ঢাকা, শুক্রবার, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৩ মে ২০২৪, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫

নির্বাচন ও ইসি

সংসদ নির্বাচনে কাগজ লাগবে ৩২ লাখ ২০ হাজার দিস্তা

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৬, ২০২৩
সংসদ নির্বাচনে কাগজ লাগবে ৩২ লাখ ২০ হাজার দিস্তা

ঢাকা: আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সব প্রস্তুতি এগিয়ে নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে নির্বাচনী উপকরণও সংগ্রহ করছে সংস্থাটি।

এক্ষেত্রে এক লাখ ৬১ হাজার রিম অর্থাৎ ৩২ লাখ ২০ হাজার দিস্তা কাগজ কেনার প্রক্রিয়াও হাতে নেওয়া হয়েছে। এসব কাগজ দিয়ে তৈরি হবে ব্যালট পেপার, বিভিন্ন ধরনের খাম ও প্যাড।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল ইতোমধ্যে ঘোষণা দিয়েছে নভেম্বরের প্রথমার্ধের মধ্যে তফসিল হতে পারে। আর আগামী ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে করা হবে ভোটগ্রহণ।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগামী নভেম্বরের মধ্যেই নির্বাচনী সব উপকরণ কেনা সম্পন্ন করতে চায় ইসি। এজন্য ব্যালট বাক্স, ব্যালট বাক্সের ঢাকনা, বিভিন্ন ধরনের সিল, কালি, ব্যাগ প্রভৃতি কেনার জন্য দরপত্র হয়ে গেছে।

এবার ব্যালট বাক্স ও ঢাকনা দেশীয় প্রতিষ্ঠান থেকেই ক্রয় করছে ইসি, যা আগে বিদেশ থেকে আনা হতো। মোট ৮০ হাজার ব্যালট বাক্স কেনা হচ্ছে। এগুলোর মধ্যে সেপ্টেম্বরে ৪০ হাজার এবং অক্টোবরে ৪০ হাজার ইসির হাতে পৌঁছবে। তবে এগুলো মাঠপর্যায়ে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।

এছাড়া গানি ব্যাগ ৯০ হাজার, হেসিয়ান ব্যাগ ১ লাখ ৬৫ হাজার, মার্কিং সিল ১৪ লাখ ৩৫ হাজার, অফিসিয়াল সিল ৭ লাখ ১৫ হাজার, ব্রাশ সিল ১ লাখ, গালা ২০ হাজার কেজি, অমোচনীয় কালি ও কলম ৮ লাখ ১৫ হাজার, ব্যালট বাক্সের প্লাস্টিকের লক ৪০ লাখ, ব্যালট বাক্সের ঢাকনা ৫৫ হাজার কেনা হচ্ছে।

জানা গেছে, নির্বাচনী মালামাল ক্রয়ে ১৯ কোটি ৩৬ লাখ ৪৯ হাজার ৯১৫ টাকা লাগবে। আরো প্যাডের জন্য চার কোটির মতো লাগবে। সবমিলিয়ে ২২ কোটি টাকা মালামালের জন্য লাগবে। এসবের সঙ্গে যোগ হবে বিজি প্রেসে ব্যালট পেপার ছাপানোর খরচ, লেবাররা যদি এক্সট্রা সময় কাজ করে সেই পেমেন্ট এবং ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা ভাতা। বিজি প্রেস ইতোমধ্যে কাগজ কেনার জন্য ৩৩ কোটি টাকার একটি টেন্ডারও দিয়েছে। এতে ১ লাখ ৬১ হাজার রিম কাগজ কেনা হবে।

এসব বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, আমাদের প্রস্তুতি খুব ভালো আছে। অন ট্র্যাকে আছি। বিজি প্রেস ইতোমধ্যে কাগজ কেনার প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। তারাই সব ব্যালট পেপার ছাপাতে সক্ষম। কেননা, সংসদ নির্বাচনে তো একটা ব্যালট লাগে একজন ভোটারের জন্য। স্থানীয় সরকার নির্বাচন হলে অন্যদেরও দিতে হতো। ৩৩ কোটি টাকার একটা টেন্ডার তারা করেছেন বলে আমাদের জানিয়েছেন। তবে অন্য কোনো কস্ট যদি সামনে আসে তবে তা বাড়তে পারে।

তিনি বলেন, অলরেডি আমরা নির্বাচনি উপকরণ হাতে পাওয়া শুরু করেছি। আশা করছি, নভেম্বরের মধ্যে সব উপকরণ পৌঁছে যাবে।

সব ব্যালট পেপার আমরা বিজি প্রেস থেকে ছাপবো। তারা কাগজ কেনার জন্য টেন্ডারও করেছে। এক লাখ ৬১ হাজার রিম কাগজ তারা কিনবে। সব প্রস্তুতি তারা সম্পন্ন করেছে। ব্যালট পেপার আছে, বিভিন্ন ধরনের খাম আছে। পুরোটাই বিজি প্রেস ছাপাতে সক্ষম। সংসদে তো একটা করে ব্যালট লাগে, স্থানীয় সরকার হলে অন্যদেরও দিতে হতো। এজন্য তারা ৩৩ কোটি টাকার একটা টেন্ডার করেছে। এটা কালিসহ পুরোটা ব্যয়। তবে আরো যদি কোনো কস্ট আসে তবে তা বাড়তে পারে।

এবারের সংসদ নির্বাচনে প্রযুক্তিগত দিক থেকে  কিছু নতুনত্ব থাকবে উল্লেখ করে অশোক কুমার দেবনাথ আরও বলেন, অনলাইন নমিনেশনের পেপার জমা দেওয়ার ব্যবস্থার সঙ্গে আরো ছয়টা মডিউল আছে। এটা শিগগিরই জানতে পারবেন। সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ কমিশন এটা সংবাদ সম্মেলনে জানিয়ে দেবে। এতে স্মার্টফোনে অ্যাপ ডাউনলোড করে এনআইডি নম্বর দিলে ভোটার নম্বর, কেন্দ্রের নাম জানতে পারবে ভোটাররা।

সর্বশেষ হালনাগাদ অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে ভোটার সংখ্যা  দাঁড়িয়েছে ১১ কোটি ৯০ লাখ ৬১ হাজার ১৫৮ জন। আরো কিছু ভোটার যোগ হবে। এজন্য গতবারের চেয়ে এবার ভোটকেন্দ্রের সংখ্যাও বাড়বে। ইতোমধ্যে ভোটকেন্দ্রের খসড়াও প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। এবার ৪২ হাজার ৪শ’টির মতো ভোটকেন্দ্র হতে পারে। আর ভোটকক্ষ হতে পারে দুই লাখ ৬১ হাজার ৫শ’টি। ভোটকক্ষ বাড়লে বাড়বে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার সংখ্যাও।

ইসির নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক এসএম আসাদুজ্জামান জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার দেওয়ার জন্য তিন হাজারের বেশি প্রশিক্ষক তৈরি করা হচ্ছে। তারাই ভোটের আগে মাঠ পর্যায়ে প্রায় ১০ লাখের মতো ভোটগ্রহণদের কর্মকর্তার প্রশিক্ষণ দেবে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৬, ২০২৩
ইইউডি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।