ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

ইংরেজ শাসনামল থেকে আলো ছড়াচ্ছে গ্রন্থাগারটি

বদরুল আলম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৬ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০২২
ইংরেজ শাসনামল থেকে আলো ছড়াচ্ছে গ্রন্থাগারটি

হবিগঞ্জ: পুরোপুরিভাবে মানুষে ভরপুর ঘরটি, তবুও সুনসান। নিরবতায় নিশ্ছিদ্র মাত্রা যোগ করছিল ঘুরতে থাকা বৈদ্যুতিক পাখাগুলো।

এ পরিবেশে হাত থেকে একটি কলম পড়ে যাওয়ার শব্দও যেন অনেকখানি অসুবিধার কারণ। টেবিলের উপরে রাখা বইগুলোতে মগ্ন শতাধিক পাঠক। সংবাদপত্রে চোখ বুলাচ্ছেন কেউ কেউ।

রোববার (১৩ মার্চ) দুপুরে এই দৃশ্য দেখা যায়, হবিগঞ্জ জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগারে। করোনাভাইরাসের ভাটার সময়ে বইপ্রেমীদের নিরব মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে গ্রন্থাগারটি। প্রতিদিন এখানে ভিড় করছেন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সেখানে প্রতিদিন শতশত বইপ্রেমী, সাহিত্যানুরাগী ও কবি-সাহিত্যিকদের সমাগম ঘটে। সপ্তাহে দুইদিন ছুটি থাকে এই গ্রন্থাগারে। বাকি পাঁচ দিনই এক উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করে এখানে। সম্প্রতি বই পড়তে আসাদের মধ্যে বেশিরভাগই শিক্ষার্থী এবং তারা চাকরির পরীক্ষা দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

গ্রন্থাগার কর্তৃপক্ষ বলছে, ইংরেজ শাসনামলে একতলা ভবনে গ্রন্থগারটি চালু হয়। বর্তমানে এর অবস্থান হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের পাশে। প্রথমে গ্রন্থাগারটির নাম কি ছিল, তা জানা যায়নি। বাংলাদেশ হওয়ার পর ১৯৮১ সালে এর নামকরণ করা হয় জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগার, হবিগঞ্জ।

গ্রন্থাগারটিতে বইয়ের সংখ্যা ৪০ হাজারের ওপরে। গল্প, কবিতা, উপন্যাস, ইতিহাস এবং দেশি-বিদেশি সাহিত্যের অনেক বিখ্যাত বই এবং বিভিন্ন ধরনের পত্রিকা রয়েছে এখানে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে এই গ্রন্থাগারের নিবন্ধিত পাঠকসংখ্যা প্রায় ২৫৭ জন। তবে একসঙ্গে বেশি মানুষের পড়ার জন্য পর্যাপ্ত জায়গা নেই গ্রন্থাগারের ভেতরে।

কথা হয় বই পড়তে আসা ফারুক আহমদের সঙ্গে। তিনি বলেন, নিয়মিত আসেন এখানে। গল্প-কবিতা, উপন্যাস ও ছোট গল্পের বই পড়েন। চাকরির প্রস্তুতির পড়াও এখানে পড়েন তিনি। তবে মাঝে মধ্যে বসার জায়গা পাওয়া যায় না।

লিজা আক্তার জানান, তিনি হবিগঞ্জ বৃন্দাবন সরকারি কলেজে মাস্টার্স অধ্যয়নরত। তার বাড়ি চুনারুঘাট উপজেলায়। জেলা শহরে মেসে থেকে লেখাপড়া করেন। সেখানে রুম মেটদের শব্দে পড়তে অসুবিধা হয়। তাই সপ্তাহে তিনদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত গ্রন্থাগারে এসে লেখাপড়া করেন।

নিয়মিত বই পড়তে আসার কথা জানিয়েছেন চাকরি প্রত্যাশী অনুস্কা শীল, নূরুল হাসান, ফখর উদ্দিন এবং হাফছা আক্তারসহ আরও কয়েকজন পাঠক।

গ্রন্থাগারে কর্মরত জুনিয়র লাইব্রেরিয়ান পরিমল শর্মা বাংলানিউজকে জানান, এখানে বর্তমানে বইয়ের সংখ্যা ৪০ হাজার ৬৩১টি। নিবন্ধিত পাঠকের সংখ্যা ২৫৭ জন। তবে এর চেয়ে বেশি মানুষ প্রতিদিন বই পড়তে আসেন। এদের মধ্যে বেশিরভাগই চাকরি প্রত্যাশী। বাকিরা নানা ধরনের পেশাজীবী। বিচার বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও এখানে বই পড়তে আসেন। তারা বিভিন্ন জাতীয় দিবসে সাতটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করে থাকেন। এতে বিজয়ীদের পুরস্কার দেয়া হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫২ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০২২
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।