শাবিপ্রবিতে পর্যাপ্ত আবাসিক ব্যবস্থা না থাকায় বেশিরভাগ শিক্ষার্থীকে মেসভাড়া নিয়ে বাইরে থাকতে হয়। ছেলেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশে বিভিন্ন মেসে থাকলেও মেয়েরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাধীন সামাদ হাউজ-১, সামাদ হাউজ-২, ফজল কমপ্লেক্স, আমির কমপ্লেক্স, ফজলে আলি হল, ছায়ানীড়ে ভাড়া থাকেন।
করোনা ভাইরাস মহামারিতে দীর্ঘ দিন ধরে ক্যাম্পাস বন্ধ রয়েছে। এসময় শিক্ষার্থীরাও বাড়িতে রয়েছেন। তবে মেসে না থাকলেও মেসভাড়া পরিশোধ নিয়ে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন তারা। এমনকি অনেক শিক্ষার্থীদের মেস মালিকের হুমকির মুখেও পড়তে হচ্ছে। এতে মেসভাড়া পরিশোধ নিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন শিক্ষার্থীরা। তাই এ সমস্যার দ্রুত একটি সমাধান খুঁজছেন তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় তারা মেসে থাকছেন না। যারা টিউশন করে নিজের খরচ চালাতেন, তারাও টিউশন বন্ধ থাকায় অর্থ সংকটে পড়েছেন। ফলে মেসভাড়া পরিশোধ করতে পারছেন না তারা।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, কিছু বাড়ির মালিক সমস্যায় না থাকা সত্ত্বেও কোনো প্রকার ছাড় দিতে চাচ্ছেন না। এরই মধ্যে সময় বেঁধে দিয়ে ভাড়া আদায় করছেন কিছু মেস মালিক। এ সংকটকালে শিক্ষার্থীদের কোনো প্রকার সহযোগিতা করার আগ্রহও দেখাচ্ছেন না তারা। তাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মাধ্যমে এ সমস্যার একটি কার্যকরী সমাধান চান শিক্ষার্থীরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘মেস মালিকরা ভাড়ার জন্য বারবার ফোন দিচ্ছে। ইতোমধ্যে আমরা দুয়েক মাসের ভাড়াও পরিশোধ করেছি। তবে আমাদের এক মাসের ভাড়া মওকুফ করার কথা ছিল। ’
মেসভাড়ার বিষয়ে মনোলোভা কমপ্লেক্স মেসের মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ‘যে শিক্ষার্থীরা আমাদের বাড়িতে থাকেন, তাদের দেখাশোনা করার দায়িত্ব আমাদের। বিশ্ববিদ্যালয় খুললে শিক্ষার্থীরা যখন আসবেন আমরা মেসভাড়া নিয়ে একটি ব্যবস্থা নেবো। এ সংকটকালীন সমস্যার কথা আমরা অবশ্যই বিবেচনা করবো। ’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক ড. মো রাশেদ তালুকদারকে ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে শাবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ এবং শিক্ষার্থীরাও বাড়িতে থাকায় আপাতত আমরা কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছি না। তবে যখনই বিশ্ববিদ্যালয় খুলবে তখনই মেস মালিক, সিলেট জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলোচনা করে এর সমাধান করা হবে। ’
উপাচার্য আরও বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা আপাতত কোনো চাপ না নিয়ে নিজেরা যাতে পড়াশুনা চালিয়ে যায়। বিশ্ববিদ্যালয় খুললে অবশ্যই মেসভাড়ার বিষয়টি আমরা প্রাধান্য দিয়ে দেখবো। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একান্ত সমস্যাগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের সেমিস্টার ও ক্রেডিট ফি কমানোর জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’
অন্যদিকে বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. আসলাম উদ্দিন বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা জেলা প্রশাসন বরাবর আবেদন করলে মেস/বাসা মালিকদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কথা বলে একটি ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। তবে মেসভাড়া কমানোর বিষয়ে শিক্ষার্থীদের স্বাক্ষরসহ জেলা প্রশাসন বরাবর আবেদন করতে হবে। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৮ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০২০
এফএম