ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ আশ্বিন ১৪৩১, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০০ রবিউস সানি ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

বাংলাদেশ সবচেয়ে পচা নির্বাচনের দেশ: বিদায়ী সিইসি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৫, ২০২৪
বাংলাদেশ সবচেয়ে পচা নির্বাচনের দেশ: বিদায়ী সিইসি

ঢাকা: সদ্য বিদায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, বাংলাদেশ সবচেয়ে পচা নির্বাচনের দেশ। কোনো নির্বাচনই কেউ মেনে নেয় না।

বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) নির্বাচন ভবনের সভাকক্ষে কর্মকর্তাদের সঙ্গে আয়োজিত বিদায় সভায় তিনি এমন মন্তব্য করেন।

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, জন মানুষের আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলনে একটি ঐতিহাসিক বিপ্লব হয়েছে। সফল বিপ্লব হয়েছে। সেই কারণে অনেক কিছুই পরিবর্তন করতে হচ্ছে এবং আমাদেরও উচিত এ পরিবর্তনে সহযোগিতা করা সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য। আমরা এসেছিলাম আড়াই বছর আগে। আপনাদের সঙ্গে প্রায় আড়াই বছর কাজ করে এসেছি।

নির্বাচন একটি দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমরা একটি নির্বাচনের জন্যই জনগণের কাছে আলোচিত হই। সেটি হচ্ছে জাতীয় সংসদের সাধারণ নির্বাচন। কিন্তু এর বাইরেও আমরা অজস্র নির্বাচন করে থাকি, সেগুলো হলো স্থানীয় নির্বাচন, যা কোনোভাবেই অগুরুত্বপূর্ণ নয়। মৌলিক শাসনটা কিন্তু সেখানে।

তিনি কর্মকর্তাদের বলেন, আপনাদের সবার কঠোর পরিশ্রম ও আন্তরিক সহযোগিতা নিয়ে জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনগুলো করেছি। আমাদের জাতীয় নির্বাচনে সীমাবদ্ধ হলো বিএনপি অংশ না নেওয়ায় অন্তর্ভুক্তিমূলক হয়নি। আগেরও অনেক নির্বাচন পুরোপুরি অন্তর্ভুক্তিমূলক হয়নি। আমি যেটা বলে থাকি অনেক সময়, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন আমার দেখা মতে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ও শক্তিশালী। আরেকটি দিক, সবচেয়ে পচা নির্বাচনের দেশ। কোনো নির্বাচনই কেউ মেনে নেয় না। প্রতিটি নির্বাচনই হয় ত্রুটিপূর্ণ, বলা হয়। আমরা যেটা বলে থাকি আমাদের যে শক্তি-সামর্থ্য আছে, এর বাইরে নির্বাচন পদ্ধতিটা যদি ভালোভাবে সংস্কার করা না হয় তাহলে বারংবার এ নির্বাচন কমিশনের ওপরেই দোষ হবে। কিন্তু সেই দোষ আমি মানতে রাজি না। ফলাফল যেটা আসবে সেটার জন্য এককভাবে নির্বাচন কমিশন দায়ী বা তার কোনো অসৎ কর্ম এর পেছনে ছিল তা নয়। সার্বিকভাবে সবগুলো দল অংশগ্রহণ না করায় সার্বিকভাবে নির্বাচনটা ওঠে আসেনি।

সিইসি বলেন, আমরা চলে যাচ্ছি। বিদায় নিতে হচ্ছে। অনেক জায়গাতেই বিদায় নিতে হয়েছে। একটা সরকারকেই বিদায় নিতে হয়েছে। সেখানে আমরা খুবই অপাংক্তেয়। কিন্তু আমি যেটা মনে করি, আগামীতে যে সংস্কারগুলোর প্রতিশ্রুতি জনগণকে দেওয়া হয়েছে, সেগুলোর যদি বাস্তবায়ন হয়, তাহলে ভবিষ্যৎ সত্যিই অনেক সুন্দর হবে বলে আমি আশাবাদী। বিগত দিন ভুলে গিয়ে সেই প্রতিশ্রুতি পূরণে সবাইকে সহযোগিতা করা উচিত। আপনারা সহযোগিতা করবেন, আপনারা থাকছেন।

কর্মকর্তাদের তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন দিক থেকে আপনারা যে সহযোগিতা করেছেন এতে ধন্যবাদ। আমি মনে করি না যে গ্রামে যে নির্বাচন হয়েছে তা নিয়ে কেউ অসুখী। কিন্তু জাতীয় নির্বাচনে যে ব্যত্যয় হয়েছে এর দায় বিভাজন করতে হবে কার কতটুকু। যে সহযোগিতা করেছেন এজন্য তা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আপনাদের প্রতি দোয়া থাকবে আপনারা ভালো থাকবেন, সুখে থাকবেন।

এ সভার পরে দুপুর সোয়া ১২টার দিকে গণমাধ্যমের উপস্থিতিতে তিনি পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করে ইসি সচিব শফিউল আজিমের কাছে জমা দেন। এরপর অন্য কমিশনাররাও ইসি সচিবের কাছে পদত্যাগপত্র দিলে তিনি তা রাষ্ট্রপতির কাছে উত্থাপন করেন। দুপুর না গড়াতেই রাষ্ট্রপতি তা গ্রহণ করেন।

কর্মকর্তাদের সঙ্গে আয়োজিত সভায় সিইসির সঙ্গে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর, মো. আনিছুর রহমান, মো. আহসান হাবিব খান ও রাশেদা সুলতানা উপস্থিত ছিলেন। তবে সিইসির পদত্যাগ ঘোষণার সময় মো. আনিছুর রহমান ও রাশেদা সুলতানা তাদের দপ্তর থেকে বের হননি।

আউয়াল কমিশন ২০২২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি দায়িত্ব গ্রহণ করেছিল।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৫, ২০২৪
ইইউডি/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।