ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

সিসি ক্যামেরা নিয়ে ‘উল্টো সুর’ ইসির

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০২২
সিসি ক্যামেরা নিয়ে ‘উল্টো সুর’ ইসির

ঢাকা: গাইবান্ধা-৫ আসনের উপ-নির্বাচনে সিসি ক্যামেরা ব্যবহারে ইতিবাচক সাড়া পেয়ে সংসদ নির্বাচনেও এই যন্ত্র ব্যবহারের পরিকল্পনা নিয়েছিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সে সময় বিরাট অঙ্কের অর্থ ব্যয়ের বিষয়টি সুষ্ঠু নির্বাচনের তুলনায় সামান্য বলেও যুক্তি দেন নির্বাচন কমিশনাররা।

অথচ দুই মাস না গড়াতেই উল্টো সুর নির্বাচন কমিশনারদের মুখে।

মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, আমরা সাধারণত সিসি ক্যামেরা ব্যবহার করব সে সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছি। তবে সিসি ক্যামেরা ব্যবহারে অর্থের অপচয় হবে কি না— আমরা সে বিষয়টিও আমরা মাথায় রাখব। আমরা এই বিষয়কে ফ্যাশন করতে চাচ্ছি না। এটা যেন অর্থ বহন করে, এর যেন উপযোগিতা থাকে, তা নিশ্চিত করে সিদ্ধান্ত নেব।

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপির ছেড়ে দেওয়া ছয় শূন্য আসনের উপ-নির্বাচনে সিসি ক্যামেরা ব্যবহার করা হবে কি না- সেই সিদ্ধান্ত আমরা এখনো নিইনি।

আগের দিন নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানা বলেন, সিসি ক্যামেরার ব্যবহার গণ প্রতিনিধিত্ব আদেশে (সংসদ নির্বাচনের আইন) নেই। তবুও জাতীয় নির্বাচনে সিসি ক্যামেরা ব্যবহার হবে কি না— তা এখনই বলা যাচ্ছে না।  

তিনি আরও বলেন, বাজেট ঘাটতির জন্য পাঁচ আসনে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা যাচ্ছে না। হঠাৎ করে আসনগুলো শূন্য হয়েছে। এজন্য আমাদের বাজেট ছিল না। তবে আমরা বলছি না যে, সিসি ক্যামেরা একবারেই ব্যবহার করব না। প্রয়োজন হলে ব্যবহার করব।

গত ১৯ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, অনেক নির্বাচনে সিসি ক্যামেরা ছিল না, অথচ কোনো অঘটন ঘটেনি। পাঁচ আসনের ভোট প্রতিযোগিতাপূর্ণ হবে। এতে ব্যালেন্স থাকবে। ফলে সিসি ক্যামেরার প্রয়োজন পড়বে না।

গত ১২ অক্টোবর অনুষ্ঠিত গাইবান্ধা-৫ আসনের উপ-নির্বাচনে সিসি ক্যামেরায় ব্যাপক অনিয়ম স্বচক্ষে দেখতে পাওয়ায় ৫০টি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ বন্ধ ঘোষণা করেন। রিটার্নিং কর্মকর্তাও একটি কেন্দ্রের ভোট বন্ধ করে দেন। এরপর ভোটের যৌক্তিকতা না থাকায় দুপুরেই পুরো নির্বাচনের ভোটগ্রহণ বাতিল ঘোষণা করেন তিনি।

পরে উচ্চ পর্যায়ের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেয় ইসি। যে কমিটি ভোটের এলাকায় ৬৮৫ জনের শুনানি করে এবং অন্য কেন্দ্রগুলোর ফুটেজ দেখে বিভিন্ন শাস্তির সুপারিশ রেখে প্রতিবেদন জমা দেয়। এর ভিত্তিতে একজন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ ১৩৩ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন শাস্তির সিদ্ধান্ত দেয় কমিশন, যা নির্বাচনী ইতিহাসে রেকর্ড।

গাইবান্ধা-৫ আসনের ভোট বন্ধ করায় নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও তার সমর্থকদের ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে নির্বাচন কমিশন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতাদেরও অনেকে ভোটে সিসি ক্যামেরার ব্যবহারে ভোটের গোপনীয়তা ক্ষুণ্ণ হয়েছে বলে উল্লেখ করেন। তখনও নির্বাচন কমিশনাররা গোপনীয়তা ক্ষুণ্ণ হয়নি বলে যুক্তি তুলে ধরেন। নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, আমরা তো গোপন কক্ষে সিসি ক্যামেরা বসাইনি।

গত ১৫ জুন অনুষ্ঠিত মিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সিসি ক্যামেরা প্রথমবারের মতো স্থাপন করেছিল ইসি। এরপর সব নির্বাচন এমনকি ৩০০ আসনের সাধারণ নির্বাচনেও এই যন্ত্রের ব্যবহারের কথা বলে নির্বাচন আয়োজনকারী সংস্থাটি।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৮ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০২২
ইইউডি/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।