ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

২৪ পৌরসভায় নৌকা-ধানের শীষের লড়াই

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫২৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০২০
২৪ পৌরসভায় নৌকা-ধানের শীষের লড়াই

ঢাকা: বছরের শেষ সময়ে এসে স্থানীয় সরকারের পৌরসভা নির্বাচন শুরু হচ্ছে। এতে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীরা নৌকা প্রতীক এবং বিএনপির মেয়র প্রার্থীরা ধানের শীষ প্রতীকে ভোটের লড়াইয়ে নামছেন।

প্রথম ধাপে প্রায় সোয়া ৬ লাখ ভোটার ২৪টি পৌরসভায় সোমবার (২৮ ডিসেম্বর) ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে ভোট দেবেন। এদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোটগ্রহণ চলবে।

এ ভোট নিয়ে উৎসাহ-উদ্দীপনার পাশাপাশি কিছুটা শঙ্কাও রয়েছে প্রার্থী ও ভোটারদের মধ্যে। নির্বাচনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মাঠে রয়েছেন বিজিবি, র‌্যাব, পুলিশ ও আনসার সদস্যরা।

রোববার সব ভোটকেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জাম পাঠিয়েছে নির্বাচর কমিশন (ইসি)। করোনাকালে এ নির্বাচনে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশনাও দিয়েছে কমিশন। ভোট দেওয়ার আগে-পরে ভোট কেন্দ্রে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। প্রথম ধাপে ২৪ পৌরসভায় ভোটগ্রহণ হচ্ছে। চার ধাপে এ নির্বাচন শেষ করবে কমিশন।

এবার দ্বিতীয়বারের মতো পৌরসভায় দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হচ্ছে। এবারও তৃণমূলের এ নির্বাচনে মূল লড়াই হবে নৌকা ও ধানের শীষ প্রতীকের মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে। তবে ভোটের মাঠে ছয় রাজনৈতিক দলের মেয়র প্রার্থী থাকলেও বেশ কিছু পৌরসভায় শক্ত অবস্থানে রয়েছেন বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থীরা।

২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর দলীয় প্রতীকে একযোগে দেশব্যাপী ২৩৪ পৌরসভায় নির্বাচন হলেও এবার চার ধাপে এ নির্বাচন হবে। ওই নির্বাচনে ২০ দলের প্রার্থীরা অংশ নিয়েছিলেন। ভোট পড়েছিল ৭৩ দশমিক ৯২ শতাংশ।

এবারে প্রথম ধাপে ২৪ পৌরসভায় ৬ লাখ ২৪ হাজার ৮০৭ জন ভোটার জনপ্রতিনিধি নির্বাচনে ভোট দেবেন। তারা ২৪ জন মেয়র, ৭২ জন সংরক্ষিত কাউন্সিলর ও ২১৬ জন সাধারণ কাউন্সিলর নির্বাচিত করবেন। এ নির্বাচনে তিন পদে মোট ১১৬১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এরমধ্যে মেয়র পদে ৯৪ জন, সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ২৬৬ এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৮০১ জন প্রার্থী নির্বাচনী লড়াইয়ে রয়েছেন।

ইসি জানিয়েছে, প্রথম ধাপে নির্বাচনী লড়াইয়ে অংশ নিচ্ছেন— আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ ও জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টিসহ ছয় দলের মেয়র প্রার্থীরা। পাশাপাশি মেয়র পদে লড়ছেন বেশ কিছু স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও।

ভোটের প্রস্তুতির বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর বলেছেন, ভোট কেন্দ্রে নির্বাচনী মালামাল পৌঁছে গেছে। ইসির পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আমাদের দিক থেকে কোনো সমস্যা নেই।

ইসির জনসংযোগ পরিচালক এস এম আসাদুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, নির্বাচন উপলক্ষে ভোটের দিন যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও স্থাপনায় ভোটকেন্দ্র স্থাপন করা হবে, সেগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। গত শনিবার মধ্যরাত থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত সব নির্বাচনী এলাকায় মোটরসাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। রোববার মধ্যরাত থেকে সোমবার রাত পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকায় ট্রাক ও পিকআপ চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। জরুরি প্রয়োজনের গাড়ি এবং হাইওয়েগুলো নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবে।

নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ২৪ পৌরসভার ৩১৯টি কেন্দ্রে ভোট হবে। এ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করবেন পুলিশের ১২৭৬ জন, আনসার ২৮৭১ জন, র‌্যাবের ৭২ টিম ও ৫০ প্লাটুন বিজিবি সদস্য। এ ছাড়া ৭২টি মোবাইল ফোর্স ও ২৪টি স্ট্রাইকিং ফোর্স নির্বাচনী কাজে দায়িত্ব পালন করবে। নির্বাচনী পরিবেশ-পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিজিবি, র‌্যাব, পুলিশ ও আনসারসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা টহল শুরু করেছে গত শনিবার থেকেই। চার স্তরের নিরাপত্তা থাকবে ভোটের পরের দিন পর্যন্ত। সঙ্গে রয়েছেন নির্বাহী ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট। নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ করতে মাঠপর্যায়ে ২৮ দফা নির্দেশনা দিয়েছে কমিশন।

যে ২৪ পৌরসভায় ভোটগ্রহণ সোমবার
পঞ্চগড় জেলার পঞ্চগড় সদর, ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ, দিনাজপুরের ফুলবাড়ী, রংপুরের বদরগঞ্জ, কুড়িগ্রামের কুড়িগ্রাম সদর, রাজশাহীর পুঠিয়া ও কাটাখালী, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর, পাবনার চাটমোহর, কুষ্টিয়ার খোকসা, চুয়াডাঙ্গার চুয়াডাঙ্গা সদর, খুলনার চালনা, বরগুনার বেতাগী, পটুয়াখালীর কুয়াকাটা, বরিশালের উজিরপুর ও বাকেরগঞ্জ, ময়মনসিংহের গফরগাঁও, নেত্রকোনার মদন, মানিকগঞ্জের মানিকগঞ্জ সদর, ঢাকার ধামরাই, সুনামগঞ্জের দিরাই, মৌলভীবাজারের বড়লেখা, হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ এবং চট্টগ্রামের সীতাকু-। গত ২২ নভেম্বর প্রথম ধাপে ২৫টি পৌরসভার তফসিল ঘোষণা করেছিল ইসি। কিন্তু গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার একজন প্রার্থী মৃত্যুবরণ করায় নির্বাচন স্থগিত করা হয়। পরে ওই নির্বাচন দ্বিতীয় ধাপের সঙ্গে করার সিদ্ধান্ত দেয় ইসি।

দেশে পৌরসভা রয়েছে মোট ৩২৯টি। ইতোমধ্যে তিন ধাপের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে ইসি। দ্বিতীয় ধাপে আগামী ১৬ জানুয়ারি ৬১ পৌরসভায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে। তৃতীয় ধাপের ৬৪ পৌরসভায় ভোট হবে ৩০ জানুয়ারি। চতুর্থ ধাপের তফসিল ঘোষণার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসি।

বাংলাদেশ সময়: ০৫৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০২০
এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।