ঢাকা, সোমবার, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ মে ২০২৪, ০৪ জিলকদ ১৪৪৫

শিক্ষা

আইইউবির ‘অ্যারোজ’ দেশের প্রথম অন্তর্ভুক্তিমূলক স্নাতক প্রোগ্রাম

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০২১
আইইউবির ‘অ্যারোজ’ দেশের প্রথম অন্তর্ভুক্তিমূলক স্নাতক প্রোগ্রাম

চতুর্থ শিল্প বিপ্লব এবং টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিতে ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশে (আইইউবি) চালু হলো দেশের প্রথম অন্তর্ভুক্তিমূলক স্নাতক প্রোগ্রাম ‘আইইউবি অ্যারোজ’।

শনিবার (১৮ ডিসেম্বর) ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় আইইউবির নিজস্ব ক্যাম্পাসে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অ্যারোজ প্রোগ্রামের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।

 

‘ইনক্লুসিভ ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড আইইউবি’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) চেয়ারম্যান ড. কাজী খলিকুজ্জামান আহমাদ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আইইউবির উপাচার্য তানভীর হাসান। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমান, আইইউবি বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ার আব্দুল হাই সরকার, দ্য ডেইলি অবজারভারের সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী এবং প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক আনিসুল হক।

আইইউবি অ্যারোজ প্রোগ্রামের অধীনে এখন থেকে প্রতিবছর ৫০ জন শিক্ষার্থীকে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে পাঠদানের পাশাপাশি তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ, মেন্টরিং, ইন্টার্নশিপ, চাকরির সুযোগ এবং শিক্ষা উপকরণ দেওয়া হবে।

বাংলাদেশের অন্যান্য স্নাতক প্রোগ্রামের সঙ্গে অ্যারোজের পার্থক্য হলো- এখানে উচ্চ মাধ্যমিক বা এ লেভেল পর্যায়ের ফলাফল একমাত্র বিবেচ্য বিষয় নয়। অ্যারোজ প্রোগ্রামের জন্য একজন শিক্ষার্থীর প্রতিভা, নেতৃত্বগুণ, চারিত্রিক দৃঢ়তা এবং দেশপ্রেমকেও বিবেচনায় নেওয়া হবে। আর অ্যারোজ প্রোগ্রামকে অন্তর্ভুক্তিমূলক বলার কারণ হলো- ছেলে-মেয়ে, ধনী-গরিব, শহর-গ্রাম নির্বিশেষে বাংলাদেশের সব শিক্ষার্থী এই প্রোগ্রামে আবেদন করতে পারবেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. কাজী খলিকুজ্জামান আহমাদ বলেন, শুধুমাত্র আর্থিক অন্তর্ভুক্তিই যথেষ্ট নয়। অন্তর্ভুক্তি হতে হবে সবকিছু নিয়েই। একজন মানুষের খাদ্য, বাসস্থান, পরিবহনের মতো বহুমাত্রিক চাহিদা রয়েছে। আইইউবি অ্যারোজ প্রোগ্রাম শিক্ষার্থীদের সেই বহুমাত্রিক চাহিদা পূরণের মাধ্যমে তাদের গড়ে তোলার চেষ্টা করছে। আমার মনে হয় এ বিষটিই এই প্রোগ্রামের সবচেয়ে শক্তিশালী দিক।

আইইউবি উপাচার্য তানভীর হাসান বলেন, অ্যারোজ প্রোগ্রামের মাধ্যমে আমরা শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন শিল্পে কাজের সুযোগ তৈরি করে দেওয়ার চেষ্টা করবো। আমরা মনে করি এতে আমাদের একটা প্রধান অঙ্গীকার পূরণ হবে। আর্থিক অসঙ্গতির কারণে বাংলাদেশের কোনো ছেলে বা মেয়ে যেন প্রাপ্য সুযোগ থেকে বঞ্চিত না হয়। তা সে গ্রাম বা শহর, ধনী বা দরিদ্র পরিবার, যেখান থেকেই আসুক না কেন। এটি বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টের সঙ্গেও সম্পূর্ণ সামঞ্জস্যপূর্ণ।  

আইইউবি বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ার আব্দুল হাই সরকার বলেন, শুধুমাত্র শিক্ষকদের একার পক্ষে অ্যারোজের মতো একটি প্রোগ্রাম চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। এটি কীভাবে আরও টেকসই করা যায়, আমাদের সবার সেই চেষ্টা করতে হবে। এক্ষেত্রে দেশের করপোরেট খাত একটা বড় ভূমিকা পালন করতে পারে।

সিপিডির সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ঈর্ষণীয় অর্থনৈতিক অগ্রগতি সত্ত্বেও আমাদের সমাজে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো বৈষম্য। সুতরাং আইইউবির উচিত সমাজের পিছিয়ে পড়া ছেলেমেয়েদের অনুপ্রাণিত করা। অ্যারোজ প্রোগ্রামের মাধ্যমে যদি আইইউবি অল্প কিছু মানুষের জীবনেও পরিবর্তন আনতে পারে, তাহলে সেটাই হবে দেশের অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।   

দ্য ডেইলি অবজারভারের সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, আইইউবির মতো দেশের শীর্ষস্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো তরুণ প্রজন্মকে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করে দেওয়া। কারণ আমাদের ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে আমাদের কাছে কি পরিমাণ তথ্য বা জ্ঞান আছে তার ওপর। স্থাবর সম্পদের ওপর নয়।

প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক আনিসুল হক বলেন, মানুষ খুব আশ্চর্য সম্ভাবনাময় প্রাণী। প্রত্যেকের মধ্যে একটা মোম আছে, সলতে আছে। অগ্নিসংযোগ করে দিলেই সে আপন মনে আলোকিত হতে থাকে। একটা মোমবাতি যদি আলোকিত হয়, সেখান থেকে হাজার মোমবাতি আলোকিত হতে পারে। আইইউবি তাদের এই অ্যারোজ প্রোগ্রাম দিয়ে যে আলো জ্বালানোর চেষ্টা করছে, সে আগুন ছড়িয়ে যাক সবখানে, সেটাই আমাদের প্রত্যাশা।

আইইউবি অ্যারোজ প্রোগ্রামের জন্য আবেদন করা যাবে ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত। এজন্য ভিজিট করতে হবে ওয়েবসাইট (arrows.iub.edu.bd)। এইচএসএসি, এ লেভেল বা সমমানের পরীক্ষায় পাশ করা যেকোনো শিক্ষার্থী এই প্রোগ্রামের জন্য আবেদন করতে পারবেন। সেজন্য আইইউবির নিয়মিত ভর্তি ফর্ম পূরণের পাশাপাশি অ্যারোজের জন্য বাড়তি কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে তাদের।  

আইইউবির অধ্যাপক ড. নিয়াজ জামানের নেতৃত্বে একটি জুরি বোর্ড প্রাথমিক আবেদনপত্রগুলো যাচাই করে একটি ছোট তালিকা প্রণয়ন করবেন। সেই তালিকায় স্থান পাওয়া আবেদনকারীদের এরপর মৌখিক এবং সাইকোমেট্রিক পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। এরপর সেখান থেকে ৫০ জনকে চূড়ান্ত করা হবে। তারাই হবেন আইইউবি অ্যারোজ প্রোগ্রামের প্রথম ব্যাচ।

২০২২ সালের জানুয়ারি মাসের তৃতীয় সপ্তাহে স্প্রিং সেমিস্টারে নতুন প্রোগ্রামের কার্যক্রম শুরু হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০২১
এনএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।