ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

গণ অধিকারসহ ১০ দলকে নিবন্ধন না দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানাল ইসি

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৮ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০২৩
গণ অধিকারসহ ১০ দলকে নিবন্ধন না দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানাল ইসি

ঢাকা: আলোচিত গণ অধিকার পরিষদ, নাগরিক ঐক্যসহ ১০টি রাজনৈতিক দলকে চিঠি দিয়ে নিবন্ধন না দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানাল নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এক্ষেত্রে কেন তারা নিবন্ধন পাচ্ছে না, সেই কারণও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার যুগ্ম সচিব মো. আবদুল বাতেন এই তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আমরা প্রতিটি দলের প্রধান তথা সভাপতি বা আহ্বায়ককে চিঠি দিয়েছি যে, কেন নিবন্ধনের জন্য তাদের আবেদন নামঞ্জুর করা হয়েছে।

তিনি বলেন, নিবন্ধনের জন্য আবেদন করার সময় যে দল যেভাবে কমিটি জমা দিয়েছিল, আমরা সে অনুযায়ীই প্রতিটি দলের প্রধানকে চিঠি দিয়েছি। এক্ষেত্রে পরবর্তী সময়ে কোনো দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে কোনো পরিবর্তন আনা হলো কি না, সেটা আমরা আমলে নিচ্ছি না।

যে দশটি দলের আবেদন নামঞ্জুর করা হয়েছে, এদের মধ্যে কেবল গণ অধিকার পরিষদই দুই ভাগে ভাগ হয়েছে। এক্ষেত্রে নিবন্ধনের আবেদনকালীন সদস্য সচিব নুরুল হক নুরের পক্ষ কাউন্সিল করে তাকে সভাপতি করে নতুন কমিটি ঘোষণা করেছে। আর তদন্ত হওয়ার পর তারা সেই কমিটি ইসিতে জমাও দিয়েছে।

আবদুল বাতেন বলেন, নুরের কমিটিকে আমলে নেওয়ার কোনো প্রথা নেই। কেননা, আবেদনে যে কমিটি আছে, নিবন্ধন সনদ পাওয়ার আগ পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট দলের ওই কমিটিকেই আমাদের আমলে নিতে হবে। তবে তারা যদি নিবন্ধন পাওয়ার পর নতুন কমিটি দিতো এবং আমাদের কাছে জমা দিতো, তখন সেটি গ্রহণযোগ্য হতো।

নির্বাচন কমিশন নতুন দলের নিবন্ধন দেওয়ার লক্ষ্যে আবেদন আহ্বান করলে ৯৩টি দল আবেদন করে। এর মধ্যে ১২টি প্রাথমিক বাছাইয়ে টেকে। দলগুলো হলো- বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম), এবি পার্টি (আমার বাংলাদেশ পার্টি), বাংলাদেশ হিউম্যানিস্ট পার্টি (বিএইচপি), গণ অধিকার পরিষদ, নাগরিক ঐক্য, বাংলাদেশ সনাতন পার্টি (বিএসপি), বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি), বাংলাদেশ লেবার পার্টি, বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টি (বিএমজেপি), বাংলাদেশ পিপলস পার্টি (বিপিপি), ডেমোক্রেটিক পার্টি ও বাংলাদেশ লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (বিএলডিপি)।

এই ১২ দলের মধ্যে অধিকতর তদন্তে বাদ পড়ে আটটি দল। আর গণ অধিকার পরিষদ, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি), বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক আন্দোলন (বিএনএম) ও এবি পার্টিকে নিবন্ধন দেওয়ার লক্ষ্যে চারটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেয় ইসি। সেই কমিটি পুনরায় যাচাই-বাছাই করে প্রতিবেদন দিলে বিএনএম ও বিএসপি দল দুটিকে নিবন্ধন দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানায় সংস্থাটি। এক্ষেত্রে ২৬ জুলাইয়ের মধ্যে দুই দল নিয়ে আপত্তি আহ্বান করে গণবিজ্ঞপ্তিও দেয় ইসি।

ইসির যুগ্ম সচিব আবদুল বাতেন বলেন, প্রাথমিক বাছাইয়ে টিকে যাওয়া ১২ দলের মধ্যে ১০টিই বাদ পড়ে উপজেলা কমিটির সঠিকতা না পাওয়ায়। তবে তাদের কেন্দ্রীয় ও জেলা কমিটি সঠিক আছে। তালিকায় থাকা দুটি দলের বিরুদ্ধে কয়েকটি আপত্তি জমা পড়েছে। এখন শুনানি হবে। এক্ষেত্রে শুনানিতে অভিযোগ প্রমাণিত হলে নিবন্ধন পাবে না, আর প্রমাণিত না হলে নিবন্ধন পাবে।

এদিকে তীরে এসে তরি ডোবার পর গণ অধিকার পরিষদের (একাংশ) সভাপতি নুরুল হক নুর পুনর্বিবেচনার জন্য সাত দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছেন। এক্ষেত্রে ইসি সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না করলে ঘেরাও কর্মসূচি দেবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন নেতারা।

এদিকে ‍নুরের নেতৃত্বাধীন অংশকে গুনতির মধ্যে ধরছে না ইসি। সংস্থাটি চিঠি দিয়ে নিবন্ধন না দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে গণ অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়াকে। কেননা, নিবন্ধনের আবেদনের সময় তাকেই পার্টি প্রধান হিসেবে দেখানো হয়েছে।

ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, এ কারণে নুর ইসির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতেও মামলা করতে পারবেন না। কেননা, নুরের নেতৃত্বাধীন অংশ ইসিতে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেনি। তাই তাদের আবেদন নামঞ্জুর করারও কোনো বিষয় নেই।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৩ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০২৩
ইইউডি/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।