ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

আবাসিক হল বন্ধ রেখে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স-মাস্টার্স পরীক্ষা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০২০
আবাসিক হল বন্ধ রেখে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স-মাস্টার্স পরীক্ষা

ঢাকা: করোনার কারণে আবাসিক হলগুলো বন্ধ রেখে একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্তে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো স্নাতক (অনার্স) ও স্নাতকোত্তরের (মাস্টার্স) চূড়ান্ত পরীক্ষা নিতে পারবে।

রোববার (১৩ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহর সভাপতিত্বে ভার্চ্যুয়াল সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সভায় ৩৯টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও ইউজিসি সদস্যরা যুক্ত ছিলেন।

করোনা ভাইরাসের কারণে গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এতে একাডেমিক কার্যক্রমও স্থবির হয়ে পড়ে। করোনা মহামারির প্রকোপ না কমায় কয়েক দফা বাড়িয়ে আগামী ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি বাড়ানো হয়।

সভায় জানানো হয়, করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ঝুঁকি থাকায় দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ফেস টু ফেস শিক্ষা কার্যক্রমের বিকল্প হিসেবে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হলেও পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এরফলে শিক্ষার্থীরা একদিকে, যেমন পাঠ্যবিষয় প্রস্তুত ও চর্চাকরণে অনীহা হচ্ছে, অন্যদিকে যথা সময়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠান সম্ভব না হওয়ায় তারা হতাশায় ভুগছে। এ অবস্থা অবসানে পরীক্ষা গ্রহণের উপযুক্ত উপায় নির্ধারণের জন্য সভায় সিদ্ধান্ত হয়।

করোনার কারণে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স ও মাস্টার্স পর্যায়ে অধ্যয়নররত শিক্ষার্থীদের সেমিস্টারের চূড়ান্ত পরীক্ষা নিতে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইউজিসি সদস্য ড. মুহাম্মদ আলমগীরের সঞ্চালনায় সভায় ইউজিসি সদস্য ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন, ড. বিশ্বজিৎ চন্দ, ড. মো. আবু তাহের, ইউজসি সচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ড. ফেরদৌস জামান ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের পরিচালক মো. কামাল হোসেন যুক্ত ছিলেন।

সভায় ইউজিসির পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য ড. মুহাম্মদ আলমগীর করোনা সময়ে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সেমিস্টারের চূড়ান্ত পরীক্ষা এবং ব্যবহারিক ক্লাস ও মূল্যায়ন বিষয়ে ৭টি সুপারিশ তুলে ধরেন।
 
১. করোনার কারণে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবনে যে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে বা হচ্ছে তা থেকে উত্তরণের জন্য অনার্স ও মাস্টার্স পর্যায়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের সেমিস্টারের চূড়ান্ত পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কমিটিগুলোর সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়গুলো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারে।

২. বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, কৃষি, চিকিৎসাসহ অন্যান্য শাখার অসমাপ্ত ব্যবহারিক ক্লাস এবং তার মূল্যায়ন স্বাস্থ্য বিধি মেনে পর্যায়ক্রমে সম্পন্ন করতে হবে।
 
৩. সেমিস্টার পরীক্ষা, ব্যবহারিক ক্লাস ও মূল্যায়ন সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে সর্বশেষ সেমিস্টারের অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা অগ্রাধিকার পাবে।
 
৪. করোনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো সরকারের নির্দেশনায় বন্ধ থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো বন্ধ রাখতে হবে।
 
৫. শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি মাথায় রেখে পরীক্ষা ও ব্যবহারিক ক্লাস পূর্ণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে সম্পন্ন করতে হবে। এজন্য শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা ও ব্যবহারিক ক্লাস শুরুর সর্বোচ্চ জন্য একঘণ্টা আগে ক্যাম্পাসে প্রবেশ এবং শেষ হওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যে ক্যাম্পাস ত্যাগ করতে হবে।

৬. কোভিড-১৯ সংকটের কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনলাইনে চলমান শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
 
৭. বিশ্ববিদ্যালয়গুলো করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধকল্পে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক জারিকৃত নির্দেশনা যথাযথভাবে প্রতিপালন ও অনুসরণ করতে হবে।
 
সভায় ইউজিসি চেয়ারম্যান বলেন, পরীক্ষা গ্রহণ বিষয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের ডিনস কমিটি, একাডেমিক কাউন্সিলসহ সংশ্লিষ্ট কমিটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিবে। পরীক্ষার মান নিয়ে যেন কোন প্রশ্ন না ওঠে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। তাড়াহুড়া না করে সক্ষমতা অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে তিনি পরামর্শ দেন।

উপাচার্যরা জানান, করোনা পরিস্থিতিতে অনলাইনে পাঠদান অব্যাহত রয়েছে। অসমাপ্ত সেমিস্টার শেষ পর্যায়ে রয়েছে। পরীক্ষা না হওয়ার কারণে শিক্ষাথীরা হতাশ হয়ে পড়েছে। তারা নিজেদেরকে পরবর্তী সেমিস্টারের শিক্ষা কার্যক্রম থেকে আলাদা করে নিচ্ছে। পরীক্ষা বা মূল্যায়ন না হলে অনলাইন শিক্ষাকার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়বে। জাতীয় স্বার্থে পরীক্ষা নেওয়া দরকার।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০২০
এমআইএইচ/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।