ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

শিক্ষা

ছাত্রলীগ-যুবলীগ চাকরি ব্যবসা কোনোটাই করতে পারে না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

শাবিপ্রবি করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২, ২০২২
ছাত্রলীগ-যুবলীগ চাকরি ব্যবসা কোনোটাই করতে পারে না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

শাবিপ্রবি (সিলেট): ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সদস্যরা চাকরি বা ব্যবসা করতে পারে না উল্লেখ করে এ জন্য কষ্টের কথা জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) ছাত্রদের জন্য নির্মিত সৈয়দ মুজতবা আলী হলের বর্ধিতাংশের উদ্বোধন পরবর্তী সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি।

 

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমার খুব দুঃখ লাগে যে, আমার দলের ছেলে-মেয়েগুলো, ছাত্রলীগ-যুবলীগ- এরা চাকরি করতে পারে না। সামান্য ব্যবসা করতে গেলেও তাদের দুর্নাম হয়। চাকরিও তারা সহজে পায় না। তবে তারা রাজনীতির জ্ঞান অর্জন করেছে। আমি শিক্ষক ও আমার ফ্যাকাল্টি মেম্বারদের অনুরোধ করব- তাদেরকে কিভাবে সত্যিকার অর্থে দেশের উন্নয়নে কাজে লাগানো যায়, সে উপায় বের করতে হবে। তাদের দক্ষতা বৃদ্ধি নিয়ে আপনাদের আরও ভাবতে হবে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, আমি আমার ছাত্র ভাই-বোনদের প্রতি আহ্বান করবো তোমরা আন্দোলন কর, কিন্তু শিক্ষা ছেড়ো না।  

সিলেটের শিক্ষা ব্যবস্থার কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, সিলেট একটি ঐতিহ্যময় স্থান। জ্ঞানী-গুণী ব্যক্তিদের জায়গা এ সিলেট৷ এক সময় বাংলাদেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শিক্ষিত মানুষ ছিল সিলেটে। কিন্তু দুঃখের বিষয় সম্প্রতিকালে আমরা শিক্ষা থেকে অনেক পিছিয়ে গেছি। ফলে আমাদের মাতৃমৃত্যু ও শিশুর মৃত্যুর হার বেশি সিলেটে।  

এর অন্যতম কারণ-আমাদের অবকাঠামো, স্কুল-কলেজ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা অভাব। এটি নিয়ে ২০০৩ সালে আমি একটা জরিপ করি। সে জরিপ অনুযায়ী বৃহত্তর সিলেট এবং বরিশালের মানুষ ছিল সমান। কিন্তু বর্তমানে বরিশালে তুলনায় সিলেটে মানুষ বেশি। তবুও শিক্ষার ক্ষেত্রে সিলেট থেকেও সাড়ে তিন গুণ বেশি স্কুল-কলেজ রয়েছে বরিশালে।  

সৈয়দ মুজতবা আলীর কথা স্মরণ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সৈয়দ মুজতবা আলীর পরিবারের সঙ্গে আমাদের পরিবারের একটা ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। তিনি একজন দূরদর্শী মানুষ ছিলেন। পাকিস্তান সৃষ্টির পর বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার জন্য অনেক ত্যাগ তিতিক্ষা ও সংগ্রাম করেছেন তিনি। আমি জেনে আনন্দিত যে, এ বিশ্ববিদ্যালয়ে সৈয়দ মুজতবা আলীর নামে একটা হল হয়েছে, সেটির প্রথম উদ্বোধন করেন আমার বড় ভাই আবুল মাল আবদুল মুহিত।

এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম, সৈয়দ মুজতবা আলীর ভ্রাতুষ্পুত্র সৈয়দ রুহুল আমীন, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুল ইসলাম, ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক আমিনা পারভীন প্রমুখ।  

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সৈয়দ মুজতবা আলী হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবু সাঈদ আরেফিন খান। এসময় সিসিকের কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদসহ সিলেটের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

সভাপতির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা, গবেষণা ও অবকাঠামোর দিক দিয়ে অনেকদূর এগিয়ে গেছে। যার ফলে সম্প্রতি ওয়েবমেট্রিক্সের রিপোর্ট অনুযায়ী দেশে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে শাবিপ্রবি। এটি একটি দুর্নীতিমুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, সুশাসনের দিক দিয়েও আমরা অন্যান্যদের রোল মডেল। বর্তমানে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা বাজেট ৮ গুণ বৃদ্ধি করা হয়েছে। আগামীতে এ বাজেট ১০ কোটি টাকা করার কাজ চলছে। এ বছর বিশ্বের স্বনামধন্য বিভিন্ন আন্তর্জাতিক জার্নালে আমাদোর শিক্ষকদের ৭০০টির বেশি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। আশা করছি এ ধারা অব্যাহত থাকলে আগামীতে দেশের নাম্বার ওয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিনত হবে শাবিপ্রবি।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২, ২০২২
এসএ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।