ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

সফলতা দিয়েই বছর পার নূরুল হুদা কমিশনের

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০১৭
সফলতা দিয়েই বছর পার নূরুল হুদা কমিশনের নির্বচন কমিশনের সারা বছরের কর্মকাণ্ডের কোলাজ। 

ঢাকা: ২০১৪ সালের পাঁচ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আগের সব আস্থা বিসর্জন দেয় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। মূলত, ওই নির্বাচন থেকেই দেশের একটি বিরাট রাজনৈতিক জোট অনাস্থা জানিয়ে আসছিল সংস্থাটির প্রতি। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি ও তার শরিকরা এর পর থেকে কোনো সংসদ নির্বাচনেই অংশ নেয়নি। স্থানীয় সরকারের নির্বাচনগুলোতে প্রার্থী দিলেও ভোটের কোনো না কোনো পর‌্যায়ে সরে এসেছে তারা।

কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন বিগত কমিশনের পুরোটা মেয়াদই মূলত এ অবস্থার মধ্যে কাটে। তবে কমিশনের ভাবমূর্তি কিছুটা উন্নতির দিকে যায় কেএম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব নেওয়া পর।

সার্চ কমিটির মাধ্যমে নিয়োগ
চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারিতে নিয়োগ পায় বর্তমান কমিশন। যাদের মধ্যে জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারের নিয়োগ হয় বিএনপির মনোনয়নের মধ্য দিয়ে। যদিও দলটি প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদার বিরুদ্ধে ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ আনে। কিন্তু সিইসি দায়িত্ব নিয়ে ১৫ ফেব্রুয়ারিই সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘শপথ নেওয়ার পর কোনো দলের সঙ্গে আমার সম্পৃক্ততা নেই’। এরপর সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ থেকে সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনের দৃঢ় অঙ্গিকার সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ করে পুরো কমিশন। এতে নির্বাচন কমিশনের ভাবমূর্তি কিছুটা উন্নতির দিকে যায়।

প্রথম নির্বাচনেই বাজিমাত
দায়িত্ব নেওয়ার পর গত ৩০ এপ্রিল কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) এবং সুনামগঞ্জ-২ আসনের উপ-নির্বাচন করে নূরুল হুদা কমিশন। এ দুই নির্বাচনে সহিংসতা ও কারচুপি ছাড়া ভোট সম্পন্ন হয়। বিশেষ করে কুসিক নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার জন্য নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদও জানায় বিএনপি। ওই নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু জয় লাভ করেন। এর মধ্য দিয়ে রকিব কমিশনের হারানো আস্থা ফিরে পেতে শুরু করে নূরুল হুদা কমিশন। এরপর স্থানীয় সরকারের কয়েকশ’ নির্বাচনও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করে সংস্থাটি।

আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংলাপে ওবায়দুল কাদের ও সিইসি নূরুল হুদা’র কুশল বিনিময়।  ছবি: ইকরাম-উদ দৌলাআন্তঃসমন্বয় সাধন
বিগত নির্বাচন কমিশনগুলো নিজেদের মধ্যে অন্ত:দ্বন্দ্বেই বেশি ভুগেছে। তার নানা চিত্র সংবাদমাধ্যমেও এসেছে। কিন্তু নূরুল হুদা কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই চার নির্বাচন কমিশনারের কার কি দায়িত্ব তা প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ করেছেন। ফলে নিজেদের মধ্যে সমন্বয়েও কোনো ঘাটতি নেই। এছাড়া কোনো নির্বাচন এলেই নির্বাচন কমিশনাররা বিভিন্ন দায়িত্ব ভাগ করে নেন। এরপর নির্বাচনী এলাকায় গিয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও প্রার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধানের উপায় নির্ধারণ করেন। এ বিষয়গুলোই নির্বাচন কমিশনের সুষ্ঠুভাবে দায়িত্ব পালনে খুব সহায়ক হয়েছে বলে ইসির জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ
২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারির মধ্যেই অনুষ্ঠিত হবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আর এ নির্বাচনের দেড় বছর আগেই গত জুনে নির্বাচনের রোড়ম্যাপ তৈরি করে নির্বাচন কমিশন। প্রথমবারের মতো যা বই আকারে প্রকাশ করে সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেয় সংস্থাটি। এছাড়া রোড়ম্যাপ অংশীজন, সংবাদমাধ্যমের কাছে বিতরণও করে নির্বাচন কমিশন। ফলে নিজেরাই নিজেদের ওপর ‘যথা সময়ে সকল কাজ সম্পন্ন করার একটি চাপ’ তৈরি করে রাখে। ইসি সচিব এ বিষয়ে বাংলানিউজকে বলেন, এটি প্রকাশ করার অন্যতম উদ্দেশ্য হল-দেশবাসীর কাছে একটি প্রতিশ্রুতি দেওয়া যে, কোন কাজ কখন করতে হবে। এতে যে চাপ আমরা নিয়েছি, তা আমাদের সঠিক পথে পরিচালিত করবে।

প্রশাসনিক উন্নয়ন
নির্বাচন কমিশনের জনবলের অভাব দীর্ঘদিনের। এরমধ্যে সবচেয়ে বড় সমস্যা ছিল যুগ্ম সচিব পদ মর‌্যাদার কর্মকর্তাদের নিয়ে। কেননা, প্রায় অর্ধযুগ ধরেও এই পদটিতে পদোন্নতি হচ্ছিল না। সম্প্রতি যুগ্মসচিবহীন হয়ে পড়েছিল সংস্থাটি। নূরুল হুদা কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর নির্বাচন কমিশনের গুরুত্বপূ্র্ণ এ পদটিতে পদায়ন হয়েছে। এছাড়া তৃতীয় শ্রেণী থেকে দ্বিতীয় শ্রেণী, দ্বিতীয় শ্রেণী থেকে প্রথম শ্রেণী পদেও পদোন্নতি হয়েছে কয়েকশ’ কর্মচারী-কর্মকর্তার। ফলে ইসির লোকবলের মাঝে দীর্ঘদিনের পুঞ্জিভূত ক্ষোভ অবসান হয়ে কাজে গতিশীলতা এসেছে।

ইসির সঙ্গে সংলাপ শেষে কথা বলছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।  ছবি: ইকরাম-উদ দৌলাসংলাপ ও অবস্থান
বর্তমান কমিশনের সবচেয়ে বড় সাফল্য হচ্ছে অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপ আয়োজন। গত আগস্ট থেকে অক্টোবর পর‌্যন্ত সময়ে সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, সংবাদমাধ্যম, নারী নেত্রী, পর‌্যবেক্ষক, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ এবং নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে একটি সফল সংলাপ করে নির্বাচন কমিশন। যেখানে বিএনপি আট বছর পর নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে নির্বাচনী সংলাপে অংশ নেয়।

সংলাপে আসা সুপারিশগুলো স্পষ্টভাবে দু’ভাগে ভাগ করেছে সংস্থাটি। এক্ষেত্রে নিজেদের এখতিয়ারভুক্ত বিষয় এবং সরকারের এখতিয়ারভুক্ত বিষয় আলাদা করে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। আর সিইসি এ নিয়ে সংবাদমাধ্যমে বলেছেন-সংলাপে আসা সুপারিশগুলোর মধ্যে ইসির এখতিয়ারভুক্তগুলো তারা পালন করবেন। আর সরকারের এখতিয়ারভুক্ত বিষয় প্রতিবেদন আকারে পাঠিয়ে বাস্তবায়নের জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ করবেন। এতে সরকারের ওপর একটা চাপ তৈরি হবে।

সিইসি’র বিচক্ষণতা
সংলাপে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা একেবারে নিজহাতে তৈরি করা প্রতিবেদন থেকে পাঠ করেন অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশ্যে। এতে সকলের অবদানকে স্বীকৃতি দেন তিনি। যা নির্বাচন কমিশনের ইতিহাস প্রথম ঘটনা। সিইসি বিভিন্ন মাধ্যম থেকে তথ্য সংগ্রহ করে নিজেদের ট্যাবেই তা সংরক্ষণ করেন। সংলাপের সময় সে ট্যাব ওপেন করেই পাঠ করেন।

ইসির সঙ্গে সংলাপের পর কথা বলছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।  ছবি: ইকরাম-উদ দৌলাসিইসি’র জিয়াউর রহমান বিষয়ক বক্তব্য 
গত ১৫ অক্টোবর সংলাপে অংশ নেওয়া বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্যে দলটির প্রতিষ্ঠাতা ও নেতৃবৃন্দের অবদানের কথা তুলে ধরেন কেএম নূরুল হুদা। তিনি সূচনা বক্তব্যে সেদিন বলেন-‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ৩৯ বছর পূর্বে অত্যন্ত দৃঢতার সাথে ৭৭ সালে বিএনপি গঠন করেন। সে দলে ডান, বাম, মধ্যপন্থি সব মতাদর্শের অনেক রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গকে একত্র করেন। তার মধ্য দিয়েই দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র পুন:প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ’ শুধু তাই নয়, সিইসি এরপর গণমাধ্যমকে বলেন-তিনি তার এই বক্তব্যকে ‘ওন’ করেন।

তার এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে দেশের নির্বাচনী রাজনীতিতে এক সুবাতাস বইতে শুরু করে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগও সিইসি’র এই বক্তব্যকে ইতিবাচক হিসেবেই আখ্যায়িত করে। ফলে দেশবাসীর মধ্যে নির্বাচন কমিশনের একটি ইতিবাচক ধারণা তৈরি হয় বলে নির্বাচন কমিশনের উপ-সচিব পর‌্যায়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

পাঁচ বছর পর নতুন ইভিএমে সফল
২০১০ সালে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় এবং বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির কাছ থেকে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) তৈরি করে বাংলাদেশে যন্ত্রে ভোট দেওয়ার রীতি চালু করেন ড. এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন তৎকালীন নির্বাচন কমিশন। ওই কমিশন সফলভাবে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনসহ স্থানীয় সরকারের নির্বাচনগুলোতে এই যন্ত্র ব্যবহার করে ব্যাপক সাড়া পায়। কিন্তু ২০১২ সালে রকিব কমিশন ক্ষমতা নেওয়ার পর ধীরে ধীরে এটি আস্তাকুড়েঁ পড়ে থাকার অবস্থায় পর‌্যবসিত হয়। রকিব কমিশন ২০১৩ সালের রাজশাহী সিটি নির্বাচনের একটি কেন্দ্রে এই ভোটযন্ত্র ব্যবহারের সময় একটি মেশিন বিকল হয়ে পড়ে। কিন্তু তারা তাদের মেয়াদের পুরোটা সময় ধরে সেই সমস্যা সৃষ্টির কারণ উদঘাটন এবং সমস্যা দূর করতে পারেনি। ফলে কোনো নির্বাচনেই আর মেশিনটি ব্যবহার হয়নি। কিন্তু নূরুল হুদা কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর নির্বাচন ব্যবস্থাকে ডিজিটালাইজড করার লক্ষ্যে আবারও যন্ত্রে ভোটের বিষয়টি সামনে আনেন। একইসঙ্গে আগের ইভিএমগুলো পরিত্যক্ত ঘোষণা করে নতুন করে বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির কাছ থেকে বানিয়ে নেন। যে মেশিন আরো উন্নত। বর্তমানের ইভিএমে আঙ্গুলের ছাপ দিয়ে ভোট দেওয়ার অপশন চালু করতে হয়। ফলে কারচুপি একেবারেই অসম্ভব।  

স্মার্টকার্ড বিতরণ কর্মসূচি নিয়ে বক্তব্য রাখছেন জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনা. সাইদুল ইসলাম।  ছবি: ইকরাম-উদ দৌলাসম্প্রতি অনুষ্ঠিত রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে একটি কেন্দ্রের ছয়টি বুথে ছয়টি নতুন ইভিএম ব্যবহারে ব্যাপক সাড়া পেয়েছে নির্বাচন কমিশন। ওই কেন্দ্রে ৬১ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে নির্বাচন কমিশনের নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখা জানিয়েছে।
 
স্মার্টকার্ডে ব্যর্থ ফরাসি কোম্পানির কাছে জরিমানা আদায়
দেশের নয় কোটি নাগরিককে ১৮ মাসের মধ্যে উন্নতমানের জাতীয় পরিচয়পত্র বা স্মার্টকার্ড পৌঁছে দেওয়া জন্য ওবার্থার টেকনোলজিস নামে এক ফরাসি কোম্পানির সঙ্গে ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে চুক্তি করে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু বারবার মেয়াদ বাড়ানোর পর ৩০ মাসেও কার্ড সরবরাহ করতে পারেনি কোম্পানিটি। ফলে বর্তমান কমিশনের অনড় অবস্থানের ফলে ওই কোম্পানি সাড়ে ৩শ’ কোটি টাকা জরিমানা পরিশোধ করতে বাধ্য হয়েছে। একই সঙ্গে নির্বাচন কমিশন এখন নিজেদের কর্মচারী দিয়েই স্মার্টকার্ড সরবরাহের জন্য প্রস্তুত করছে। ইসির জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, নিজেরা কার্ড উৎপাদনের যাওয়ার পর জেলা পর‌্যায়ে স্মার্টকার্ড বিতরণ সম্ভব হয়েছে। এটি এখন গ্রামের মানুষদের কাছেও পৌঁছে দেওয়া হবে।

ভোটার তালিকায় সফলতা
প্রায় পাঁচ বছর ধরে ভোটার তালিকা হালনাগাদে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারেনি নির্বাচন কমিশন। কিন্তু বর্তমানে কমিশনের তৎপরতায় এবারের লক্ষ্যমাত্রা ৩৫ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। এতে দেশের ভোটার সংখ্যা সাড়ে দশ কোটি ছাড়িয়ে গেছে। এছাড়া নারী ভোটারে হার এবং মৃত ভোটার কর্তনের হারও বেড়েছে।
 
স্মার্ট ভোট ব্যবস্থাপনায় পা
ভোট ব্যবস্থাপনায় আমূল পরিবর্তনে একটি ব্যাপক উদ্যোগ হাতে নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এতে ডিজিটাল সিল, মার্কিং সিল, বুথসহ ১০ ধরনের নির্বাচনী উপকরণে পরিবর্তন আনা হচ্ছে। বর্তমানে এ নিয়ে ইউএনডিপিসহ উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠকও করছে নির্বাচন কমিশন।  
 সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে সংলাপে বক্তব্য রাখছেন সিইসি নূরুল হুদাজাতীয় পরিচয়পত্র সেবায় গতিশীলতা
এবছরের শুরুতেও জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্ত সেবায় কোনো গতিশীলতা ছিল না। মাঠ পর‌্যায়ে কোনো সেবাগ্রহিতা আবেদন করলে তা বছরের পর বছর পড়ে থাকার নজিরও নূরুল হুদা কমিশনের দৃষ্টিগোচর হয়। ফলে পুরো প্রক্রিয়াকে ঢেলে সাজানো হয়েছে। এক্ষেত্রে উপজেলা কর্মকর্তার কাছে কোনো আবেদন জমা পড়লে তিনি এখন আর পাঁচদিনের বেশি নিজের কাছে রাখতে পারবেন না। একই সঙ্গে একটি সফটওয়্যার উন্নয়নের কাজ চলছে। যার মাধ্যমে কোনো সেবাগ্রহিতার আবেদনপত্রটি কোনো অবস্থায় রয়েছে তা মুহূর্তেই জানা যাবে। ফলে কর্মকর্তাদের টেবিলে টেবিলে ঘুরতে হবে না কাউকে।

অন্যদিকে ১০৫ নম্বরের কল সেন্টারটিও আগে চেয়ে অনেক বেশি তথ্য দিচ্ছে। এখানে ফোন করেও কোনো সেবাগ্রহিতা তার আবেদনের সর্বশেষ অবস্থান সম্পর্কে জানতে পারছেন।

সফলতা দিয়ে বছর পার
পুরো বছর নানা কর্মযজ্ঞের মধ্যে কাটালেও বছর শেষে সবচেয়ে বেশি আলোচিত হয়েছে রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন। কোনো প্রকার সহিংসতা, কারচুপি ছাড়া একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন পেয়েছে দেশবাসী। নির্বাচন পর‌্যবেক্ষকরাও বলছেন, নির্বাচন কমিশন এসিড টেস্টে পার হয়েছে। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে পেরে নির্বাচন কমিশনও বলছে, রসিকে মডেল নির্বাচন হয়েছে। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম বলেছেন, আমরা প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী রংপুরে মডেল নির্বাচন করেছি। সামনে আরো ভাল করবো।

বাংলাদেশ সময়: ০৭১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০১৭
ইইউডি/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।