ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

ভূমি নিবন্ধনে এনআইডি সার্ভার বিমুখতায় চলছে জালিয়াতি

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০১৯
ভূমি নিবন্ধনে এনআইডি সার্ভার বিমুখতায় চলছে জালিয়াতি

ঢাকা: নাগরিকের পরিচয় যাচাইকরণ ও অনিয়ম বন্ধে সরকারি-বেসরকারি শতাধিক প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করছে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) তথ্য ভাণ্ডার। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ দফতর হয়েও ভূমি মন্ত্রণালয় এর আওতায় আসেনি এখনও। আর এ সুযোগে সহজেই দুস্কৃতিকারীরা অন্যের সম্পত্তি হাতিয়ে নিচ্ছে।

ইসির ব্যক্তির পরিচয় যাচাই শাখা থেকে জানা যায়, ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র বানিয়ে একজনের সম্পত্তি অন্যজন লিখে নেওয়ার অনেক অভিযোগ আসছে। এমনকি অন্যের সম্পত্তি নিজের নামে নিবন্ধন করে নিয়ে বিক্রি করে দেশত্যাগও করছে অনেকে।

ভুক্তভোগীরা প্রায়ই ইসিতে আসছেন দুষ্কৃতিকারীদের পরিচয় শনাক্ত করতে। মূলত, ভুয়া তথ্য-উপাত্ত দিয়ে যে নিজের সম্পত্তি লিখে নেওয়া হয়েছে, তা প্রমাণ করার জন্যই তারা প্রত্যয়ন নিতে আসেন। এমনই একজন হলেন জিলহাস উদ্দীন নিপুন। চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের বাসিন্দা তিনি।

ইসিতে দাখিল করা নিপুনের আবেদন থেকে জানা যায়-মোহাম্মদ সেলিম, পিতা-নুরুল ইসলাম, এনআইডি নম্বর-১৯৫৮১৫১৫৩৭৭৪৬১৪৭০। এ তথ্য এবং এর ভিত্তিতে ভুয়া ওয়ারিশনামা তৈরি করে কামরুল আনোয়ার মিলন নামের একজনকে তাদের জমি লিখে দিয়েছেন।

তার অভিযোগ এ ব্যক্তি বর্তমানে ভারতে বসবাস করেন। বাংলাদেশর ভোটার নন তিনি। জমিও তার নয়। নিপুনদের কাছে জমি বিক্রি করার পর সে আবার কামরুল আনোয়ারের নামে লিখে দিয়েছেন। ক্রয় করা ভূমি উদ্ধারে নিজের পরিচয় যাচাইয়ের প্রত্যয়ন প্রয়োজন বলে আবেদন উল্লেখ করেন নিপুন।
 
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসির এনআইডি শাখার পরিচালক (অপারেশন্স) মো. আবদুল বাতেন বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের সঙ্গে শতাধিক সংস্থা, বিভাগ ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সমঝোতা চুক্তি করা আছে। তারা একটি নির্দিষ্ট অর্থ পরিশোধের মাধ্যমে যেকোনো প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকের তথ্য যাচাই করে নেয়। কিন্তু ভূমি অধিদফতর এ বিষয়ে কোনো যোগাযোগ করেনি। তাদের সঙ্গে আমাদের কোনো সমঝোতা চুক্তিও হয়নি।

তিনি বলেন, আমাদের তো কোনো আপত্তি নেই। তারা চাইলে খুব সহজেই এ সেবা নিতে পারে। এতে ভূমি নিবন্ধনে জালিয়াতি বা অনিয়মও কমে যাবে।

এ বিষয়ে কথা হলে এনআইডি অনুবিভাগের কমিনিউকেশন শাখার অফিসার ইনচার্জ কাজী আশিকুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, ভূমি অধিদফতর আমাদের সেবা নিলে ভালো হবে। তাদের সঙ্গে বৈঠক করার জন্য মহাপরিচালকের দফতরে প্রস্তাবনা দেবো।

কেন ইসির এনআইডি সার্ভার ব্যবহার করছে না, তা জানতে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মাকছুদুর রহমান পাটোয়ারীর সঙ্গে যোগাযোগের জন্য তার মোবাইলে কল দিয়ে পাওয়া যায়নি।

বর্তমানে ১১৮টি প্রতিষ্ঠান ইসির এনআইডি সার্ভার থেকে ব্যক্তির পরিচয় যাচাই করে নিচ্ছে। এরমধ্যে রয়েছে ৬টি মোবাইল কোম্পানি, ৫৭টি বাণিজ্যিক ব্যাংক, ২৫টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান, তিনটি বিমা কোম্পানি ও ২৩টি সরকারি প্রতিষ্ঠান। এগুলোর মধ্যে রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও।

বর্তমানে ইসির সার্ভারে ১০ কোটি ৪২ লাখ বাংলাদেশি নাগরিক এবং মিয়ানমার থেকে আসা ১১ লাখ রোহিঙ্গার তথ্য রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯২২ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০১৯
ইইউডি/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।