ঢাকা, বুধবার, ১৩ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ জুন ২০২৪, ১৮ জিলহজ ১৪৪৫

নির্বাচন ও ইসি

‘আমার চেয়ে বড় মাস্তান বানারীপাড়ায় নাই’ বলা প্রার্থীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪১ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০২৪
‘আমার চেয়ে বড় মাস্তান বানারীপাড়ায় নাই’ বলা প্রার্থীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ মো. গোলাম ফারুক

বরিশাল: ‘আমার চেয়ে বড় মাস্তান কিন্তু বানারীপাড়ায় নাই, আমার চেয়ে বড় গুন্ডা কিন্তু বানারীপাড়ায় নাই’—সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের এক চেয়ারম্যান প্রার্থীর এমন বক্তব্য। এ নিয়ে জেলায় তোলপাড় চলছে।

 

এমন বক্তব্য দেওয়ায় নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. গোলাম ফারুকের বিরুদ্ধে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মো. মাওলাদ হোসেন সানা। বুধবার (১৫ মে) দুপুরে বানারীপাড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর এ লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়।

অভিযোগে মো. মাওলাদ হোসেন সানা বলেছেন, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করার লক্ষ্যে ভোটারদের মাঝে তিনি অবস্থান তৈরি করেছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো. গোলাম ফারুক।

মাওলাদ হোসেন সানার অভিযোগ, গত ৯ মে বানারীপাড়া উপজেলার সলিয়াবাকপুর ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের মহিষাপোতা এলাকার ফকির বাড়িতে এক কর্মী সভায় বক্তব্য দেওয়ার এক পর্যায়ে গোলাম ফারুক বলেন ‘আমার চেয়ে বড় মাস্তান কিন্তু বানারীপাড়ায় নাই, আমার চেয়ে বড় গুন্ডা কিন্তু বানারীপাড়ায় নাই’। মুহূর্তেই এই বক্তব্যের ভিডিও ছড়িয়ে যায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ফলে নষ্ট হচ্ছে নির্বাচনের পরিবেশ। পাশাপাশি ভোটাররা অনেকটা ভীত হয়ে পড়েছেন। অনেকেই আবার ভোট না দিতে যাওয়ার কথা বলছেন।

লিখিত অভিযোগে মাওলাদ হোসেন সানা বলেন, এমন অবস্থায় আমরা নিজেরাও এই নির্বাচন নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছি। এমন বক্তব্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারের প্রতিশ্রুত অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনকে প্রভাবিত করা হচ্ছে বলে মনে করি। পাশাপাশি নির্বাচনের আচরণবিধি লঙ্ঘন করা হচ্ছে। এ অবস্থায় মো. গোলাম ফারুক সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছেন ও আচরণ বিধি মানছেন না। ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করছেন। পাশাপাশি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও প্রতিদ্বন্দ্বীপূর্ণ নির্বাচন বাধাগ্রস্ত হবে বলে ধারণা করছি।

অভিযোগ দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. মাওলাদ হোসেন সানা বলেন, প্রার্থীর এমন বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় সাধারণ ভোটারদের মাঝে ভীতির সৃষ্টি হয়েছে। ফলে তাদের ভোট দিতে আসা নিয়েই শঙ্কা দেখা দিয়েছে। সেক্ষেত্রে প্রশাসন আইনানুগ ব্যবস্থা নিলে এবং তা সাধারণ মানুষ জানতে পারলেই তারা আশ্বস্ত হবেন। যার মধ্য দিয়ে সাধারণ মানুষ ভোট দিতে আসতে পারেন।  

এ বিষয়ে বানারীপাড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. গোলাম ফারুক দাবি করেছেন, তার গোটা বক্তব্য না দেখিয়ে বক্তব্যের খণ্ডচিত্র তুলে ধরা হয়েছে, সেইসঙ্গে অভিযোগটিও সেইভাবে দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন অফিসার এম এ জি মোস্তফা ফেরদৌস বলেন, চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. মাওলাদ হোসেন সানা প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মো. গোলাম ফারুকের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দাখিল করেছেন। বিষয়টি আমরা যাচাই-বাছাই ও তদন্ত করে দেখবো। তারপর যা সত্য হবে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

তিনি বলেন, গত ৮ মে বরিশালের দুটি উপজেলায় অত্যন্ত ভালো নির্বাচন হয়েছে। বানারীপাড়া, বাবুগঞ্জ ও উজিরপুরে চতুর্থ পর্যায়ে নির্বাচন হচ্ছে। সেখানে শতভাগ সুষ্ঠু ভোট হবে। ভোটাররা স্বতঃস্ফূর্তভাবে যাতে ভোটকেন্দ্রে আসে সেই ব্যবস্থাই নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৬ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০২৪
এমএস/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।