ঢাকা: আসন্ন গাজীপুর সিটি করপোরেশন (গাসিক) নির্বাচনে ‘ভীতিমূলক’ বক্তব্য দেওয়ায় ৪০ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী মো. আজিজুর রহমানকে নির্বাচন ভবনে তলব করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বুধবার (২৪ মে) বিকেল ৩টায় তাকে উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলেছে সংস্থাটি।
ইসির জনসংযোগ শাখার সহকারী পরিচালক মো. আশাদুল হক এই তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, গাসিকের ৪০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মো. আজিজুর রহমান গত ২২ মে সন্ধ্যা ৭টায় গাসিকের ৪০ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত পুবাইল এলাকার কলেরবাজার নামক স্থানে মিছিল ও জনসভা করেন এবং ওই জনসভায় ‘নৌকা ছাড়া কাউকে ভোট কেন্দ্রে আসতে দেবেন না’ মর্মে ত্রাস সৃষ্টি এবং ভীতি প্রদর্শনমূলক বক্তব্য দেন; যা বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে ওই বিষয়ে রিটার্নিং অফিসার তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করেন এবং তদন্তে বর্ণিত বিষয়টির প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় মো. আজিজুর রহমানকে ২৪ মে বিকেল ৩টায় নির্বাচন ভবনে (কক্ষ নং ৩১৪) ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
বেআইনি মিছিল, জনসভা ও ত্রাস সৃষ্টি এবং ভীতি প্রদর্শনমূলক বক্তব্য প্রদান স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) নির্বাচন বিধিমালা-২০১০ এর বিধি ৯১ এবং সিটি কর্পোরেশন (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা-২০১৬ এর বিধি ৩১ ও ৩২ এর পরিপন্থী।
এর আগে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে আচরণ বিধি ভঙ্গের দায়ে তলব করেছিল ইসি। তবে তিনি দুঃখ প্রকাশ এবং ভবিষ্যতে আচরণ বিধি ভঙ্গ না করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচন কমিশনকে সন্তুষ্ট করেন।
গাসিক নির্বাচনে মেয়র পদে ৮ জন, সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৭৯ জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৪৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মেয়র পদের প্রার্থীরা হলেন- মাছ প্রতীকে গণফ্রন্টের আতিকুল ইসলাম, নৌকা প্রতীকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অ্যাডভোকেট মো. আজমত উল্লা খান, লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির এমএম নিয়াজ উদ্দিন, হাতপাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের গাজী আতাউর রহমান এবং গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির মো. রাজু আহাম্মেদ। এছাড়া স্বতন্ত্র থেকে মেয়র পদে টেবিল ঘড়ি প্রতীকে জায়েদা খাতুন (সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা), ঘোড়া প্রতীকে মো. হারুন-অর-রশীদ ও হাতি প্রতীকে সরকার শাহনূর ইসলাম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
আগামী বৃহস্পতিবার (২৫ মে) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ৮ হাজার ১০০টি ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে এই নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এতে ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন তাদের ভোটধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন। তাদের মধ্যে ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন পুরুষ ও ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন নারী এবং ১৮ জন আছেন হিজড়া ভোটার।
প্রতিটি ভোটকক্ষে সিসি ক্যামেরার (মোট চার হাজার ৪৩৫টি) মাধ্যমে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবে নির্বাচন কমিশন। এক্ষেত্রে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে বিশাল স্ক্রিনে ভোটের পরিস্থিতি দেখবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ অন্য নির্বাচন কমিশনার, ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সাংবাদিকরা।
নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর এনিয়ে বলেছেন, সিসি ক্যামেরায় কোনো অনিয়ম দেখতে পেলে গাইবান্ধা নির্বাচনে চেয়েও কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনে সর্বশেষ ভোট হয়েছিল ২০১৮ সালের ২৬ জুন। নির্বাচিত করপোরেশনের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে ২০১৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর। পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনের সময়গণনা শুরু হয়েছে গত ১১ মার্চ। বর্তমানে যারা নির্বাচিত রয়েছেন তাদের মেয়াদ শেষ হবে আগামী ১০ সেপ্টেম্বর।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১১ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০২৩
ইইউডি/এমএমজেড