ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

নির্বাচন ও ইসি

বিসিসি নির্বাচন

৩০ খাতে উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাপসের নির্বাচনী ইশতেহার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২১ ঘণ্টা, জুন ৪, ২০২৩
৩০ খাতে উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাপসের নির্বাচনী ইশতেহার সংবাদ সম্মেলনে লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী প্রকৌশলী ইকবাল হোসেন তাপস।

বরিশাল: বরিশাল সিটি কর্পোরেশনকে (বিসিসি) উৎপাদনমুখী মেগা সিটিতে পরিণত করা, শিক্ষা-চিকিৎসা ব্যবস্থায় উন্নয়নসহ নগরবাসীর স্বপ্নপূরণে নির্বাচনী অঙ্গীকার নিয়ে ইশতেহার ঘোষণা করেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী প্রকৌশলী ইকবাল হোসেন তাপস। একইসঙ্গে তিনি ঘোষিত ইশতেহারে মাদক ও সন্ত্রাস নির্মূলসহ পর্যটন এবং শিশু ও নারীবান্ধব নগরী গড়ে তোলার ওপর জোর দিয়েছেন।

রোববার (৪ জুন) বেলা সাড়ে ১১টায় বরিশাল ক্লাব মিলনায়তনে ৩০টি নির্দিষ্ট খাতে উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে এ ইশতেহার ঘোষণা করেন তিনি।

ইকবাল হোসেন তাপস বলেন, আমি মনে করি না এখনও বরিশাল সিটি নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হয়েছে। ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীরা একটু সুযোগ-সুবিধা বেশি পাবেন, তার মানে এই নয়, তারা নিয়ম ভেঙে রাস্তাঘাট দখল করে নির্বাচনী কার্যালয় বসাবেন। নির্বাচন কমিশন থেকে আমাদের চার থানায় চারটি অফিস বসানোর কথা বলেছে, সেখানে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী কার্যালয়ের অভাব নেই। আবার তাদের লোকজন শহরে মোটরসাইকেল মহড়া দিয়ে ভীতিকর পরিস্থিত সৃষ্টি করছে। প্রশাসনও সবার সঙ্গে সমান আচরণ করছে না। আমরা অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছি।

তাপস বলেন, আমি নির্বাচিত হলে বরিশাল শহরকে উৎপাদনমুখী করার লক্ষে সর্বাঙ্গে সেই পরিবেশ এখানে সৃষ্টি করা, মা ও শিশুদের চিকিৎসার জন্য আধুনিক হাসপাতাল নির্মাণ করা এবং বরিশাল শহরে একটি আইটি সিটি গড়ার উদ্যোগ সবার আগে নেবো। প্রধানমন্ত্রী স্মার্ট ও ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে যে স্লোগানগুলো দিচ্ছেন, তার ওপর জোর দিলে আমাদের আইটি সক্ষমতা বাড়াতে হবে। বরিশাল সিটিতে আমরা আইটির সক্ষমতা বাড়াতে পারলে সরকারকে যেমন সহায়তা করা হবে, তেমনি তরুণ সমাজের উপার্জনের ব্যবস্থা হবে।

জাপার মেয়রপ্রাথী বলেন, বরিশাল নগরবাসীর স্বপ্নপূরণে নির্বাচনী অঙ্গীকারগুলো-বরিশাল সিটি কর্পোরেশনকে উৎপাদনমুখী মেগা সিটিতে পরিণত করা। প্রশস্ত রাস্তা নির্মাণ ও জনসাধারণের হাঁটার জন্য ফুটপাথের ব্যবস্থা করা। রাস্তা-ঘাট নির্মাণের দরপত্রে ১শ শতাংশ স্বচ্ছতার নিশ্চয়তা। শহরের ঐতিহ্যবাহী খালগুলো খনন ও সংস্কার করে পুনরুদ্ধারসহ দুইপাড়ে সৌন্দর্যবর্ধন ও ফুটপাত নির্মাণসহ জনসাধারণের হাঁটার রাস্তা নির্মাণ করা। শহরের ঐতিহ্যবাহী দীঘি ও পুকুর সংস্কার করে পরিবেশবান্ধব করে গড়ে তোলা। আধুনিক ব্যবস্থাপনায় সূর্যোদয়ের আগে শহর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা। পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা আধুনিকীকরণ ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করা।

প্রত্যেক ওয়ার্ডে কম খরচে/ফ্রি চিকিৎসাসেবা কেন্দ্র স্থাপন করা। প্রতিটি মহল্লা ও সড়কে ডিজিটাল বাতি স্থাপন করা। শহরের প্রতিটি মহল্লায় রাতে পাহারার ব্যবস্থা ও নিরাপত্তা গেট নির্মাণ করা। সিটি কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনায় ইংরেজি মাধ্যম স্কুল প্রতিষ্ঠা এবং ছাত্র-ছাত্রীদের যাতায়াত ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। সিটি কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা। সিটি কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনায় মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা এবং মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আধুনিকায়ন করা। সিটি কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনায় আধুনিক কম্পিউটার কারিগরি প্রতিষ্ঠান তৈরি করে বেকার তরুণ-তরুণীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে আউট সোর্সিং কর্মসংস্থানের মাধ্যমে বেকারত্ব দূরীকরণ। সিটি কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনায় মা ও শিশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় আধুনিক হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা। নগরে অবস্থিত ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে আধুনিকরণ করা।

ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সহাবস্থান নিশ্চিত করা। ওয়ার্ডে কমিউনিটি সেন্টার প্রতিষ্ঠা ও সাংস্কৃতিক বিকাশকেন্দ্র গড়ে তোলা। প্রতিটি ওয়ার্ডে সাংস্কৃতিক ক্লাব ও খেলাধুলার মাঠ প্রতিষ্ঠা করা। নগরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোকে সংস্কার ও আধুনিকরণ করা ও স্কুলগুলোতে শিশুদের জন্য শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ তৈরি করা। নগরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা। কীর্তনখোলার তীর ঘিরে ভ্রমণ, আধুনিক ওয়াকওয়েসহ পার্ক গড়ে তোলা। বরিশালে পর্যটন হোটেল-মোটেল নির্মাণ ও পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলা। মাদক নির্মূল করা ও মাদকের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা গড়ে তোলা। ধর্মীয় স্থানগুলো সংরক্ষণ ও সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো।

বরিশাল সিটিকে সবুজায়ন করার প্রকল্প নেওয়া। শহরের বিভিন্ন পেশার ব্যক্তিদের সমন্বয়ে উন্নয়নের লক্ষ্যে কমিটি গঠন করা। বয়স্ক নাগরিকদের অগ্রাধিকারভিত্তিক সুযোগ-সুবিধা ও সেবা চালু করা। নগরের বর্ধিত এলাকায় পরিকল্পিত আধুনিক আবাসন ও রাস্তাঘাট নির্মাণ, সুপেয় পানি, বিদ্যুৎসহ সব ধরনের নাগরিক সুবিধা দিতে হবে। বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের অন্তর্গত অনুন্নত কলোনি বা বাস্তুহারাদের সব ধরনের নাগরিক সুবিধার আওতায় আনা হবে।

এ সময় তার সঙ্গে সহধর্মিণী ইসমত আরা ইকবাল, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মহসিন উল ইসলাম হাবুলসহ দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২০ ঘণ্টা, জুন ০৪, ২০২৩
এমএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।