ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

‘রাসায়নিক দ্রব্যের ব্যবহারবিধি পাঠ্য করতে হবে’

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৪ ঘণ্টা, জুলাই ১, ২০২২
‘রাসায়নিক দ্রব্যের ব্যবহারবিধি পাঠ্য করতে হবে’

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি): রাসায়নিক দ্রব্যাদির সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ, আমদানিকরণ, পরিবহন, বিপণন সম্পর্কে সবাইকে জানতে হবে। মাধ্যমিক থেকে পাঠ্যপুস্তকে রাসায়নিক দ্রব্যের ধরণ সম্পর্কে অধ্যায় যুক্ত করতে হবে।

ব্যবহারজনিত ত্রুটির কারণে সৃষ্ট নিকট অতীতের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডগুলো থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে।

বৃহস্পতিবার (৩০ জুলাই) রাতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় রসায়ন বিভাগ ও বাংলাদেশ স্টেম ফাউন্ডেশন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের যৌথ আয়োজনে সাম্প্রতিক দুর্ঘটনা ও রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহারের ক্ষেত্রে নিরাপত্তার বিষয় নিয়ে এক ওয়েবিনারে বক্তারা ওপরের কথাগুলো বলেন।  

প্রধান অতিথির বক্তব্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক বলেন, সম্প্রতি দেখা গেছে, কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে আমরা নড়েচড়ে বসি, আইনের ব্যবহার শুরু হয়। ঘটনা না ঘটলে আমাদের টনক নড়ে না। রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবস্থাপনায় বিভিন্ন আইন আছে, এগুলোর প্রয়োগ করতে হবে। আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা সবসময় এসবের ব্যবস্থাও নেয় না। আবার আমাদের সচেতনতারও অভাব আছে। বিভিন্ন দুর্ঘটনার পর সরকার সাভারে ট্যানারি কারখানাগুলো স্থানান্তর করতে চেয়েছিলো কিন্তু ব্যবসায়ীদের রাজি করানো যায়নি। দেশের স্বার্থে আমাদের এগিয়ে আসতে হবে। রাসায়নিক দ্রব্যের ব্যবহার ও সচেতনতা বিষয়ে মানুষকে জানাতে হবে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এসব আয়োজনে পৃষ্ঠপোষকতা করবে।

তিনি আরও বলেন, সারা বাংলাদেশে আমাদের রসায়ন বিভাগ প্রথম স্থান অর্জন করেছে। আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যেও এই অর্জনে আমরা গর্বিত। আমরা এই ধারা অব্যাহত রাখতে চাই।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ বলেন, পুরান ঢাকার বেশিরভাগ জায়গায় রাসায়নিক দ্রব্যের গোডাউন। মানুষ অনেক ঝুঁকি নিয়ে চলাফেরা করে। নিমতলীর ঘটনার পর সরকার এই কেমিক্যাল গোডাউন সরানোর উদ্যোগ নিয়েছিলো। কিন্তু কোথাও যেন একটা গলদ রয়ে গেছে। ব্যবসায়ীরা এই মিটফোর্ড, চকবাজার, বংশাল, বাবুবাজার এলাকাতেই কেমিক্যাল স্টোর করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। সময় এসেছে রাসায়নিক দ্রব্য সম্পর্কে ধারণা রাখার। এসকল সভা-সেমিনারের আরও আয়োজন করতে হবে। সব রাসায়নিক দ্রব্য ক্ষতিকর নয়, এটাও আমরা জানি না। পুরান ঢাকা থেকে এই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো সরানোর উদ্যোগ নিতে হবে।

বাংলাদেশ স্টেম ফাউন্ডেশনের সভাপতি ও পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আল নাকিব চৌধুরী বলেন, রাসায়নিক কারখানায় শিশুদের ব্যবহার করা হয়। এটা শিশুশ্রম হিসেবে নিন্দনীয় এবং ভয়াবহ। রাসায়নিক কারখানায় কাজ করা অনেকেই এই ধরণ ও ব্যবহার সম্পর্কে জানেন না। রাসায়নিক দ্রব্যের ভয়াবহতা আমরা নিমতলীর অগ্নিকাণ্ডে দেখেছি। সীতাকুণ্ডের ঘটনার জন্য রাসায়নিক দ্রব্য দায়ী না হলেও কন্টেইনার ভর্তি রাসায়নিক দ্রব্য সেখানে বেহাল অবস্থায় পড়ে ছিলো। রাসায়নিক দ্রব্য সম্পর্কে জানা সকলের মৌলিক অধিকার। তাই মাধ্যমিক থেকে পাঠ্যপুস্তকে এবিষয়ে পড়াতে হবে। সরকারের পলিসি লেভেলেও আমরা এবিষয়ে দাবি জানিয়েছি।

বাংলাদেশ স্টেম ফাউন্ডেশন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের সভাপতি ও রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক অধ্যাপক ড. একেএম লুৎফর রহমানের সভাপতিত্বে ও রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. নাফিস আহমদের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য দেন উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী সাখাওয়াত হোসেন।  

এছাড়া বক্তব্য দেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য, বিশিষ্ট রসায়নবিদ অধ্যাপক ড. শরীফ এনামুল কবির, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আমিনুল হক এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) কেমিকৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. ইয়াসির আরাফাত খান ও বাংলাদেশ বিস্ফোরক বিভাগের উপ-প্রধান পরিদর্শন ড. মো. আব্দুল হান্নান প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫২ ঘণ্টা, জুলাই ০১, ২০২২
নিউজ ডেস্ক

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।