বেড়েছে ১৯৭টি। আর মোট কেন্দ্রের সংখ্যা ছিল দুই হাজার ৯৮২টি, গতবছর ছিল দুই হাজার ৯০৩টি, বেড়েছে ৭৯টি।
ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, কেবল ইংরেজি ও গণিতেই পাসের হার তুলনামূলক কম। বেশি পাস করেছে বাংলা, বিজ্ঞান, বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় এবং আইসিটিতে। এসব বিষয়ে পাসের হার ৯৭ শতাংশ থেকে প্রায় শতভাগ।
আর ইংরেজি ও গণিতে পাসের হার ৯০ থেকে ৯৭ শতাংশ।
ইংরেজিতে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে ৮৯.৮৪ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ৯১.২৯ শতাংশ, কুমিল্লায় ৯২.৪৩ শতাংশ থেকে বেড়ে ৯৩.৩১ শতাংশ, চট্টগ্রামে ৯১.০৭ থেকে বেড়ে ৯১.৫৯ শতাংশ, বরিশালে ৯৮.১৯ থেকে কমে ৯৭.৯৪ শতাংশ, সিলেটে ৯৩.৫৯ থেকে বেড়ে ৯৫.৯০ শতাংশ হয়েছে।
ইংরেজিতে রাজশাহীতে এবার ৯৭.০৩ শতাংশ, যশোরে ৯২.১৯ শতাংশ, দিনাজপুরে ৯০.৬৮ ও ময়মনসিংহে ৯০.৬২ শতাংশ পাস করেছে। গতবছরের তথ্য মেলেনি বোর্ডের কাছে।
গণিতে ঢাকায় ৯০.৬৯ থেকে বেড়ে ৯৩.৭৯ শতাংশ, কমিল্লায় ৯৪.২০ থেকে বেড়ে ৯৬.২৭ শতাংশ, চট্টগ্রামে ৮৪.৭৪ খেকে ৯১.৩০ শতাংশ, বরিশালে ৯৯.৯৩ থেকে কমে ৯৮.৪৩ শতাংশ, সিলেটে ৮৫.৪২ থেকে বেড়ে ৯৬.৩৮ শতাংশ হয়েছে।
ময়মনসিংহে ৯১.৭৮, দিনাজপুরে ৯২.১৪, যশোরে ৯৪.৯৯ ও রাজশাহীতে ৯৬.৯০ শতাংশ পাস করেছে গণিতে। ২০১৮ সালের তথ্যে মেলেনি বোর্ডের কাছে।
তবে ইংরেজি ও গণিতের ফল খুব বেশি প্রভাব ফেরেনি বলে মনে করেন আন্তঃশিক্ষাবোর্ড সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মু. জিয়াউল হক। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, মোটামুটি সব বিষয়ে পাসের হার ৯০ শতাংশের উপরে।
এছাড়াও গ্রামের কম পাসের হার সার্বিক ফলে প্রভাব ফেলেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ঢাকা মহানগরে পাসের হার ৯১ শতাংশ। কিন্তু অন্য জেলাগুলোতে ৮০ শতাংশ। অর্থাৎ গ্রামের ফল একটু খারাপ হওয়ায় মোট পাসের হার কমেছে।
সার্বিক ফলাফল সন্তোষজনক জানিয়ে মু. জিয়াউল হক বলেন, পাসের হার আরো বাড়াতে আমাদের প্রত্যন্ত এলাকায় নজর দিতে হবে। সব শিক্ষার্থী পাস করুক- এটাই টার্গেট।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০১৯
এমআইএইচ/এএ